

হে বৈশাখ
শাহাব উদ্দিন ভূঁইয়া (জয়)
বৈশাখ মানে
ঝড়ো হাওয়া কলি-পুষ্পের মেলা,
বর্ষবরণ ফুলে-ফুলে কত-শত খেলা।
লাল-সাদা রঙ্গে-অঙ্গে বৈশাখীরও রং,
সেজে-বেজে কীর্তনখোলা বাজে ঢং-ঢং।
বৈশাখ মানে
শিশু-কিশোর দোলছে নাগর দোলা,
নীলাকাশে রঙিন ঘুড়ি ছুটাছুটির খেলা।
পান্তা-ভাতে নুনেরছিটে ইলিশ মাছে ভাজা,
স্বজন মিলে ভোজন করে ঐতিহ্যকে খোঁজা।
বৈশাখ মানে
ভেদাভেদ ভুলে উৎসবে মুসলিম-হিন্দু,
আনন্দ ভাগাভাগি নাও করে বিন্দু-বিন্দু।
নৌকা বাইচে লোকগান গাহে ডাক-হাঁক,
জাতি মোরা বাঙ্গালী এসো হে বৈশাখ।
এসো হে বৈশাখ
বিধান চন্দ্র দেবনাথ
সামনে আসছে বৈশাখ মাস
কয়েকটা দিন পর,
আম কাঁঠালের পাকা গন্ধে,
মুখরিত হবে ঘর।
কৃষক সবাই ব্যস্ত থাকবে
নিজ নিজ কাজে,
পাকা ধান তুলবে ঘরে
সেই অভিপ্রায় জাগে।
মহাজন ঘরের দেনা পাওনা
মিটিয়ে দেবে সব,
বৈশাখ এসেছে বৈশাখ এসেছে
সবার মুখেই রব।
পুরাতন যত দুঃখ গাঁথা
মুছে ফেলে দাও,
এসো হে বৈশাখ এসো হে বৈশাখ
সেই গান সবাই গাও।
নতুনকে করো বরণ
পুরাতন সব ভুলে,
সেই বাসনাই রেখে দাও
মনের মধ্যে তুলে।
নবাগতা বৈশাখ 
মোঃ শরীফ উদ্দিন
এলো রে ওই বাদলা বৈশাখ 
বাংলা বর্ষের বাঁয়,
নতুন রূপের রঙ ছড়াতে
সবুজ বীথির গাঁয়।
নব পল্লব নিয়ে বৈশাখ 
ধরায় এলো রে, 
পুরাতন কে ধুয়ে মুছে
রঙ লাগাবে সে।
বর্ষ সুখে যুবা বৃদ্ধার
লাল সাদা সাট গায়, 
নব দীপ্তির আগমনে
পান্তা-ইলিশ খায়।
বৈশাখের ওই পয়লা তারিখ 
বরণ্য উৎসব, 
নববর্ষে রাখে যেনো
সুখ শান্তি-তে রব।
গাঁও গ্রামে-তে বাজবে সুখে
ডুগডুগির ওই ঢুল,
নৌ জওয়ানীর নৌ আঙিনায়
উড়বে হাওয়ায় ধূল।
বৈশাখী ভালোবাসা
মিনা রবিউল
নির্মম বাতাসে ঝড়ের গান
বিকাল টা এলোমেলো
পূর্ব পশ্চিমে হাহাকার
উত্তর দক্ষিণে বিদ্রোহ।
বুকের ভেতর চৈত্রের পোড়া দাগ
বৈশাখ এসে ভিজিয়ে দিয়ে জাক
একটা সময় পার হয়ে যায়
এলোমেলো উদাসীন বিশাখা অন্তরে।
তান্ডব চলছে অলিন্দে অলিন্দে
কেউ তো অনূভব করে না
জ্বলে উঠলো করতলে বুনোঘাস
বৈশাখ এলো বন্দনায় ।
হাতে হাত গ্ৰীষম এলো
ঝড় যেন নূতন ধুমকেতু
জ্বলছে ঈশান কোণে
অন্তরে নদীতে দীর্ঘশ্বাস।
পালাবদলের দাঁড় বেয়ে চলে
চুপ করে আছে প্রিয় কথা 
কবি আমি দেখছি অশনি নামা
ঝড় উঠেছে উঠোনে নির্মম ।
হাসি খুশি ঝরুক নববর্ষে
হাতে হাত রেখে বললাম
এই বৃষ্টিতে ভিজে জ্বলে ওঠা
বৈশাখী ভালোবাসা হ্নদয়ে।
বৈশাখ 
সুজন ইসলাম
রাত পোহালে আসবে তুমি, 
কাঙ্ক্ষিত সেই নববর্ষ। 
তোমাকে জানাই আমর, 
হৃদয় ভরা স্বাগত। 
সব অতিত ভুলে গিয়ে 
হাসি মাখা থাক মুখে। 
নয়ন ভরা খোয়াব নিয়ে, 
এগিয়ে চলো সম্মুখে। 
সাদা কালো দিন ছেড়ে, 
এসেছে রঙ্গিন দিন। 
আগামীর দিন গুলি হোক,
নব বধুর ন্যায় মলিন। 
আকাশের নীল রঙ,
ধবল কালো মেঘ মিলে।
হয়ে গেছে একাকার,
সেজেছে আপন মনে।
ফুটেছে নতুন ফুল,
যৌবন ফিরে পেয়েছে নদী। 
কাল বৈশাখী ঝড়ে,
কাঁচা আমের ছড়াছড়ি। 
নদীতে ভাসছে হংসমিথুন, 
স্রোতে খেলছে হেলেদুলে। 
বৈশাখের দোল লাগিয়ে, 
পঙ্খিরা পাখা মেলে।
আসলো বৈশাখ মাস
মোঃ খুরশিদ আলম
আসলো বৈশাখ মোদের মাঝে 
একটি বছর ঘুরে 
বাংলার আকাশ বাতাস যে তাই 
গান গাইছে সুরে সুরে 
চৈত্রের খরা পেরিয়ে এবার 
আসলো বোশেখ মাস 
নতুন সাজে সাজলো যে তাই 
বাংলার মাঠ ঘাস 
নবান্নের উৎসবে মেতেছে কিষান 
সব যাতনা ভুলে 
গাছের ডালে পাখ পাখালিরাও 
দেখো নাচছে দুলে দুলে 
পুরান দিনের হিসাব চুকে আজ 
খুলেছে নতুন খাতা 
পেছনের সব গ্লানি মুছে দিতে 
দেখো চলছে হালখাতা।
বৈশাখের পদচারণা
শারমিন নাহার ঝর্ণা
বসন্তে প্রকৃতি নতুন রূপে নিজেকে মেলে ছিল সেজে ছিল নিরূপম, 
চারিদিকে নতুন পুষ্প নতুন পাপড়ি গাছে গাছে পাখির কূজন তারই সাথে বসন্তসখার গান ক্লান্ত কৃষকের জুড়িয়ে যায় প্রাণ সেই কুহুতানে।
মাঝে মাঝে শীতল পবন ঢেউ খেলে যায়__
এলো কেশে মেঘবালিকারা শূন্যলোকে ভেসে বেড়ায়
একরাজ্য ছেড়ে অন্য রাজ্যে।
প্রকৃতির এমন অপ্রতিম দৃশ্য সকলের মন হরন করে,ঠিক এমন সৌন্দর্যময় মুুহুর্তে সব কিছু এলোমেলো করে দিতে বৈশাখের পদচারণা।
প্রকৃতির নবীন সাজ বৈশাখের দমকা হাওয়ায় মিলিয়ে যায়,
ঝড়ের প্রবল গতিতে পশুপাখি গাছপালা ও মানব সকলে ভয়ে আতংকিত থাকে।
তবু সকল বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে যারা নতুন করে নিজেকে পরিস্ফুটিত করতে সক্ষম তারাই আবার নতুন রূপে সেজে উঠবে আগামী দিনের বসন্তসখা হয়ে।
ভাঙ্গা গড়া নিয়েই জীবন,জীবনে কখনো সুখ কখনো দুঃখ বিরাজমান তাই বলে কি কেউ কখনো জীবন থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখতে পারে?
শুধু সুখ থাকলে জীবনের প্রকৃত সুখ উপলব্ধি করা যায় না।প্রকৃত সুখের সন্ধান পেতে হলে দুঃখের পিছনে কিছু সময় ছুটতেই হবে।
প্রকৃতিকেও বিভিন্ন রূপে সাজতে হয় প্রকৃত সৌন্দর্যকে উপলব্ধি করার জন্য তাই বৈশাখকে স্বাগতম জানাই এসো হে বৈশাখ এসো এসো
এসো হে বৈশাখ
মোঃ শরীফ উদ্দিন
এসো হে বৈশাখ গোধূলির বাঁকে নিয়ে এসো বাসন্তী সাজ
নিস্তব্ধ ধরণী আজ খরার তাপে, 
জলশূন্য পুকুর নালা দাও হে বৈশাখ ঝড়বৃষ্টি উদ্যমি সুরে বৃষ্টি যেনো টিনের চালে টাপুরটুপুর ঝরে। 
অগ্নি তাপে ধরণী হাহাকারে 
পলপল ছলছল আসুক নেমে বৃষ্টি বাদল।
এসো হে বৈশাখ।
চৈতির তাপ করে দাও শীতল, ঝিম ধরা খরা বৃক্ষে দেখি পুরনো পাতা সব ঝরা 
এসো হে বৈশাখ সাজাতে নীলিমাকে অপলক সাজে 
পান্তা ইলিশের নিত্য বাহার নিয়ে। 
এসো হে দৃষ্টি ফেরা রঙে
বিরাজমান সুখ নিয়ে আকাঙ্খার বাঁকে।
এসো হে বৈশাখ।
গোধূলির বাঁকে কচিকাঁচা বুড়ো বুড়ী অপেক্ষার তাঁকে 
বটতলায় কবে হবে মেলা 
আসবে বৈশাখ, সাজবে বাউল,গাইবে গানা ঐ বটতলায় 
চুপচাপ লিখি খুব, গাছতলায় বসে চুপ।
চৈতালী তান খরার এই তপ্ত বান
যায় যেনো নিয়ে এই চৈতী 
দূর্গম প্রকৃতির আসক্ত হাওয়াকে নিয়ে।
এসো হে বৈশাখ।
ঔদ্ধত্য বরিষণ ঔদ্ধত্য বাঁকে নিয়ে এসো হে বৈশাখ 
খাল বিল নদী নালা জলশূন্য জলাভূমি 
ফাগুনের তাপে আজ সিদ্ধ অধরা অপলক সাজ।
খেত খামার জ্বলে পুড়ে হচ্ছে ছাই 
গাঁয়ের চাষা কে বাঁচাতে 
মাদুলি রাঙিয়ে এসো হে চৌচির তটে।
এসো হে বৈশাখ।
বৈশাখী বজ্রবানে বাংলার চাষা তুলিবে গোলায় ধান
কৃষাণ কৃষাণী হাসি খুশী ব্রতে 
বৈশাখী কীর্তন করিবে হলদে রঙের পাকা ধানে
বাজাবে সুখের ডামাডোল। 
হর্ষ মনে প্রণয় নিয়ে 
বজ্র বৃষ্টিতে খরা কেটে রসে ভরে যাক।
এসো হে বৈশাখ।
সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ নাহিদ হাসান প্রধান
Copyright © 2024 Chirkute Sahitto. Powered by Chirkute Team.