
চতুর্থ রজনী
পর্ব – ২ম ও শেষ পর্ব
উম্মে আম্মারা
হায় অনুশোচনা! রাজা আদহামের দাম্ভিকতা রূপ নিলো নিরবতায়। মায়ের বলা গল্পের রাজকুমার সে নয়।সে তো তার বিপরীত ,নাইলাহের চোখের অশ্রু মুছার ক্ষমতা তার নেই।নাইলাহ নিজ হাতে অশ্রু মুঝে, আবার বলে হে রাজা!নীল দরিয়ার মার’আ পার্থিক রাজার আকাঙ্ক্ষা করে না।সে এক আলোকিত নূরের সঙ্গীনি হতে চায়।আপনার তোলোয়ার আমাকে দস্যুদের হাত থেকে বাঁচিয়েছে, কিন্তু কে আমার হৃদয়কে শয়তানের হাত থেকে বাঁচাবে!কে আমাকে আল্লাহর পথে চলতে সাহায্য করবে? রাজা আদহাম এর রাজনী কাটে অনুশোচনার চাদরে ঢেকে।ভোরের কোলাহলে রাজা আলোকিত দ্বীন খোঁজে। কলরব শুনতে পেলে আজ প্রথমবার রাজার হৃদয় শান্ত হয়।ওযুর পানি হাতে রাজা হচ্ছে শুদ্ধিকরণ,হ্যাঁ এই তো প্রশান্তি। ফজরের নামাজ শেষ, পিছনে কেউ দাড়িয়ে। নাইলাহ! নাইলাহ দ্রুত গতিতে ফিরে চলে।রাজা আদহাম পিছন থেকে ডেকে বলে নাইলাহ। নাইলাহ থমকে দারায়।আমায় আলোকিত দ্বীন সম্পর্কে বলবে না? নাইলাহ এর মুখে মুচকি হাসির রেখা।জানতে চান,তাহলে বলবো না কেনো!কিন্তু যেই হৃদয় তোলোয়ারে রক্ত দেখে শান্ত হয়,সেই হৃদয়ে কি আলোকিত দ্বীন প্রবেশ করবে? আলোকিত দ্বীন শুধু নামাজের রুকুন বা রোজার নিয়ম শিখায় না।এটি শেখায় আত্মশুদ্ধি, পারবেন তো?হ্যাঁ পারবো।না হলো না বলেন পারবো ইনশাআল্লাহ। আচ্ছা ইনশাআল্লাহ পারবো।রাজা দীর্ঘ শ্বাস নিলেন, কিন্তু কিভাবে নাইলাহ? লাইলাহ মৃদু হেসে ওযু খানার দিকে ইশারা করে বলল,আপনি তো শুরু করেই দিয়েছেন। আপনি আজ ওযুর পানি দিয়ে শুধু শরীর নয়,নিজের হৃদয় কেও পবিত্র করেছেন। রাজা আদহাম চোখ বন্ধ করলো।তার মস্তিষ্কে আজ আর বাজে না তোলোয়ারের ঝংকার, আজ কেবল আল্লাহর পথে চলার এক দৃঢ় অঙ্গীকার। রজনী পার হয় রাজা আদহাম শেখে যেতে শুরু করে আলোকিত দ্বীন সম্পর্কে। একদিন হঠাৎ রাজা আদহাম দীর্ঘ সিজদায় নত হয়ে দেখে, নাইলাম রাজার পাশে এসে বসে। কিছুক্ষণ পর রাজা সিজদাহ্ থেকে উঠে নাইলাম এর চোখে চোখ রেখে বলে, হে আমার সহধর্মিণী তোমাকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসি। তোমাকে আখিরাতের সঙ্গী হিসেবে চাই। হবে তো? নাইলাহ মুচকি হেসে বলে ইনশাআল্লাহ। আলহামদুলিল্লাহ, নাইলাহ ফিসফিস করে বলে, এই নীল দরিয়ার মার’আ পার্থিক রাজার আকাঙ্ক্ষা করেনি, সে এক নূর খুজেছে। আপনি অনুশোচনার চাদরে ঢেকে সেই নূর পেয়েছেন,আলহামদুলিল্লাহ। সেই নূরের সঙ্গী হতে আমি রাজি।কেননা এ তো আমার রবের নিকট হতে উপহার!
[ পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি ]
হৃদয়ের হেফাজত ও পবিত্রতা বিষয়ক অংশে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ নির্ভরতা এবং ওযুর ভূমিকা রূপক অর্থে ব্যবহৃত, আক্ষরিক না , সেদিকে খেয়াল রাখা ভালো।আল্লাহই একমাত্র রক্ষাকর্তা এবং সাহায্যকারী।তিনি ইচ্ছে করলে কেবল আমরা উসিলা হিসেবে সাহায্য করতে পারি।




