মানুষ নামে নয় বাঁচে কর্মে। কর্মেই মানুষের প্রকৃত পরিচয়।যার কর্ম যতো ভালো হবে। তার ফলও তেমন ভালো হবে। এটাই স্বতঃসিদ্ধ বাস্তব কথা। ফলে—যারা কর্ম করে যায়, কষ্ট মোজাহাদা করে যায় এর পিছনে, পৃথিবী তাদের ভুলতে পারে না। ইতিহাসের সোলানী পাতায় লিখে রাখে তাদের মোবারক নাম। সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিত্বের ইতিবৃত্তের খাতায়।
কখনো হতাশারা আসে সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো।৷ তলিয়ে নিয়ে যেতে চায় কালের গর্ভে। এই পেরেশানি, ওই ব্যস্ততা ইত্যাদি দেখিয়ে মানুষকে বোকা বানায়। বুঝ দিয়ে ফেলে—অন্তত তোমার দ্বারা কাজ হবে না। তোমার কতো টাওয়ালারাও পারেনি, তুমি আবার পারবে কী করে। যাও! গিয়ে খেয়ে ধেয়ে জীবনটা কোন রকম করে কাঁটাও!! এসবই অযাচিত চিন্তা ভাবনা। না চাইতেই বৃষ্টির মতোন। শুধুই পেরেশানিতে ফেলে যাবে, জ্ঞানীরা ব্যতীত বোঝা মুশকিলই বটে।
কী কাজ করবে, খোঁজে পাও না। অথচ; কাজের অভাব নেই ধরার বুকে। “যারা কাজ করে তাদের জন্যই কাজ”বলে একটা কথা আছে। তোমাকেও কাজ করতে হবে। তালাশ করতে হবে প্রতিমুহূর্তে।কাজের সন্ধান আমাকে পেতেই হবে এই দৃঢ় ইচ্ছা নিয়েই সামনে এগুতে হবে। কারণ;তোমাকে বেঁচে থাকতে হলে কাজ করার বিকল্প নাই।
ধরো—সোস্যাল জগত নিয়েই বলি: এই ফেইসবুক, ইউটিউব ইত্যাদি আবিষ্কার কে করেছে। তোমার মতো আমার মতোই রক্তমাংসের মানুষ। ওরা ওদের প্রতিভাকে কাজে লাগিয়েছে। জাতিকে দেখিয়েছে কাজ ও কাজের ফলাফল। ফলে—জাতি প্রতিনিয়ত ওদেরকে স্মরণে রাখে। দুনিয়ার রীতি এটাই যে,মানুষ সফলতা দেখে। পিছনের কষ্টটা খুব কমই দেখতে পারে।
মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা এরশাদ করেছেন—ওয়াল আসর,ইন্নাল ইনসানা লাফি খুসর,ইল্লাল্লাযিনা আমানু ওয়া আমিলুস সালিহাতি……
দেখো,এখানে সফল ও ব্যর্থ মানুষের বিভক্তির কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে—সকল মানুষই রয়েছে ক্ষতিগ্রস্ততার মাঝে।তবে,যারা ইমান এনেছে,নেক আমল করেছে তারা ছাড়া।অর্থাৎ—এরা ক্ষতির মধ্যে নেয়।…..এখানে বর্ননাতেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে—নেক কাজের বিপরীতে আরেকটা কাজ রয়েছে। যা করলে ক্ষতি ও চরম ক্ষতির মধ্যেই থাকতে হবে।বাঁচতে হলে নেক কাজ করতে হবে।
আমল দুই প্রকার হলো—নেক ও বদ। যাকে সহজ ভাষায় বলতে—ভালো ও মন্দ।নেক করেও বেঁচে থাকা যায়। যেমন—নবী রাসূলগণ।তেমনই বদ করেও।
ফেরাউন, কারূন, হামান তার উদাহরণ।এখন নিজেকেই সিলেক্ট করতে হবে। আমি কীভাবে মানুষের কাছে বেঁচে থাকতে চায়। আমাকে বদকার বলে লানত করবে নাকি নেককার বলে রহমতের দোয়া করবে। সেটা নিজেরদের আকল-বুদ্ধির উপর ছেড়ে দিলাম।
আরবিতে একটা প্রবাদ আছে—কামা তাদিনু তুদানু।যার অর্থ হলো—যেমন কর্ম তেমন ফল।বলতে পারেন কাজ তো করি।বাট সফলতা আসে না কেনো।চেষ্টার তো কমতি করছি না।বলবো—সফল ব্যক্তিদের পড়ুন।রাসূল ও সাহাবাগণ কীভাবে কোন কাজ করেছেন।ফলো করুন তাদের। বাতলিয়ে দেওয়া রীতিনীতির অনুসরণ করুন।দেখবেন, আজ না হয় কাল সফলতা আসবেই।এতে হতাশা আর নিরাশার কোন কারণ নেই।সফলতার দেখা আপনি পাবেনই পাবেন।ইনশাআল্লাহ!
কিছু কাজের দৃষ্টান্ত:—
লেখালেখিকে বানিয়ে ফেলুন জীবনের লক্ষ্য। কত মানুষ চলে গিয়েছেন কতশত বছর আগে।তাদের লেখা, তাদের কর্ম। আজো তাঁদের পূর্ণ স্মরণে রাখছে।
প্রতিনিয়ত, প্রতিক্ষণেই। কিছু জাগরণী ও গবেষণাধর্মী বই লিখে ফেলুন। যাতে মানুষের উপকার হয়। তখন দেখতে পারবেন—মৌমাছির মতো ওরাও আপনার লেখার কাছে আসবে।মধু নিতে।উপকৃত হতে। এতেই মানুষ হৃদয়ের গহিনে আপনার নাম লিখে রাখবে। স্মরণে রাখবে প্রতিটি সময়ে।
মানুষ প্রযুক্তির উন্নতির দিকে ধাবমান। সহজ থেকে সহজেই কাজ আনজাম দিতে চায়। দেখতে চায় জীবনের সুখ ও সুখের জীবন।এমন কিছু আবিষ্কার করেন—যা মানুষের প্রতিনিয়তই প্রয়োজন। যা অনুসরণ করে চলতে পারলেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। ফলে—যতোদিন মানুষ তা ব্যবহার করবে,উপকৃত হতে থাকবে,ততোই তারা আপনাকে স্মরণ করতে থাকবে।হাত তুলে আপনার মাগফিরাত কামনা করবে।
কারণ কী জানেন? মানুষ কাজে বিশ্বাসী। নামে নয়।
ফলে—বেঁচে থাকতে হলে আপনাকে বেছে নিতে হবে উত্তম কাজ।যা করতে মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বলেছেন। বিরত থাকুন এমন কাজ থেকে যা করতে তিনি বারণ করেছেন। সফলতার মালিক হলেন মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা। কাজ তো উসিলামাত্র। তাই;তার হুকুম মেনেই জীবনকে যাপন করতে শিখুন।জানতে থাকুন তার নির্দেশনাবলি।
দেখবেন আপনিও চমকিয়ে যাবেন তাদের মতো, যাদের নাম বলতে গিয়ে মানুষ দোয়ার বাক্য উচ্চারণ করে। শ্রদ্ধার সাথে মনে করে প্রতিনিয়ত!
মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার নিকট ফরিয়াদ:—তিনি যেন আমাদেরকে উত্তম করে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করেন। মরেও শ্রদ্ধা ও দোয়ার পাত্র হিসেবে কবুল করেন। এটাই সফল জীবন ও জীবনের সফলতা। উলাইকা আলা হুদাম মির রাব্বিহিম ও উলাইকা হুমুল মুফলিহুন!!
────যেমন কর্ম তেমন ফল
────আহমাদুল্লাহ আশরাফ
────ত্রিশাল,মোমেনশাহী।
সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ নাহিদ হাসান প্রধান
Copyright © 2024 Chirkute Sahitto. Powered by Chirkute Team.