অন্যরকম তুমি
জান্নাতুল ফেরদৌস তারিন
চতুুর্থ পর্ব
আহির বাসায় এসে তার রুমে অফিসের কাজ করতেছিলো কম্পিউটারে।কাজ করতে করতে হঠাৎ তার তুবা আর তৃণার কথা মনে পড়ে,,,তাই সে মুচকি মুচকি হাসতেছিলো,,,
এদিকে তাসনুবা ভাইয়া ভাইয়া করতে করতে আহির রুমে আসলো কিন্তু আহিরের তাসনুবার কথা কানে যায় নী সে তখন মুচকি মুচকি হাসতেছিলো,, এটা দেখে তাসনুবা বল্লো
তাসনুবা :কিরে ভাইয়া কোন মহারানীর সাথে আজ দেখা হলো যে মুচকি মুচকি হাসতেছিস,,,?আচ্ছা বল না বাবি দেখতে কেমন,কী নাম,কোথাই থাকে,,,?তোর সাথে কীভাবে পরিচয়,,
আহির:পাগল হয়ে গেছিস তুই,,!কোন বাবি,? কার বাবি?কিসের পরিচয়?
তাসনুবা :ঢং করিছ না,,বলবি না তো ঠিকাছে বলা লাগবে না,,
আহির:আজব তো কী বলবো তুকে?আর শুন আমার সাথে কারো কোন পরিচয় নেই,,,আর কারো সাথে প্রেমও নেই,,
এই বলে আহির তাসনুবার মাথাই একটা মেরে বাহির হয়ে গেলো,,,
.
এদিকে তুবার অনেক মন খারাপ আর প্রচণ্ড পেটে ব্যাথা,,পিরিয়ড হলেই তুবার এই সমস্যা গুলা দেখা যায়,,,
স্বাভাবিক ভাবে পিরিয়ড হলে মেয়েদের মন খারাপ থাকে,,,কারণ ছাড়াই মেজাজ গরম থাকে,,,অযাথা কান্না আসে,,,তুবা পেট ব্যাথায় শুয়ে আছে,,,কিছুক্ষণ এর মধ্যে সে ঘুমিয়ে পড়েছে,,এদিকে তৃণা বাসার নিছ থেকে তুবা সে কখন থেকে ফোন দিয়ে যাচ্ছে কিন্তু তুবার কোন খবরই নেই,,,তাই তৃণা বাসায় এলো এসে দেখে তুবা ঘুমাচ্ছে,,,
তৃণা:কী মহারানী এখনো ঘুমাচ্ছেন কলেজ যাবেন না?
তৃণা কণ্ঠ শুনে তুবা ঘুম ঘেকে ওঠে বসলো,,,
তুবাকে দেখেই তৃণা বুঝলো তুবার শরীর খারাপ, মনও খারাপ
তৃণা:কিরে দোস্ত কী হয়েছে,,,শরীর খারাপ নে কী?কলেজ যাবি না?
তুবা:হুমম দোস্ত শরীর একটু খারাপ,।কলেজ যাবো না তুই চলে যা।
তৃণা :তুই না গেলে আমি ও যাবো না,,,তুই না থাকলে ভালো লাগে না
তুবা:পাগলামি করিস না তুই যা,,,আর আজকে ক্লাসে কিছু জরুরি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে,,তুই যা কী আলোচনা করবে ঐ টা তুই আমালে বুঝাবি…
বেচারি তৃণা না চায়লেও যেতে হয়েছে,,কিছু করার নেই,,,
তোয়া ইস্কুল থেকে আসার সময় তাসনুবা কে সাথে করে নিয়ে এসেছে বাসায়,,,
তাসনুবা এর আগে কখনো তোয়াদের বাসায় আসে নী,,,তাই তাসনুবার জন্য ভিবিন্ন নাস্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে,এবং তোয়াদের পরিবারের আচরণ তাসনুবার অনেক ভালো লাগছে,,,সবাই অনেক সুন্দর করে কথা বলে,ফ্রেন্ডলি কথা বলে,,,
তাসনুবার তুবাকে দেখে অনেক পছন্দ হয়,,,
কিন্তু তোয়াকে তখন কিছু বলে নী,,,তাই তাসনুবা সবার থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলো বাসায়,,
তার পরের দিন তাসনুবা তোয়াকে বল্লো
তাসনুবা :হাই বেয়াইন সাহেবা, কেয়া বাত হে?
তোয়া:একটু ভ্রু কুঁচকে বল্লো,,কী হলো তোর,,ঠিকাচোছ তুই,,আসার সময় বাতাস লাগে নী তো,,হাহাহ
তাসনুবা :শুন,আমার বড় ভাই আর তোর বোনের যদি বিয়ে হয় তাহলে তো তুই আমার বেয়াইন হবি তাই না ,, হিহি
তোয়া:যাক বাবা,আমার বোনের আবার কখন বিয়ে হলে,,,দূর তুই কী বলছ সব আমার মাথার উপর দিয়ে যায়,,কিছু বুঝি না,,
তাসনুবা :তুকে বুঝা লাগবে না,,যা করার এভার আমি করবো,,,
তোয়া:কী করবি?একটু বুঝায় বল..!
তাসনুবা :শুন তোর আপু কে আমার পছন্দ হয়েছে তো আমি ওনাকে আমার বাবি করে নিয়ে যাবো,,তুই আমাকে একটা ছবি দিবি আপুর আমি আমার পরিবারের সবাইকে দেখাবো
তোয়া:দেখ আমি ছবি দিতে পাড়বো না,,আপু কাউকে ছবি দেয় না,,তবে তুই একটা কাজ করতে পাড়ছ,,তুই তোর আম্মু,আব্বু আর ভাইয়া কে নিয়ে আপুকে দেখে যা,,আমি আম্মুকে বলবো সব
তাসনুবা:আচ্ছা ঠিকাছে আগে আমি পরিবারে বলে দেখি কী বলে সবাই,,
তোয়া:আচ্ছা,,আমিও বলে দেখি,,তোর পরিবার কী বলে আমাকে জানাইচ তুই,,তাহলে আল্লাহ হাফেজ
তাসনুবা :আচ্ছা ঠিকাছে আল্লাহ হাফেজ
.
তাসনুবা আর তার পরিবারের সবাই মিলে ডাইনিং টেবিলে রাতের খাবার খাচ্ছে তখন তাসনুবা বলে উঠলো
তাসনুবা :তোমাদের সবাইকে একটা কথা বলার আছে,,,
আহির:তুই আবার কী বলবি,,আচ্ছা বল
তাসনুবা:আব্বু আমি ভাইয়ার জন্য মেয়ে ঠিক করেছি
এই কথা শুনে সবাই হেসে উঠলো আর আহির বল্লো
আহির:তুই পিচ্ছি মেয়ে আমার জন্য আবার কী মেয়ে ঠিক করলি শুনি?
আহির একটু হেসে দিয়ে উঠে চলে গেলো ও তাসনুবার কথাকে তেমন পাত্তা দেয় নী,,
তাসনুবা একটু কান্না কান্না সূরে বল্লো
তাসনুবা :দেখলে বাবা কীভাবে অপমান করলো আমাকে,,আমি এখন বড় হয়ছি না,,,
সোহরাব হোসেন:আচ্ছা মা কান্না করে না,,,দুষ্টামি করেছে আহির,আমি বকে দিবো,,
তাসনুবা :আচ্ছা বাদ দাউ বকতে হবে না,বাবা চল না আমরা বাবি কে দেখে আসি,,
আছিয়া বেগম একটু হেসে বল্লো,,
আছিয়া বেগম:দেখো মেয়ের কান্ড,,ছিনা নেই জানা নেই কাকে বাবি ডাকে,,,
তাসনুবা :আরে আমি ছিনি,, আমার ফ্রেন্ড এর বোন,,অনেক ভালো,,আর সুন্দর,,,আব্বু চল না একটু দেখে আসবে,,তোমাদের অনেক পছন্দ হবে,,,চল না বাবা প্লিজ প্লিজ
সোহরাব হোসেন :দেখ মা যাকে তাকে তো আর বউ করা যাবে না,,বিয়ে অনেক বড় একটা ব্যাপার,, অনেক দেখেশুনে আনতে হবে আর তুমি তো ছোট এখনো বুঝবে না এত সব
তাসনুবা :আচ্ছা দেখতে তো সমস্যা নেই,,দেখলে কী বিয়ে হয়ে যাবে,,তোমাদের পছন্দ না হলে হবে না,,শেষ তো
সোহরাব হোসেন :আচ্ছা ঠিকাছে আমি সময় করে শুক্র বারে যাবো,,,
তুমি তাদের জানিয়ে দিয়ো
তাসনুবা :ঠিকাছে আব্বু,,আমার আব্বুটা কত্ত ভালো,, লাভিউ আব্বু,,,
তাসনুবা তোয়াকে এসএমএস করে বলে দিলো,তারা শুক্র বার যাচ্ছে
।
এদিকে তুবা আর বাকি সবাই খাওয়াদাওয়া শেষ করে বসে বসে কথা বলতেছে,,
তখন তোয়া বলে উঠলো
আব্বু আম্মু আপুকে শুক্রবারে দেখতে আসবে,,
এই কথা শুনে সবাই চমকে উঠলো,,, তুবার আম্মু বল্লো
সাজিদা বেগম:তোয়া হঠাৎ কী বলছিস,,?
তোয়া:আসলে আম্মু তাসনুবার আপুকে পছন্দ হয়েছে তাই ও ওর পরিবার নিয়ে আপুকে দেখতে আসবে,,,
তুবা :তুরা পিচ্ছি পিচ্ছি এসব কী সিদ্ধান্ত নিচোছ?
তোয়া:আমি কিছু জানি না আপু,,,ওনার আসবে এটায় আসল কথা,,,আর আমি নিষেধ করলেও হবে না,,তাসনুবা যখন বলছে ও তোমাকে বাবি করে নিয়ে যাবে,,তখন নিয়েই যাবে,,হুহ
সাজিদা বেগম:আচ্ছা ঠিকাছে ওনারা যখন আসতে চাচ্ছে তখন আসুক,,,আর বিয়ে হতে হবে এমন কোন কথা নেই,,আমি তোদের বাবাকে বিষয় টা জানাচ্ছি।
তুবা:আম্মু তুমি তোয়ার কথা কেনো মাথায় নিচ্ছো,,আরে ওরা ছোট মানুষ,,
সাজিদা বেগম:আচ্ছা ওরা আসলে বিয়ে হয়ে যাবে নে কী,,আর মেয়ে থাকলে এইরকম অনেকেই আসবে
আরো পড়ুনঃ- দৈনিক চিরকুটে সাহিত্য