ফিরতে হবে বাংলা সাহিত্যিকের পাতায়

ফিরতে হবে বাংলা সাহিত্যিকের পাতায়

ফিরতে হবে বাংলা সাহিত্যিকের পাতায়
উমায়ের আল আমান

বর্তমান সময়ে লেখালিখি যেন আর আগের মতো চলছে না। একসময় বাংলা সাহিত্য ছিলো আবেগ, প্রেরণা আর আন্দোলনের মশাল। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ কিংবা সেলিম আল দীনদের মতো সাহিত্যিকরা তাঁদের কলম দিয়ে যুগকে বদলে দিয়েছেন। তাঁদের সাহিত্য শুধু বিনোদন ছিলো না, ছিলো জাতির চিন্তার আলো।

কিন্তু আজকের দিনে সেই ধারার সাহিত্য যেন ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। এখন বই পড়ার অভ্যাস কমে গেছে, মোবাইল আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দখল করে নিয়েছে তরুণদের মন। যারা লেখেন, তাঁদের অনেকেই তাড়াহুড়া করে লেখা শেষ করেন, গভীরতা থাকে না, সমাজ-মানুষ নিয়ে দায়বদ্ধতাও অনুপস্থিত। ফলে নতুন প্রজন্মের কাছে সাহিত্য হয়ে পড়ছে দূরের বিষয়।

তবুও আশা ফুরায় না। এখনো কিছু সাহিত্যিক আছেন, যারা নিরলসভাবে লিখছেন বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করার জন্য। তাঁদের প্রচেষ্টা আমাদের মনে করিয়ে দেয়—সাহিত্য শুধু অতীতের গৌরব নয়, ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনাও হতে পারে। প্রয়োজন শুধু পাঠকের ভালোবাসা আর লেখকের দায়িত্বশীলতা।

কিন্তু প্রশ্ন হলো—কীভাবে সবাইকে আবার সাহিত্যের কাছে ফিরিয়ে আনা যায়?

এর জন্য কিছু করণীয় হতে পারে

পাঠাভ্যাস গড়ে তোলা – ছোটদের হাতে গল্প-উপন্যাস তুলে দেওয়া, স্কুল-কলেজে পাঠচক্র চালু করা।

সাহিত্যকে আধুনিক মাধ্যমে আনা – অডিওবুক, ভিডিও, নাটক কিংবা ইলাস্ট্রেশনের মাধ্যমে তরুণদের কাছে পৌঁছানো

লেখকদের উৎসাহ দেওয়া – স্থানীয় পর্যায়ে রচনা প্রতিযোগিতা, সাহিত্য আসর আয়োজন এবং লেখককে প্রকাশের সুযোগ দেওয়া।

সাহিত্যকে জীবনঘনিষ্ঠ করা – আজকের সমাজ, মানুষের অনুভূতি আর সংগ্রামের গল্পকে সহজ ভাষায় উপস্থাপন করা।

সাহিত্যিক অনুষ্ঠান বাড়ানো – শুধু ঢাকায় নয়, সর্বত্র বইমেলা ও সাহিত্য উৎসব আয়োজন করা।

সংক্ষেপে বললে, মানুষকে সাহিত্যের কাছে ফেরাতে হলে বইকে সহজলভ্য করা, লেখালিখিকে আকর্ষণীয় করা এবং পাঠকদের কাছে নিয়ে আসা—এই তিন দিকেই আমাদের কাজ করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ  বাবা দিবসে কিছু কথা ২০২৪

বাংলা সাহিত্য আবার জেগে উঠুক নতুন প্রজন্মের হাতে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *