অন্যরকম তুমি
জান্নাতুল ফেরদৌস তারিন
পর্বঃ ৫ম
শুক্রবার তুবাকে দেখতে আসার জন্য তাসনুবা’রা সবাই তৈরি হচ্ছে,,,আহির কিন্তু একদম রাজি নেই এই বিয়েতে,,,কেননা ও এর মধ্যে অন্যকাউকে ভালোবেসে পেলছে তাই সে না চায়তেও যেতে হচ্ছে,,,
.
এদিকে তুবাকে দেখতে আসবে তাই সাজিদা বেগম আর তোয়া মিলে নাস্তা তৈরি করছে,,,
তুবা তৃণাকে সব বিষয় ফোন করে জানাই,,,কিন্তু তৃণা আসতে পারে নী তার আম্মু বাসায় একা আর অসুস্থ,,,
,
,
আহির রা চলে আসলো তুবাদের বাসায়,,,আছিয়া বেগম আর তাসনুবা তুবার রুমে গেলো,,,
তুবা:আসসালামু আলাইকুম আন্টি,,
আছিয়া বেগম:ওয়া আলাইকুমুস সালাম,, কেমন আছ তুমি,,?
তুবা:জ্বী আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি,, আপনি কেমন আছেন..?
আছিয়া বেগম:আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি,,বস তুমি
তুবা:না সমস্যা নেই ঠিকাছে,,তাসনুবা তুমি কেমন আছ,,?
তাসনুবা :আমার খবর কে নেয় বল,,সেই কখন থেকে দাঁড়িয়ে আছি কিন্তু কারো কোন পাত্তা নেই,,,
তুবা:উপস,সরি বইনা আন্টির সাথে কথা বলছিলাম খেয়াল করি নাই,,,
তুবা:আচ্ছা ঠিকাছে ঠিকাছে,,আমি মঝা করতেছি,,এত পরমালিটি দেখানো লাগবে না হিহি,,
আহির আর আহিরের বাবা তুবার বাবার সাথে সামনের রুমে বসে গল্প করতেছে,,,এর মধ্যে তোয়া সবার জন্য নাস্তা নিয়ে আসে,,,,
সবাই নাস্তা করে নেয়,,
এবার তুবাকে আহিরের দেখার পালা,,,
আহিরকে তাসনুবা তুবার রুমে নিয়ে গেলো,,,আহির কে দেখে তুবা উঠে দাঁড়ালো,,
তুবা:আসসালামু আলাইকুম
আহির:ওয়া আলাইকুমুস সালাম,,
নীল রংয়ের একটা জামা পড়া তুবা,,তুবাকে মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর লাগছে যে কেউ তাঁড় পড়ে যাবে,,,আহিরও ১ম এ চোখ পিড়াতে পাড়ছিলো না কিন্তু হঠাৎ তার রাস্তার মেয়েটার কথা মনে পড়তেই সে চোখ অন্যদিকে সরিয়ে নিলো,,,
আহির বুঝতে পাড়ে নী রাস্তার মেয়েটায় যে তুবা,,কেননা সেদিন তুবা সম্পূর্ণ পর্দা করা ছিলো আর আজকে জামা পড়া,,,
তুবারও আহির কে খুব ছিনা ছিনা লাগছে কিন্তু মনে করতে পাড়ছে না কোথাই দেখছে,,,,তাই সে আর কিছু বল্লো না,,,
সবার নিরবতা ভেঙ্গে তাসনুবা বলে উঠলো,,
তাসনুবা :কী হলো তোমরা ছুপ করে আছো কেনো,,আরে কথা বল,,আমি আছি বলে লাজ্জা পাচ্ছ ঠিকাছে আমি চলে যাচ্ছি,,,,
এই বলে তাসনুবা চলে গেলো,,,
আহির তুবাকে সামান্য কিছু প্রশ্ন করে কিন্তু তুবা কিছু জানতে চায় নী সে ছুপ করে আছে,,,
আহির চলে আসলো সামনের রুমে,,,
আহিরকে দেখে তাসনুবা পাশে গিয়ে জানতে চায়লো তুবাকে কেমন লাগছে,,
আহির কিছু বলছিলো না,, কিন্তু তাসনুবা তো বিরক্ত করে পেলছে প্রশ্ন করে,,তাই শেষে উত্তর দিলো,,
আহির:হুমম ভালো লাগছে,,,
তাসনুবা লাপিয়ে উঠে বল্লো
তাসনুবা :ইয়েস আলহামদুলিল্লাহ,, আমি বলছি না সবার পছন্দ হবে,,,
তাসনুবার কান্ড দেখে আহির খুব বিরক্তি হচ্ছিলো,,কারন সে তো বলেনী সে বিয়ে তে রাজি,,,কিন্তু এদিকে তাসনুবা তার বাবাকে গিয়ে বল্লো আব্বু ভাইয়ার মেয়ে পছন্দ হয়েছে,
সোহরাব হোসেন:আলহামদুলিল্লাহ তাহলে তো আর কোন সমস্যা নেই,,,আচ্ছা বিবি(আছিয়া বেগম) তুমি বল তোমার থেকে কেমন লাগছে?
আছিয়া বেগম:হুমমম ঠিকাছে,, কিন্তু
সোহরাব হোসেন:আরে মেয়ে পছন্দ হলে আর কিসের কিন্তু,,,
সোহরাব হোসেন তুবার আব্বু জানিয়ে দিলো তাদের মেয়ে পছন্দ হয়েছে তাই তারা এখন আপাতত রিঙ পড়াতে চায়
জসিম উদ্দিন :আলহামদুলিল্লাহ,, আমাদেরও ছেলেকে পছন্দ হয়েছে,,,
আছিয়া বেগম একটু অসন্তোষ কারন তাদের পরিবারের সাথে তুবাদের পরিবারের অনেক ব্যবধান,, তারা রিলেটিভ দের কীভাবে মুখ দেখাবে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে তিনি একটু চিন্তিত কিন্তু সোহরাব হোসেন এসবে কান দিচ্ছে না,,,,
আহিরকে আর কিছু বলার সময় দেয় নী তার বাবা,,,
এদিকে তুবার থেকে মত জানতে চায়লে ও ওর মা বাবাকে বলে,,
তুবা:তোমাদের যে ভাবে ভালো লাগে ঐ ভাবে কর,,আমার আপত্তি নেই,,,কিন্তু একটু ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিবে তোমরা,,কেননা,,ওনারা আমাদের থেকে অনেক ধনী,,,
সাজিদা বেগম:দেখ মা ওনাদের ব্যাবহারে তো আমি তেমন কিছু দেখি নাই,,আর ওনারা নিজেরাই বলছে তোকে পছন্দ হয়েছে,,,
জসিম উদ্দিন :হুমম আমারও তাই মনে হয়,,
তুবা:তোমাদের সব ঠিক মনে হলে আমার কিছু বলার নেই,,,
,,রিঙ পড়িয়ে আহির রা সবাই চলে যায়,,
বাসায় গিয়ে আহির বলে
আহির:আব্বু বিয়েতে আমার মত নেই,,
সোহরাব হোসেন:কী বলছিস তুই,,,আর তখন তো তুই বলেছিলি মেয়ে কে তোর ভালো লাগছে
আহির:সব ঠিক আছে কিন্তু তাও আমি বিয়েতে রাজি নেই,,
সোহরাব হোসেন:তুই বল্লেই হলো নাকী,, সব ঠিক হয়ে গেছে এখন বলছ বিয়ে করবি না,,,আমার মানসম্মান নেই নাকী,,,,
আহির:দেখ বাবা,,
আহিরের আর কোন কথা না শুনে সোহরাব হোসেন চলে যায়,আর যাওয়ার সময় বলে যায়,,,আমি এই বিষয় নিয়ে আর কোন কথা শুনতে চায় না,,,,
আহিরও মেজাজ খারাপ করে বাসা থেকে চলে যায়,,
.
এদিকে সকাল হতেই তৃণা আসে তুবাকে ডাকার জন্য,,,তৃণার ফোন পেয়ে তুবা বাহির হয়,,,রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে তৃণা জিঙ্গেস করলো,,
তৃণা:কিরে কাল কী হলো কিছুই তো বল্লি না,,,আর। ফোনও তো দিস নাই,,,
তুবা:কী বলবো আর বল,, রিঙ পড়িয়ে দিয়ে গেছে আমাকে,,,
এই কথা শুনেই তৃণা চমকে উঠে,,,
তৃণা:মানে কী,,,? কী বলছ তুই,,তার মানে তোর বিয়ে টা হয়েই যাবে,আমি একা হয়ে যাবো!?
তুবা: আরে দূর কী বলছ তুই,,,আর রিঙ পড়ালে কী বিয়ে হয়ে যায় নে নী,,,
তৃণা: আচ্ছা দুলাভাই দেখতে কেমন রে,,তোর স্বপ্নের রাজকুমারের মতো তো,,হিহি
তুবা : আরে তুই থামবি,,দুলাভাই কই থেকে আসলো,,,?
তৃণা: আচ্ছা বল না দেখতে কেমন?
তুবা একটু মুচকি হেসে বল্লো
তুবা: মাশাআল্লাহ Handsome আছে,,কিন্তু,,,
তৃনা: বাবাহ মেয়ে তো দেখছি লজ্জা পাচ্ছে,, তার মানে তোর পছন্দ হয়েছে,,ওকেএ ঠিকাছে বিয়েটা কর তাহলে এবার তোর বিয়ে দিয়ে আমি বিয়ে করবো, আমার তো একটা দায়িত্ব আছে তাই না,,হিহি
তুবা: আসছে দায়িত্ব পালন করতে। আমি আছি আমার জ্বালাই।
তৃণা: তোর আবার কী জ্বালা শুনি,,?
তুবা: দেখ দোস্ত ওনারা অনেক ধনিব্যক্তি। আর তুই তো জানিস আমার আব্বুর এতো টাকা পায়সা নেই। তাই উনাদের সব কিছুর সাথে হয়তো আমার পরিবার মানিয়ে নিতে পারবে না।
তৃণা: আরে দোস্ত চিন্তা করিস না। সব ধনিব্যক্তিরা এক হয় না। আর আন্টি আংকেল যখন এখান দিয়ে মত দিয়েছে তাহলে নিশ্চয় ভেবেচিন্তে মত দিয়েছে,,
তুবা: কিন্তু এর চেয়ে বড় সমস্যা আরেক টা…
আরে পড়ুনঃ- দৈনিক চিরকুটে সাহিত্য