আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলি! বাংলা আমাদের মায়ের ভাষা। বাঙালি নামের সাথে বাংলা বা বাংলাদেশ যেন অনেক মিল। এই মিল একদিনে অর্জিত হয়নি। ভাষা দিবস নিয়ে কবিতা, আর্টিকেল আমরা ১৫ টি অধিক কবিতা প্রকাশ করেছি। এটি অর্জনের বিনিময়ে রক্ত দিতে হয়েছে, শুধু রক্ত নয় তাজা প্রাণ। পৃথিবীতে ভাষার জন্য এটাই প্রথম আন্দোলন ছিলো এবং ভাষার জন্য জীবন ও গেছে। জানা অজানা অনেক মায়ের কোল খালি হয়েছে।
আমরা ভাষা দিবস নিয়ে কবিতা আর্টিকেল থেকে যা যা শিক্ষা নিতে পারি, সবার প্রথমে আমরা নিজের ভাষার বিরুপ ব্যবহার থেকে বিরত থাকবো। মাতৃভাষা মানে মায়ের ভাষা বা মায়ের কাছে থেকে শেখা ভাষা। এই ভাষা কোন খারাপ কাজে ব্যবহার করা যাবে না। যথেষ্ট সম্মান করতে হবে। ভাষা দিবস নিয়ে কবিতা আর্টিকেল অনেক গুলো কবিতা আছে, যে পড়লে আপনার অনেক ভালো লাগবে। কবিতা গুলো অনেক গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে।
অমর বাংলা, মা ভাষা সমৃদ্ধ আলো,
বিশ্বের প্রবল অতীতে নিত্য প্রচণ্ড ঝলক।
সৃষ্টিকর্তার আজ্ঞাপ্রেরণায়,
প্রজন্মের বাংলা উত্তাল বেঁধে ধরে রাখ।
শব্দের মোহালোকে সৃষ্টি করে,
মানবতার হৃদয়ে মহাসাগর ভরে।
বাংলা মোদের মাতৃভাষা সমৃদ্ধির কাণ্ডে,
জাগরুক সমাজের পথে প্রচণ্ড আলোর বিপ্লবে।
উজ্জ্বল আশার দ্বার খুলে,
বাংলা মাতৃভাষা মানবতার আলোয় সৃজনশীল বাজে।
সমৃদ্ধ বাংলা মোদের প্রতি,
মুক্তির সূর্য উদয় করে স্বাধীনতার সাথে নতুন প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।
আরো পড়ুনঃ ৭টি স্তন ক্যান্সারের উপসর্গ ও চিকিৎসা |
ফেব্রুয়ারীর একুশ তারিখ
যাদের জীবন হারাই,
প্রভাতফেরি শহীদমিনার
আসুন শ্রদ্ধা জানাই।
বাংলা ভাষা কেড়ে নিতে
জিন্নাহ পাকের ভাষণ,
উর্দুই হবে রাষ্ট্রভাষা
করবে বাংলা শাসন।
তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে
ছাত্র মিছিল ধরে,
রুখ দমাতে মিছিল মাঝে
পুলিশ গুলি করে।
রফিক সালাম বরকত জব্বার
রক্ত দিলো ঢেলে,
তাঁদের রক্তের বিনিময়ে
স্বাধীনতা মেলে।
বসন্তের ঐ ফাগুন মাসে
ফেব্রুয়ারীর একুশ,
শহীদমিনার স্মৃতির ফলক
ফুলের তোড়ায় উরশ।
[caption id="attachment_10972" align="alignnone" width="1280"] - ভাষা দিবস নিয়ে কবিতা[/caption]
রক্তে কেনা এই বঙ্গ
মাতৃ শপথে,
অক্তে লেনা দু'চরণ
ভ্রাতৃত্ব অমরত্বে।
বঙ্গে যেথা এই কৃতি
ভূমিষ্ঠ রসে,
অঙ্গে সেথা সভ্য রীতি
কর্মিষ্ঠ ধাঁচে।
রঙ্গে রেখা এই কথ্য
জীবন্ত শহীদে,
কোলে ছেঁড়া স্বর্ণ ধন
অনন্ত গাথা হৃদে।
স্বপ্নে দেখা এই গীতি
বীরত্ব সমীপে,
স্বর্ণে লেখা বঙ্গ ভাষী
মহাবিজয় সর্ব দ্বীপে।
শীতের পরে বসন্ত আসে
রূপে লাগে আগুন,
ও মুখে তোর মুচকি হাসে
বুকে জাগে ফাগুন।
মন যে আমার আনচান করে
খায় যে প্রেমের দোলা,
ভালোবাসার ডালা ভরে
মনটা রাখি খোলা।
ফাগুনেরই পাগলা হাওয়া
উড়িয়ে কালো ঐ কেশ,
কাছে আসলে পরম পাওয়া
ভাবতেই লাগে বেশ।
আরো পড়ুনঃ কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা |
পলাশের ডালে যখন লাল ফুল ফুটেছিল
মনের বনে তখন বসন্ত দোলা দিয়ে গেল ।
মেহগনি গাছের সব পাতা ঝরে গিয়ে সবুজ কঁচি পাতা এল,
কি অপূর্ব শোভা তাতে _
প্রকৃতি নতুন রূপ পেল।
শিমুলের বনে লালের আগুন লেগেছিল,
আমার মনের কোকিল ডেকে ওঠেছিল,
বাসন্তী রং শাড়ী আর গাঁদা ফুলের রং মিলেমিশে একাকার।
মাতাল সমীরণে চলে আনন্দ নৃত্য।
আমের বনে মুকুলের সমারোহ
হলুদ শর্ষে ফুলের মাতাল করা ঘ্রাণ।
ভালোবাসা ভালোবাসায় মাখামাখি
এসে ধরা দিল একি প্রেমের বন্ধনে
এই নব ফালগুনে।
বসন্ত আসছে, পূর্ণিমা রাতে।
ফুলের রঙে রঙে, দিন হোক নীলাকাশে।
সুরমা প্রজাপতি, শোভা করে ভুবনে,
সবুজ প্রাণভূত হৃদয়ে, হাসে মনে।
আলোর সুগন্ধে মেঘ আসে মিশে,
বৃষ্টির গানে বুকে বাজে সুরে।
স্বপ্নের সব ইচ্ছা মিলে মনে,
হৃদয় ভরা সৌভাগ্য, পুনঃ বৃদ্ধি করে।
ফুলের মধুর চোখ বন্ধ করে,
মিষ্টি ভাষায় বলে, সে আসছে ফিরে।
বসন্তের মহোৎসবে রঙিন বাতাস,
সবুজ পৃথিবীতে বলছে, চিরকাল থাকবে এই সুখ।
শান্তি মুক্তির রাজা, মনে আনছে বসন্ত,
আলোর মাধুর্যে, সুখে থাকবে পূর্ব দিকে।
প্রেমে মুগ্ধ হৃদয় মেঘে ভরা,
বসন্তে মেলা হয়, সৃষ্টির সৌন্দর্যে।
[caption id="attachment_10971" align="alignnone" width="1280"] →ভাষা দিবস নিয়ে কবিতা পড়ুন[/caption]
মাঘের শেষে ফাগুন এসে
ধরালো মনে জ্বালা
প্রেমের স্নেহে বুলিয়ে দেহে
পরিয়ে গলায় মালা।
দখিনা সমীরণে জাগিয়ে মনে
অপূর্ব এক শিহরণ
কুহুর কূজনে মধুপের গুঞ্জনে
ভরিয়ে তুলে মন।
শীতের যত অলস ক্ষত
দিয়ে নিরাময় করে
এনে নবীন সরিয়ে প্রবীণ
নব সম্ভাবনায় ভরে।
পলাশ শিমুলে রাঙিয়ে লালে
দিগন্ত চরাচর
সেজেছে যেন প্রকৃতি সুন্দরী
অপরূপ মনোহর।
এসো হে বসন্ত এসো হে তুমি
জাগিয়ে প্রাণে সাড়া
উঠুক ভরে কিরণ করে
শহর গ্রাম পাড়া।
ফাগুনের হাওয়া এসে ভরে দিলো মন
লাল ফুল লাল রঙ আগুনে নেচে উঠে বন
কেঁপে কেঁপে পাতা দোলে সবুজের মাঠ
ডালে ডালে পাখি গায় মৌ,য়ের গুনগুন পাঠ।
কতো ছবি আঁকে কবি মেঘেদের ভীড়
দুলে দুলে কেঁপে উঠে পাখিদের নীড়
বিকালের আলো থামে হিজলের ডালে
আবিরের রঙ মাখে বনকপতের পালে।
ঘুম ঘুম ঘুম ভেঙে চোখ মেলে সন্ধ্যার তারা
জেগে জেগে আকাশে হয় দিশেহারা
চাঁদ উঠে গগনে চেয়ে চেয়ে হাসে
এই নদী নিরবধি কতো ভালোবাসে।
রক্ত সাগর দিয়ে পাড়ি
পেলাম মাতৃভাষা
এই ভাষাতে স্বপ্ন দেখা
ছিল শত আশা।
সকল আশা হলো বৃথা
পরের ভাষার তরে
অফিস আদালতে ভাষা
বিক্রি স্বল্প দরে!
আটই ফাল্গুন নাম হলোনা
একুশ ফেব্রুয়ারি!
বাংলা একাডেমি নামে
ভাষার আহাজারি!
বাংলা বলতে লজ্জা লাগে
ইংলিশ মিডিয়ামে!
মায়ের ভাষা কিনেছিলাম
রক্তে কেনা দামে।
মাতৃমঙ্গলের সবুজ ছাতার তলে
পরম যত্নে বাড়ে গর্ভের ভ্রূণ
গর্ভাশয়ের উর্বরতা ও পরিধি বাড়ে
সরকারি পরিষেবায় শিশু মৃত্যুহার কমে
মৃত্যু অপেক্ষা জন্মহার বাড়ে
শুধু মানুষ বাড়ে না।
সর্বভুক এই দোপেয়ে প্রাণীর
পাকস্থলীতে ক্ষুধা বাড়ে
লোলুপ নেশাতুর কামাতুর নয়নের
দৃষ্টিতে কামনার ঘোর বাড়ে
হারামের বেসাতিতে দিনে দিনে
শরীরের চিকনাই বাড়ে
শুধু মানুষ বাড়ে না।
হাটে মাঠে ঘাটে পাড়া তল্লাটে
পরিপাটি ভণ্ডের দল
রাজনীতি অর্থনীতি সমাজনীতি ঘেঁটে
পেতেছে স্বার্থের কল,
মাথাপিছু আয় বেড়েছে
জীবনযাপনের মান বেড়েছে
মানুষ বাড়েনি কেবল।
বাংলা ভাষা, আমার মাতৃভাষা,
তুমি আমার আবেগ, অনুভূতি,
তুমি আমার প্রেম, ভালোবাসা,
তুমি আমার স্বপ্ন, আশা।
তুমি আমার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি,
তুমি আমার ইতিহাস, ঐতিহাসিক,
তুমি আমার প্রাণ, মন,
তুমি আমার ভবিষ্যৎ, আলো।
তুমি আমাকে চিনতে শেখালি,
তুমি আমাকে বাঁচতে শেখালি,
তুমি আমাকে স্বপ্ন দেখতে শেখালি,
তুমি আমাকে বিশ্বাস করতে শেখালি।
বাংলা ভাষা, তুমি আমার গর্ব,
তুমি আমার আত্মবিশ্বাস,
তুমি আমার শক্তি, সাহস,
তুমি আমার ভবিষ্যৎ, সম্ভাবনা।
শুনছনা মা! আমার ভাষা
ফিরিয়ে তুমি দাও,
তাই না হলে মুখের কথা
কেড়ে তুমি নাও।
নয়টি মাসে যুদ্ধে শহীদ
শত লক্ষ প্রাণ,
মুখের ভাষা আনলো কেড়ে
ফিরিয়ে দিলো মান।
এই দেশের-ই কুলাঙ্গাররা
যখন কথা কয়,
শুনলে মনে জ্বালা ধরে
প্রাণে নাহি সয়।
কষ্টেতে অর্জিত ভাষা
ব্যঙ্গ কেন হয়?
প্রতিবাদী হলে সমাজ
ভাষার হবে জয়।
চোখের জলে বাংলা লেখা
জল ছাপাতে থাক,
আধুনিকতার ধূলি থেকে
ভাষা মুক্তি পাক।
সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ নাহিদ হাসান প্রধান
Copyright © 2024 Chirkute Sahitto. Powered by Chirkute Team.