চাঁদের পাহাড় বইয়ের রিভিউ, ছবি ও দাম

চাঁদের পাহাড় বইয়ের রিভিউ 

 

বই : চাঁদের পাহাড়
লেখক: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
রিভিউ লেখেছেন : খাদিজা খাতুন
মুদ্রিত মূল্য ও প্রকাশনা : বইটি কপি রাইট মুক্ত হওয়ার ভিন্ন প্রকাশনী বইটি ছাপিয়ে বিক্রি করতেছে, বইয়ের কোয়ালিটি অনুযায়ী ৫০ টাকা হতে ১৫০ টাকার মধ্যে বইটি বিক্রি হচ্ছে। অফার প্রাইজে বইটি সংগ্রহ করতে মেসেজ করুন – Whatsapp / Facebook Page

 

চাঁদের পাহাড় যেখানে লেখক তাঁর কল্পনা জগত থেকে তুলে ধরেছেন ১৯০৯ সালের, সদ্য এফ এ পাশ করা অতি সাধারণ পরিবারের কিন্তু আত্মপ্রত্যয়ী, সাহসী ও বুদ্ধিমান ছেলে শঙ্করের অদম্য যাত্রার কথা।

শঙ্কর ছিল একাধারে ফুটবল খেলোয়াড়, জেলার হাই জাম্প চ্যাম্পিয়ন, সাঁতারু এবং তাঁর পছন্দ ছিল ভুগোলের ম্যাথ সমাধান এবং ম্যাপ বিশ্লেষণ করা। কিন্তু বিএফ পাশ করার পর যখন বাবার অসুস্থতা আর পরিবারের দারিদ্রতা তাঁর হ্যারি জনস্টন, মার্ক পোলো, কিংবা রবিন্সন ক্রুসোর মত জীবন কাটানোর স্বপ্ন কি বিলীনের পথে নিয়ে যাচ্ছিল।

কিন্তু তাঁর অভিযাত্রায অদম্য ইচ্ছা বোধহয় তাঁকে নিয়ে যায় আফ্রিকার মতো এক রহস্যময় দেশে। শঙ্কর আফ্রিকার উগন্ডার মোম্বাসা শহরে রেলওয়তে চাকরি পায়।

দুঃখের বিষয় হচ্ছে উগান্ডা চলছিল খাবার পানির অভাব কারণ তখন ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়। প্রতি রাতে সিংহের গর্জন, আবার সিংহের সাথে লড়াই করতে করতে যখন শঙ্কর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার হলো তখন শুরু হয় ব্লাক মাম্বা সাপের অসতর্কিত আক্রমণ।

পানির অভাবে স্টেশন থেকে বেশ খানিকটা দূরে সে পানির প্রয়োজন মেটাতে যাতায়াত করতে করতে পরিচয় হয় পর্তুগিজ অভিযাত্রিক ও স্বর্ণ সন্ধানী ডিয়াগো আলভারেজের সাথে।

আলভারেজ মাধ্যমে শঙ্করের জীবন মোড় নেয় অন্যদিকে, আলভারেজ শঙ্করকে একটি ম্যাপ হাতে তুলে দিয়ে বলেছিলেন তাঁর সাহস থাকলে যেন এই ম্যাপে থাকা রিখ্টারসভেল্ট পর্বত ও নদীতে সে যায়। কিন্তু এই যাত্রা পথে রয়েছে জঙ্গলে বসবাসকারী উপজাতিসহ বিভিন্ন ভয়ঙ্কর জন্তু-জানোয়ারের ভয় তাছাড়া ম্যালেরিয়া তে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। চলার পথে জলন্ত আগ্নেয়গিরি বাঁধা রয়েছে আরও রয়েছে ভয়ংকর জন্তু দানব বুনিপের ভয়।

আরো পড়ুনঃ  অমর একুশে বইমেলা ২০২৩ উপলক্ষে বিপুল চন্দ্র রায় ও সেলিম কাজী'র সম্পাদনায় ’অমৃতস্মৃতি’’যৌথ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হচ্ছে।

তবুও শঙ্কর আলভারেজের সাথে বেড়িয়ে পরে হিরার খনির সন্ধানে, দু’জন একসাথে সব বাধা মোকাবেলা করলেও আলভারেজ মারা যায় বুনিপের থাবায়, এতে শঙ্কর একা হয়ে পড়ে।
আলভারেজ কে হারালেও শঙ্কর তাঁর মনোবল হারায়নি, এভাবে সে একাই এগোতে থাকে। এরপর সে চলতে চলতে এক রহস্যময় গুহায় আশ্রয় নেয়, যেখানে সে সব আশা ছেড়ে দিয়েছিল। সে কিছু পাথরের মাধ্যমে গুহা থেকে পথ খুঁজে পেয়ে বের হয় এবং সাথে কিছু নুড়ি পাথর নিয়ে আসে।

এরপর সে মরুভূমি পাড়ি দিতে যেয়ে আবার একটা গুহা খুঁজে পায় বং এর মধ্যে ইতালীয় অভিযাত্রিক আত্তিলিও গাত্তির কঙ্কাল খুঁজে পায়, যিনি ১৮৮০ সালের দিকে হীরার খনির সন্ধানে এসেছিলেন কিন্তু বেঁচে ফিরতে পারেনি। কঙ্কালের সাথে সে একটি পত্রও পায় যেটা পড়ার মাধ্যমে সে যে তাঁর অজান্তেই জিতে গেছে তাঁর পরিশ্রম সার্থক হয়েছে তা বুঝতে পারে।

যেই হিরার খনির সন্ধানে এসে আত্তিলিও গাত্তি, জিম কার্টার ও ডিয়াগো আলভারেজেকে জীবন দিতে হয়েছে। সেই হিরার খনি শঙ্কর কিভাবে মনের অজান্তেই জয় করলো জানতে হলে বই পড়তে হবে।

তবে শঙ্করের ইচ্ছে সবসময় সৎ ছিল সে সোনা বা হিরা নিয়ে এসে কখনও নিজে ধনী হতে চাইনি, সবসময় চেয়েছে গ্রামের বৃদ্ধাদের আরাম দিতে, অবিবাহিত মেয়েদের বিয়ের খরচ জোগাতে আর পরিবারের অভাব ঘোচাতে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *