প্রবাস জীবনের কবিতায় রয়েছে নানান রকমের অনুভূতি। যেগুলো কবিতা পড়লে মন জুড়িয়ে যাবে। একটি মানুষের না কষ্টের কথা গুলো হয়তো সামান্যতম প্রকাশ পায় এই কবিতা গুলোর মাধ্যমে। আমরা চেষ্টা করেছি প্রবাস জীবনের কবিতার মধ্যে সকল প্রকার অনূভুতি ও প্রবাস জীবন নিয়ে কবিতা গুলোর মধ্যে লুকিয়ে থাকা কিছু আত্মকথার প্রকাশ। একটি মানুষ টাকা জন্য পরিবার থেকে বিচ্ছিলো, বর্তমান সময়ে হয়তো প্রযুক্তি আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়ে দেখা সম্ভব, কিছু ছোয়া প্রায় অসম্ভব। একবার গেলে যেন ৫/১০ বছরে জন্য আর কোন হুদিস নেই, এটাই প্রবাস জীবন আর প্রবাস জীবনের কবিতা। প্রবাসীরা যেমন নিজের পরিবারের জন্য কাজ করে তেমনি, আমাদের দেশ ও জাতীয় জীবনে অনেক উপকার করে থাকে যেটা বোঝার জন্য রেমিট্যান্স নামক শব্দের সাথে পরিচিত হওয়া লাগে। নিচ্ছে সেরা ১০ টি প্রবাস জীবনের কবিতা দেওয়া হলো, পড়ুন৷ পড়লে অবশ্যই ভালো লাগবে।…
ঘরের টান
কলমে হাসানুজ্জামান হাসান
মায়ের আঁচল ছেড়ে দিয়ে
কাটায় বিদেশ ভূমে
যেথায় থাকুক স্বপ্ন নিয়ে
মাকে ডাকে ঘুমে।
নিজের দেশে হয়না যে ঠাঁই
সংসার জ্বালায় ধোঁকে
কাজের খোঁজে ছোটে সে তাই
টাকা আয়ের ঝোঁকে।
সম্পদ অর্থে বিলাসবহুল
জীবন কাটায় ছেলে
মাতৃক্রোড়ে ফিরতে আকুল
সুযোগ সময় পেলে।
টাকার মোহে বাধ্য হয়ে
টানতে সংসার ঘানি
বিদেশ ভূমে যায় সে রয়ে
কামায় অর্থ জানি।
ভুলতে চাইলে দিলের মাঝে
মাতৃ সোহাগ জাগে
মায়ের টানে সকাল সাজে
ফিরতে ছুটি মাগে।
রবি ঠাকুর
বনমালী নন্দী
আমাদের বাঁচা মরা নেই
এটি যেন লাশ
পথ নিরাশ্রয় পথের ডাকঘর নেই
পথের থাকে জ্যামিতিবক্স
আলোর দিকে নির্ণয় করে
পথের আকাশের পারে নিরন্তর খেলা
সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের উপন্যাস
তবু বাঁচতে
নিঃশ্বাসের গোড়ায় জল মাটি দেওয়া
মুষ্ঠির হাঁড়ি থেকে দুঃখগুলো বের করে রোদ খাওয়ানো
হাওয়ায় হাওয়ায় ভেসে আসে রোগ অসুস্থতা
মরা অনেক কঠিন
আত্মাহত্যা করার জন্য বুকের পাটা দরকার
আমার নেই সবার থাকে না
সময়ের মুখে মাক্স
গৃধিনী ও ঘেন্না করে
মনকে কুচি কুচি করে কেটে স্যালাড বানানো
যন্ত্রনা এখন ননভেজ খেতে ভালবাসে না
আমি ফিরে ফিরে আসি
গানের ঈশ্বরের কাছে
গানের শিকড়ে জড়িয়েছি মনপ্রাণ
প্রবাসী জীবন
মোঃ তানজীব
শুনবা কি ভাই বিদেশ যাত্রী
প্রবাস জীবনের গল্প
আমার কাছে তাদের নিয়ে
জানা আছে অল্প।
বলব কি আর এদের কথা
অশ্রু আসে চোখে
বেশিরভাগই প্রবাস জীবন
ধুধু মরুর বুকে।
সকাল-সন্ধ্যায় কাজে থাকে
কষ্টের নাইরে সীমা
দেশের কথা মনে পরলেও
বুকে রাখে জমা।
বাড়ি হইতে বিদায় নিয়ে
প্রবাস জীবনে যায়
দেশ সমৃদ্ধির অন্যতম
হাতিয়ার তারা প্রায়।
পরিবারের সুখের জন্য
তারা কত করে
ঋণ করে দেয় বিদেশ পাড়ি
জীবনের সাথে লড়ে।
দেশে ফিরে আসে যখন
পাই যে কত আপ্যায়ন
শেষ জীবনে পাইনা তেমন
সেবা যত্ন মূল্যায়ন।
সরকারের কাছে রাখছি দাবি
ভাবতে তাদের কথা
যারা কিনা আমার দেশের
রেমিট্যান্সের দাতা।
প্রবাস জীবন
এ.বি.আরিফ বিল্লাহ আহসানী
সুখ-দুঃখ কষ্ট-ক্লেশ সব
কিছুর সমষ্টিই হল প্রবাস জীবন,
জীবিকার তাগিদে,স্বার্থের সুবাধে
প্রবাসে যায় ছেড়ে সব আপনজন।
সেথায় গিয়ে জীবনবাজি রেখে
কেউ গড়ে তুলে সুখের সংসার,
আবার কেউ সজোরে চিৎকার
না করিয়া নিম্ন সরে করে চিৎকার।
কয়দিন আগে দেশ ছাড়িয়ে
মোর আপন চাচা গেল প্রবাস,
সেথায় গিয়ে প্রবাসের দশা দেখে
হয়ে গেল এখন হতাশ।
চাচা বলে, এতো টাকা দিয়ে প্রবাসে
না এসে দেশে থাকাই ছিল ভালো,
ধৈর্য ধরে দেশে থাকলে হয়ে যেতো
জীবন আমার দিনের মত আলো।
প্রবাস জীবনের কবিতা
এমএ বাবুল হোসাইন
প্রবাস জীবন বড়ই কঠিন
সংসার ছাড়া থাকা,
শত শত দুঃখ-কষ্ট
মনে পুষে রাখা।
প্রবাসেতে আছি আমি
মন যে থাকে বাড়ি,
কষ্ট সহ্য করি ভেবে
হবে বাড়ি-গাড়ি।
আকাশ সমান স্বপ্ন চোখে
সংসার হবে সুখি,
সবার জন্য কষ্ট করি
নিজে হয়ে দুখি।
প্রবাস মানেই কষ্ট বুকে
চেপে চেপে রাখা,
নিজের স্বপ্ন ভুলে সবার
স্বপ্ন মনে আঁকা।
ফিরবো আমি
সামিয়া আক্তার
বাবা -মাকে ছেড়ে আমি
দূর প্রবাসে—থাকি,
ইচ্ছে হলেই মনের মাঝে
তাঁদের ছবি —আঁকি।
যখন আমি একা থাকি
মনটা শুধু—কাঁদে,
বাবা-মাকে দেখবো কবে
আশায় থাকি—ছাঁদে।
বাবা -মায়ের দোয়ায় আজি
হলো গাড়ি—বাড়ি,
নতুন করে গড়তে জীবন
এলাম তাদের—ছাড়ি।
মাকে যখন পড়ে মনে
চোখের জলে—ভাসি,
স্মৃতির ভেতর সদায় জাগে
আমার মায়ের—হাসি।
তাইতো আমি ভাবছি এবার
যাবো ফিরে— দেশে,
যেথায় আছে মা যে আমার
দরদী মন — বেশে।।
প্রবাস থেকে
জাহাঙ্গীর কবির
প্রবাস থেকে বলছি মাগো
আছো কেমন তুমি,
তোমার ছেলে ভাল আছে
সৌদি প্রদেশ ভূমি।
তুমি আমার প্রাণের প্রিয়
সাত সকালের হাসি,
মাগো তোমায় প্রাণের চেয়ে
অনেক ভালো বাসি।
রাত বারোটা হলে পরে
মনে পরে তোমায়,
কাজের ফাঁকে তোমার ছেলে
ঘাম জড়িয়ে ঘুমায়।
তোমার কথা পড়লে মনে
অশ্রু ঝরে পরে,
প্রবাস জীবন কষ্টের মাগো
বলছি তোমার তরে।
আমায় তুমি ক্ষমা করো
ফোন করিতে দেরি,
হিসাব কিতাব সব গুছিয়ে
আসব চলে বাড়ি।
প্রবাস জীবনের কবিতার কিছু শেষ কথা আছে, যেগুলো পাঠকদের উদ্দেশ্যে। আপনি যদি একজন প্রবাসী হয়ে থাকেন আপনার প্রবাস জীবনের গল্প গুলো আমাদের মাধ্যমে, আমাদের প্লাটফর্মে সকল বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছে শেয়ার করতে পারেন। আপনাদের জীবনের ঝুঁকি, বাসায় ফিরার জন্য এক ঝোঁক অপ্রকাশিত ইচ্ছে। যেগুলোর কোনটাই প্রকাশিত হয়নি। আপনাদের সেই অসহায় সময় গুলোর ও অপ্রকাশিত কান্নার গল্ক গুলল লেখে পাঠিয়ে দিন, আমাদের e-mail: [email protected] এই ঠিকানায়। সাথে আপনার পরিচিতি এড করবেন।