পৃথিবীর প্রতি মায়ের জন্য মা দিবস, সেটা হোক সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ বা ক্ষুদ্রতম দিক থেকে অথবা নিকৃষ্টতার দিক থেকে। যাই হোক, মা দিবসের প্রতিটি মায়ের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। মাকে নিয়ে তো অনেক লেখাই আছে, তবে আমাদের সংকলনে মা দিবসে মাকে নিয়ে উক্তি ও কবিতা রয়েছে। যেগুলো অবশ্যই আপনাদের অনেক বেশি ভালো লাগবে।
মা হচ্ছে সন্তানের আদর্শ বিদ্যানিকেতন। মায়ের আদর অতুলনীয়। মা হতে গিয়ে যে মারা যায় ইসলামে তাকে শহীদের মর্যাদা দিয়েছে। ~ বুখারি শরিফ |
কোন ধর্ম মাকে অসম্মান করেনি, আর এমন কোন ধর্ম ও প্রতিষ্ঠা হবে না, যেটি মাকে অসম্মান করবে। ইতিমধ্যে আমরা অনেক বিখ্যাত ব্যক্তির জীবনী পড়েছি বই পড়েছি। অনেকেই মাকে নিয়ে লেখেছেন। বর্তমান সময়ের তরুণ কবি ও লেখক গণ ও লেখছেন। যা সত্য তা কখনো গোপন থাকে না। মা তো মায়েই, যারা সাথে পৃথিবীর কারো সাথে তুলনা হয়। আজকে আমরা মা দিবসে মাকে নিয়ে লেখা অনেক গুলো লেখা পড়বো, যেগুলো আমাদের অনেক অনুপেরণা জাগাবে ও বাস্তবতা চিনতে শেখাবে।
[caption id="attachment_11956" align="alignnone" width="1280"] মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত।
~ মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)[/caption]
মা কলমে মুহাম্মদ শফিক
আল্লাহ , রাসূলের পরে যিনি
এই ভূবনে মা জননী
মমতার খনি, নয়নের মণি
সে যে আমার , মা জননী
সারাজীবন হয়ে আছি তোমার কাছে ঋণী।
মা মমতা, মা ক্ষমতা
মা সকল আশা,
মা মানেই একবুক নিঃস্বার্থ ভালোবাসা।
মা সন্তানকে কত কি দিলে,
বিনিময়ে শুধু কষ্টকে আপন করে নিলে,
সন্তানের কাছে নেই তোমার কোন আশা,
আছে শুধু একবুক নিঃস্বার্থ ভালোবাসা।
দশ মাস দশ দিন গর্ভে ধরলে,
কত কষ্ট করে সন্তান জন্ম দিলে,
বুকের দুগ্ধ পান করালে ,
সন্তানের তৃষ্ণার্ত হৃদয় ভরালে,
কত-শত রাত জাগিলে ,
নিজে না খেয়ে সন্তানকে খাওয়ালে,
নিজের ইচ্ছাগুলো মাটি করে দিলে ,
শত কষ্ট স্বীকার করে নিলে ,
তিলে তিলে সন্তানকে বড় করে দিলে ।
সন্তানের যখন অসুখ হলো ,
মা প্রায় অর্ধ পাগল হয়ে গেলো ,
রাতের পর রাত জাগিলো ,
কত চোখের অশ্রু ঝরিলো,
খোদার দরবারে কত ফরিয়াদ করিলো,
কত দরবারে কত মানত ধরিলো,
দিন-রাত সেবা করিলো,
অবশেষে মা সন্তানকে সারিয়া তুলছিলো।
সন্তানের হাসিতে মা তুমি হাসিতে,
সন্তানের কষ্টে তুমি কান্না করে দিতে,
সন্তানকে তোমার বুকে টেনে নিতে ,
আদর সোহাগ দিয়ে ভরিয়ে দিতে।
কত আদর ,কত ভালোবাসা ,
কত স্নেহ মমতা ,
পৃথিবীতে আর কি কারো আছে এত কিছু দেওয়ার ক্ষমতা।
[caption id="attachment_11958" align="alignnone" width="1280"] যার মা আছে, সে কখনোই গরিব নয় ~আব্রাহাম লিংকন[/caption]
মা লেখিকা রহস্যময়ী নীল
অনেক ডেকেছি তোমায় মা মা বলে,
জবাব দাওনি তুমি একবারও তাকাও নাই আমার দিকে,
দাওনি সারা বকো নাই তুমি শুয়ে ছিলে চুপ করে,
মনে হলো যেনো শুনতে পাওনা কি বলছি তোমাকে,
কি থেকে কি হয়ে গেলো মাগো নিলে নিজেকে গুটিয়ে,
সব কিছু যেনো ঝাপসা লাগছিলো পারিনা সামলাতে নিজেকে,
জেনেও যেনো অবুঝ আজও মানতে পারি না কিছু,
সেই রাতের সব স্মৃতি গুলো কি ছাড়বে আমাদের পিছু,
পারবো না কভু দেখতে তোমায় শুনতে তোমার ডাক,
পুরোনো সেই স্মৃতি গুলো তাই বুকের মাঝেই থাক।
[caption id="attachment_11959" align="alignnone" width="1280"] মা দিবসে মাকে নিয়ে উক্তি - mother's day[/caption]
কলমে মহিউদ্দিন সানি
দশ মাস দশ দিন গর্ভে ধারণ করে
কতো কষ্টে জন্ম দিয়েছি তোদের,
আমি যে বড্ড মানসিক চাপে ভুগছি
তোরা আছিস দূরে বলবো আমি কাদের।
তোরা আছিস মহাসুখে স্ত্রী,পুত্র ও কন্যা নিয়ে
আর আমি আছি তোদের ছাড়া বহু দূরে,
ছোটবেলায় একটি পিপড়ে যাতে কামড়াতে না পারে
তাই তোদের আগলিয়ে রেখেছি আমার বুকে।
বড় বড় অট্টালিকায় তোরা সুখে থেকে
আর আমাকে রেখেছিস বৃদ্ধাশ্রমে,
আমার মনতো টিকে না এখানে-
যদি খাওয়া দাওয়া করি বিনাশ্রমে।
তোরা কেমন পুত্র
বাবা!তোদের মা কোমন আছে একটুও কি দেখতে মন চায় না?
তোদের কথা,বৌমা,নাতি ও নাতনির কথা মনে পড়ে
তাই এখানে একটু মন বসে না।
আমি তোদের জন্ম দিয়েছিলাম বলে
এটা কি ছিল আমার মহা অপরাধ,
আজ তোরা ভালোবাসা থেকে বন্ঞ্চিত করে-
আমার মনকে করেছিস ক্ষতবিক্ষত।
আজ তোদের বাবা বেঁচে থাকতো
তোরা কি পারতি আমায় বৃদ্ধাশ্রমে রাখতে,
আমারও তো সাধ জাগে যত দিন বেঁচে থাকি
ততদিন সুখে শান্তিতে থাকতে।
[caption id="attachment_11961" align="alignnone" width="1024"] মা হলো পৃথিবীর একমাত্র ব্যাংক, যেখানে আমরা আমাদের সব দুঃখ, কষ্ট জমা রাখি এবং বিনিময়ে নেই বিনা সুদে অকৃত্রিম ভালোবাসা। ~ হুমায়ূন আহমেদ[/caption]
কলমে সুমিত রায়।
মা তুমি কোথায় হারিয়ে গেলে আমাদের কে ফেলে,
তোমার অপেক্ষায় বসে থাকি ভাইকে নিয়ে কোলে।
কোথায় গেলে পাবো মা তোমার দেখা আমি,
সব কথা শুনবো তোমার, কখনো করবো না দুষ্টুমি।
ভাইয়ের খিদে পেলে তখন কাঁদতে থাকে ভাই,
মিষ্টির দোকানে কাকুর কাছে একটা রুটি চাই।
টাকা না দিলে দেবো না রুটি দোকানী কাকু বলে,
আমার দোকানের সামনে থেকে এখুনি যা চলে।
সারাদিনের শেষে কিছু মিষ্টি বিক্রি না হলে,
রাস্তার পাশে ডাস্টবিনে দেয় সেই গুলো ফেলে।
আমি গিয়ে সেখান থেকে নিয়ে আসি তুলে,
ভাই এখন অনেক ছোট খাওয়াই জলে গুলে।
কেউ থাকতে দেয় না তাই রাস্তায় শুয়ে থাকি,
ভীড়ের মাঝে গিয়ে দেখি তুমি রয়েছো নাকি।
কতো লোকজন বাজারে এসে কতকিছু কেনে,
আমাদের কে দেখে ওদের কেন কষ্ট হয়না মনে।
খাবার চাইলে তাড়িয়ে দেয় চুরি করলে মারে,
ভাইকে নিয়ে খিদের জালায় বাঁচবো কেমন করে।
আমাদের মতো অনাথ শিশুদের দেখার কেউ নাই,
ভগবানের পৃথিবীতে নিষ্পাপ শিশুরা কেন কষ্ট পাই।
পাপ পূণ্যের বিচার সে তো শেষ জীবনে হবে,
জন্মের পর নিষ্পাপ শিশু কষ্ট কেন পাবে?
[caption id="attachment_11964" align="alignnone" width="1024"] তুমি আমাকে শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাকে শিক্ষিত জাতি দেব। ~ নেপোলিয়ন বোনাপার্ট[/caption]
মায়ের পদতলে যদি
সবার জান্নাত হয়,
তবে কেন পৃথিবীতে
বৃদ্ধাশ্রম রয়?
মাকে ভালোবাসার যদি
থাকে কোনো অন্ত,
তবে কেন ইতিহাসে
বোস্তামি দৃষ্টান্ত?
মাকে ভালোবাসো যদি
করো মায়ের ভক্তি,
তবেই কেবল বৃদ্ধি পাবে
নিজের আত্মশক্তি।
মাতা কলমে শাহরিয়ার নাফি
মাগো, তুমি যে আমার আপনজন,
তোমায় ছাড়া স্থির থাকে না আমার মন।
অসম্ভব যে তোমার ঋণ পরিশোধ,
নষ্ট ছেলেদের হবে না তা বোধ।
তুমি যে সহ্য করেছ গর্ভধারণের কষ্ট,
আমরা তা হতে দেব না নষ্ট।
তুমি যে আমায় শাসন করলে আমারই ভালোর জন্য,
তোমার ভালোবাসা অগ্রগণ্য
নিঃস্বার্থভাবে তুমি যে আমায় দিয়েছ সুখ,
সমাজের কাছে তুলে ধরব তোমারই সম্মানিত মুখ।
আমায় ছায়ায় রাখতে যে তুমি যে সয়েছ ধূপ,
মনে মনে কেঁদেছ তুমি, আমার সামনে চুপ।
আমার চোখে জল এলে,
তুমি যে তার দ্বিগুণ কষ্ট পেলে।
বড় দোষ করে আমি চাই না যে তোমার কাছে ক্ষমা,
তুমি মনে মনে রেখে দাও না তা জমা।
কেনো যে তোমার ছেলে ছেড়ে দেয় তোমার সাথ,
কেনো যে তারা ভুলে যায়-
'তোমার পায়ের নিচে তাদের জান্নাত। '
আমার হাসিতে যে ফুটে উঠে তোমার হাসি,
মাগো, আমি তোমায় প্রচুর ভালোবাসি।
মা, আমি তোমার অভাগা সন্তান,
তোমার ওপর আমার বড্ড অভিমান, কেন জানো?
সব দিয়েছো, মন দাওনি কক্ষণো।
জন্ম দিয়েছো, শিখিয়েছো চলতে,
হোঁচট খেলেই হাত ধরেছো শক্ত ক'রে,
সব দিয়েছো, ভালোবাসা দাওনি কেন?
জ্ঞান হওয়ার পর দেখেছি সবই,
পুত্র স্নেহে অন্ধ ছিলে তুমি,
আমায় কখনো কোলে নাওনি, কেন?
ছোটবেলায় যখনই বলেছি, "মা, খিদে পেয়েছে"
আমাকে নয়, দাদাকেই আগে ভাত দিতে,
ছেলে-মেয়ের এই ভেদাভেদ ছিলো কেন?
মনে আছে মা? আমায় বলেছিলে তুমি,
"পরগাছার মতো"নাকি বেড়ে উঠেছি আমি,
কর্তব্য করেছো ঢের, বুকে তুলে নাওনি কোনোদিনো।
ভয় করেছি, মান্য করেছি,
চাহিদা, আব্দার লুকিয়ে রেখেছি,
অভিযোগ করিনি, আজ করছি শোনো।
জানি, আমার হৃদয়ের কথা কেউ শুনবেনা,
জানি, এ কবিতা কোনোদিন ছাপা হবেনা,
শুধু থাকবে অবচেতনে--একাকী, বিষণ্ণ!
অনেক কষ্টে বিয়ে দিয়েছিলে,
বেশিদিন ঠাঁই হলোনা সেখানে,
ফিরে এলাম, কর্তব্য করলে তখনো।
অত্যাচারিতা হয়ে ফিরলাম অসহায়,
অনিচ্ছাতেও দিলে ক্ষণিক আশ্রয়,
মা, তোমার ঋণ ভুলবোনা কোনোদিনও।
পারিনি সুখে সংসার করতে,
তবু সন্তান নিয়ে শান্তিতে আছি বেঁচে,
সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দাও এখনো।
আজও তুমি কতো কি করো!
কিন্তু ভালোবাসতে কি পারো?
আমাকে কি প্ৰিয় সন্তান বলে মানো?
যতোই অভিমান পুষে রাখি,
তবুও তোমায় ভালোবেসেছি,
তোমায় তা বলতে পারিনি কখনো।
ভালো থেকো তুমি, ভালো থেকো মা,
নাই বা হলাম স্নেহধন্যা,
আবার জন্মালে তোমাকেই মা ডাকি যেন!
কলমে– বিপ্লব দাস
বৃষ্টিতে তোমরা ভিজতে ভালোবাসো
বৃষ্টিকে কে না আলিঙ্গন করতে ভালোবাসে?
তবে আমার বৃষ্টি মোটেই ভাল লাগেনা।
বৃষ্টি আসার কথা শুনলেই বুক কেঁপে কেঁপে ওঠে অস্থিরতায়।
চিবুকে বোধদয় থেকে ঝুলে থাকে বিভীষিকা।
শরীরের সমস্ত যাত্রী স্তব্ধ হয়ে যায়, তমসার মেঘ রোগে।
টিনের ঝনঝনানি শব্দ, মৃত বারির করুণ আর্তনাদ।
রাত পাতার এক একটা শব্দ দেয়াল ফেটে চিৎকার করে বলে–
"বাবু একটু দরজা খোল,
কিরে শুনতে পেলি"।
এমন মায়াদ্রোহী শব্দ শুনে– নিদ্রা নিয়ে,
অকস্মাত্ ধড়াম করে দরজা খুলে উঠি,
দেখি আঁধার বৃষ্টির বিস্ময় ব্রত
আমার মনেও এ চিন্তিত ভ্রম......
মা আমায় ডাকছে না,
এই অন্ধকারে জল বৃষ্টিতে শুধু ঝিঁঝিঁ পোকা ডাকছে
মা ভগ্নস্তূপের মত শুয়ে ঘুমিয়ে আছে
ঝড়, বৃষ্টি ,বিদ্যুৎ, চমক ঝাপটায়।
এসুখের নিঃশ্বাস ব্যাখ্যাহীন।
তোমরা তোমাদের প্রেমিকাকে নিয়ে উৎকণ্ঠায় থাকো
বৃষ্টি কখন আসবে?
মনের শেকড়গুলো অসুখে, রুক্ষ, সূক্ষ্ম, ছায়াচ্ছন্ন–
সতেজ হবে পাখা মেলে বৃষ্টি অন্তরে।
সামান্যই মন নৌকা ভাসানো স্বস্তি।
বৃষ্টিকে নিয়ে কবি, লেখক, গীতিকার সবাই সুন্দর সুন্দর লেখা লিখেছেন,
এই মুখরো দিনে বাদলাচুম্বন উপভোগ করে সবাই পরম সুখে।
তবে আমি লিখতে চাই না কান্না পায়
জোছনার আলোর মত অশ্রু ছড়িয়ে পড়ে শেষ চূড়ায়।
কারণ, বৃষ্টিতে ভেজা প্রথম সঙ্গিনী আমার 'মা'
আর প্রসবকালে মায়ের গর্জে ওঠা রক্তে ভিজেছি,
মনে হয় অন্ধ হলে আজ নিহত গদ্য-পদ্যের রূপ দেখতে হতো না।
আজও মনে পড়ে আমাকে নিয়ে,
ডাক্তার-খানা থেকে ফেরার পথে
ঝমঝম করে বৃষ্টি , মা ক্যাঙ্গারুর মত তার কোলে কাপড় দিয়ে ঢেকে নেয় আমাকে ।
তবে মায়ের কাপড়ের রং জানি না– আলো ছায়া।
মায়ের হৃদয়ে যে অগ্নি ফুলকি, আমাদের বাঁচিয়ে রাখার
সেদিন দেখেছিলাম,
অনায়াসে সহস্র রাত জেগে থাকতে পারবে আমাদের অসুখে।
মায়ের অশ্রুআঁখি বোঝা যায়নি কোনোদিন বৃষ্টির জন্য,
তবে আমি অক্ষরে অক্ষরে টের পাই।
মায়ের শরীর জল কাদার সোঁদা গন্ধ নির্জনে আজও মনে করি।
সে গন্ধ স্বর্গতুল্য, তাজা ফুল।
মা আজও ভেজে....
রান্নাঘরের আধখানা ফাটা ত্রিপলে,
বাসন মাজার সময়,
উঠোন ঝাঁটা দেওয়ার সময়,
সব সময় মা ভিজে ভিজে থাকে।
মায়ের পা ঘা হয়ে যায়, আঙ্গুলের ফাঁকেও–
রাত্রিবেলা মা যন্ত্রণায় চিৎকার করে,
আমি মায়ের গর্ত গর্ত পায়ের তলায় ও হাতে
মলম লাগিয়ে দিই।
কবেই দুইশো ছয়টি হার পিষে গেছে, রক্তের সংকট
তবুও জীবনের জীবন্ত গল্পে সবুজের রসায়ন,
তুড়ি মেরে দাঁড়িয়ে আছে যুগে যুগে,
মায়ের একেকটা স্পর্শ আরোগ্য লাভ।
মা ভিজতে চায় না,
বলে– হে ঈশ্বর একটু রোদ দাও।
তবু মাকে ভিজতে হয় সর্বক্ষণ আমাদের জন্য,
লোকের দ্বারে দ্বারে গিয়েও।
আর আমি ভিজলে..............
রচনা–বিপ্লব দাস
৩০জুন২০২১
দুপুর২টা৩০
মায়ের ভালোবাসা এতটাই শক্তিশালী যে এটি সব সময় নিজের চিহ্ন রেখে যায়। এত বেশি গভীর আর শক্তিধর সেই ভালোবাসা, যা সারা জীবন সুরক্ষা কবজের মতো আমাদের ঘিরে থাকে। ~ জেকে রাউলিং (ব্রিটিশ লেখিকা) |
কলমে- মোহাম্মদ মিজান
মা- প্রিয় মা আামার,তুমি কেদোঁনা,
ঘায়েল করবে না করোনা।
মা- সাথে আছে তোমার দোয়া,
মমতা মিশানো ছোঁয়া।
মা- প্রবাস জীবন একাকী আপন,
আদরের স্বস্তিতে জ্ঞাপন।
মা- আমি তোমার মানিক রতন,
চাঁদ সোনা সেই স্বপ্নের ভুবন।
মা- কঠিন সময়ে তোমায় ভাবি,
হাসি কাননে কি আর দাবি।
মা- সময় অনেক নিয়মের বাইরে,
তাই তো এসেছি ঘর ছেড়ে।
মা- জীবনে টাকায় অমূল্য ধন,
তাই তো পর হয়ে যায় আপন।
মা- অর্থের টানে বুক চিরে প্রবাস,
সব কিছু আজ বড়োই বিশ্বাস।
মা- স্বপ্ন নিয়ে পথ চেয়ে থাকো,
সৃষ্টির বিধানে,স্রষ্টাকে ডাকো।
কবিঃ ডি এম ইব্রাহীম হোসেন
বিক্রমপুরের নৃত্য শালা
বড্ড চিত্তাকর্ষক,
নষ্ট লোকের বিশ্রী রঙ্গে
ধরা পড়ে ধর্ষক !!
বাদলপুরের বাদল মিয়া
চায় একটু বিনোদন,
আদর করে বাঁদর নিয়ে
ঘুরে বেড়ায় সর্বক্ষণ !!
রঙ্গ তামাশা প্রেম পিপাসা
পছন্দ তার ভীষণ,
সাঙ্গ-পাঙ্গ সঙ্গে নিয়ে
পাতে নিত্য আসন !!
পার্কের নামে তর্ক বাড়ে
সর্পে করে দংশন,
দর্প ভরে গর্ব করে
হয়না খর্ব আকর্ষণ !!
রঙের হাটে রঙিন মানুষ
রং বে-রঙের সাজ,
বাদল মিয়া নেচে ওঠে
নেই যে অন্য কাজ !!
সেদিন হঠাৎ চোট লেগেছে
বাঁদর দিয়েছে আঁচড়,
আজ ধরেছে মরণ ব্যাধি
ভাঙছে বুকের পাঁজর !!!
মানবতার কান্ডারী?
আসছে বুঝি কঠিন রাত
নরক-জ্বালা ভয়ঙ্করী।
ভোগের মাঝে সুখের বাস
ভোগবিলাসী কারবারি,
ভোগের মোহে দম্ভে মজি
সুখের তরে হক কাড়ি।
ঐ তিমির রাত কুপোকাত
মানবতার বিধান ছাড়ি,
সবে মহোৎসব ভোগমোহে
আত্মহারা ভোগ পূজারী।
আসছে ঘনঘটা ঐ ভয়ঙ্করী
বেহুঁশ কেনো কান্ডারী?
নরক-জ্বালা ভুখা অনাহারে
করে ধুঁকে ধুঁকে আহাজারি।
আজি পুলসিরাত পারাবার
কতোদূরে পাঞ্জেরী?
নেই মানবতার ঠাঁই ঠিকানা
বাড়ছে চিৎকার গগনবিদারী।
রবের আরশ কাঁপে থরথর
ঐ-যে শুনি কঠিন হুশিয়ারী,
কঠিন নরক কিন্তু দূরে নহে
ছাড় ভোগবিলাস বাহাদুরি।
চোখ খুলে মমতাময়ী মায়ের মুখটির প্রেমে পড়ার মধ্য দিয়েই শুরু হয় জীবন। ~ জর্জ এলিয়ট (ব্রিটিশ কবি) |
কলমে নীলা সরকার
মায়ের আদর সেতো
পারবনা কখনো ভুলতে,
মাগো তোমার আদর পেতে
পারব আমি মরতে।
সোহাগে আদরে তুমি আমাকে
করেছ কতইনা যত্ন,
তাইতো তোমায় ভালবাসি
তুমিই আমার রত্ন।
মা ডাকেতে কতই না শান্তি
আমি খুঁজে পাই,
তাইতো আমি বারবার
মা ডাকতে চাই।
একটু কষ্ট পেলে আমি
তুমি কোঁদে দিতে,
দৌঁড়ে এসে কেঁদে কেঁদে
আমায় কোলে নিতে।
মাগো তুমি উদার মনে
কেন ভালবাস!
সন্তানের ভাল ভেবে
বারবার ছুটে আস।
মাগো তোমায় ভালবাসি
প্রাণের চেয়েও বেশি,
তাইতো আমি বারবার
তোমার কাছে আসি।
প্রার্থনা করি মায়ের জন্য
সৃষ্টিকর্তার তরে,
সারাজীবন এমনি যেন
ভালবাসি প্রাণ ভরে।
আমার বসার ঘরের দেয়ালে আমার মায়ের ছবি টাঙানো আছে। কারণ তিনিই আমার কাছে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ। ~এলেন ডে জেনেরিস |
কলমে সাবিনা সিদ্দিকী শিবা
মাগো তুমি ও-ই আকাশের,
কোন তারাটি বলও?
শুকতারা জ্বলে আকাশে রোজ,
আমার চোখ ছলছল।
নীল আকাশে মেঘের উপর,
তোমার কি মা বাড়ি?
আসবে বলে চলে গেলে,
তাই নিলাম আড়ি।
তুমি কি মা চাঁদে বসে,
রোজ আমাকে দেখ?
অশ্রু দিয়ে বসে বসে,
স্নেহের কাব্য লেখ?
হাজার হাজার তারার মাঝে,
তোমায় আমি খুঁজি।
এতো বছর ফাঁকি দিয়েছো,
এখন আমি বুঝি।
অভিমানে খেয়ায় ভেসে,
অচিনপুরে গেলে।
আমায় ছেড়ে চলে গিয়ে,
কি সুখ তুমি পেলে?
তোমার আঁচল ছায়া আজও,
ঘ্রাণ শুনি মাগো।
দোহাই তোমার একটু তুমি,
আজকে কেবল জাগো।
২৪ বছর চলে গেলে,
ঘুম পাড়ানির দেশে।
কোন তারাটি জ্বলছো হয়ে,
আকাশে ছদ্ম বেসে?
কত তারা আকাশে করে,
খুশির কলতান।
আমার বুকেই বাজছে আজ,
করুণ সুখে গান
ও-ই আকাশে তারা বলতে পারিস,
কোথায় আছে,কেমন আছে
আমার মমতাময়ী মা,,,,,
[caption id="attachment_11963" align="alignnone" width="1024"] সন্তানরা ধারালো চাকুর মতো। তারা না চাইলেও মায়েদের কষ্ট দেয়। আর মায়েরা তাদের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত সন্তানদের সঙ্গে লেগে থাকে। ~ জোয়ান হেরিস[/caption]
~ জাকারিয়া আল হোসাইন
বাড়ির পাশে ছোট্টো ঘরে ঘুমিয়ে আছে মা
এত ডাকি তবু মায়ে সাড়া-তো দেয় না;
মা... একা একা চলে গেলে আমায় বললে না।
তোমার দেয়া আদরগুলো কেমনে ভুলে যাই
তোমার মত সোহাগ মাগো কোথাও তো না পাই;
তুমি মাগো হৃদয় আমার মানিক হিরা পান্না।
একটা সময় ছিলো মাগো খবর নিতে রোজ
এখন মাগো তোমার মত নেয় না কেহ খোঁজ;
বাড়ি থেকে কোথাও গেলে করতে অপেক্ষা
আসবে কখন খোকা আমার ভাবতে বসে মা;
সেই প্রিয় মা চলে গেছে আর তো আসে না।
সদর, নীলফামারী
[caption id="attachment_11960" align="alignnone" width="1280"] আমার মা মনে করেন আমিই সেরা আর মা মনে করেন বলেই আমি সেরা হয়ে গড়ে উঠেছি ~দিয়াগো ম্যারাডোনা[/caption]
কলমে অনিক ভট্টাচার্য্য
মা ভালো আছিস তো ?
এখনো আমাকে খুঁজিস তো ??
ঘুমো না মা , আর কতো জাগবি আমি আসবো বলে?
তুই ঘুমোলে ,আমি ঘুমবো তোর কোলে ।
সেদিন যখন আমার অচেতন দেহ সেজেছিলো,
চন্দনের ফোঁটা ,ফুলে সারা দেহ ভরে উঠেছিল।
সেদিন মা রদ্দুরে বাইরে খাটিয়াই শুয়ে খুব লাগছিলো,
জানিস মা তোকে কত্ত খুঁজেছি পাইনি সেদিন-
লোকে বলছিল তুই নাকি বেহুঁশ ছিলি সেদিন ??
এভাবে মা আমাকে পথে-পথে খুঁজে বেড়াস না ,
লোকে তোকে পাগলী বলে আমার ভালো লাগেনা ।
সেদিন পাড়ার ছেলেটাকে মারলি কেন গালে ??
খুব রাগ হলো?? আমি বেঁচে নেই বলল বলে ??
লোকে বলুক ,দিবিনা আর কান ওসবে,
আমি ছিলাম,আছি,থাকব তোর কোল জুড়ে ।
রাতে যখন সব নিঝুম হবে , সবাই ঘুমে কাৎ হবে ,
চারদিক শুনশান , চুপচাপ হয়ে যাবে ।
আসবো আমি তখন , কাউকে বলিস না তুই ,
মানবে না কেউ ,বলবে লোকে পাগলী তুই ।
আসবো আমি যখন ক্লান্তিতে তোর নয়ন জোড়া জুড়োবে ,
মাথার কাছে আসবো আমি ,রাত যতো গভীর হবে ,
এসে মা তোর মাথাই কাটবো বিলি , করবো ঢের গপ্প ,
তোর সব কথা শুনব ,আগে তুই ঘুমা অল্প ।
মা রে একা আঁধারে আমারও লাগে ডর ,
তাই তো আঁধার নামলে আসব,তুই করিস আদর ,
বৃষ্টিতে বাজ পরলে ডরাই আমি ,
তাই জানলা রাখবি খুলে ঠিক আসবো আমি ,
রাতের জোনাকিদের আলোই ভেসে আসবো আমি ,
আবার ভোরের প্রথম আলোই যাবো চলে আমি ।
মা রে তোর টানে মরেও ফিরে আসি বারবার ,
তুই সোনা মা আমার এখন একটু ঘুমো এবার।
সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ নাহিদ হাসান প্রধান
Copyright © 2024 Chirkute Sahitto. Powered by Chirkute Team.