আপনায় আর পাওয়া হলো না আমার (চিঠি কাব্য)

আপনায় আর পাওয়া হলো না আমার

প্রিয়, পত্রের প্রথমে প্রণাম রইল, রাগ করে চিঠিটা ছুঁড়ে ফেলে দেবেন না প্রিয়, একবার পড়বেন।
শুনেছি, প্রিয়জনের চিঠি নাকি,খুব যত্নে পড়তে হয়। অবশ্য এটা আমার অজানা নয়, আমার চিঠি আপনি যত্নে পড়বেন না, আমি তো আর আপনার প্রেমিকা বা পত্নী নই। তবুও আমার চিঠিটা একটিবার পড়বেন।
“রোহিনী’ লিখেছে বলে, রাগ করবেন না, আমি দ্রুতই চিঠিতে ইতি টেনে দিতে চেষ্টা করেছি।
জানেন,আপনায় লিখতে গেলে কয়েক পর্ব বড় বড় উপন্যাস লেখা যায়, আমিও নিজেও জানিনা।
কিন্তু আজ আমি আপনায় বিরক্ত করতে চাই না।
তাই, অণুগল্পের মতো ছোট করেই লিখছি।
অবশ্য, আপনি আমার গোপন বিরহের সুন্দর উপন্যাস, আপনি যে আমার হৃদয়েই করছেন বাস, নাহ্ কবিতায়, কাব্য, সাহিত্য, এইসবে এখন যাচ্ছি না।

প্রিয়,আপনায় যে আমার আর পাওয়া হলো না।
আপনি সেই আড়ালে রয়ে গেলেন। কিন্তু,
আপনি আমার সুন্দর প্রেমের গল্প হতে পারতেন। আপনার উপমায়,বেশ কয়েকটা কবিতা, গল্প শেষ করেছি। আপনি আমার অতি কাছের একজন পাঠক হতে পারতেন, আপনার, আমার আমাদের দু’জনের একটা সুন্দর উপন্যাস হতে পারতো। আমি লিখলাম,
কিন্তু! প্রিয় আপনি তো আমায় চিনলেন না।
আপনায় যে আমার পাওয়া হলো না।

জানেন, আমার হৃদয়ে ভীষণ কালবৈশাখী ঝড় হয়,
ওই ঝড় দৃশ্যমান নয়, অদৃশ্য তুফান, তাতে আমি ভেঙে চুরমার হয়ে যাই। আমার চোখে অশ্রু ঝরে ভীষণ।
একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাসে থাকে। অদৃশ্য কষ্টে আমি স্বাভাবিক থাকতে পারিনা। কেবল অাক্ষেপ হয়। ভীষণ অাক্ষেপ। আমি কি করবো বলুন তো? আপনায় আমি যে চাইলেও আর পাবো না। একবার, শুধু একবার আপনায় জানাতে চাই, আমার সমস্ত কথা, আচ্ছা আপনি শুনবেন তো? সেই ঘুরে-ফিরে, মূল কথা ওটাই, আপনায় আমার আর পাওয়া হলো না। এই বাক্য যে আমায় খুব আঘাত করে।



জানেন, আপনায় আমার আগুনের মতো মনে হয়, জলন্ত আগুন। সেই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছি আমি। জানেন, আমার ভীষণ ইচ্ছে ছিল, আপনায় নিয়ে,একটা অসাধারণ সুন্দর উপন্যাস লিখবো।
কিন্তু আপনায় যে আমার পাওয়া হলো না।
কি লিখবো? কোন স্মৃতি নাই, কথা নাই, দেখা নাই,
ভালোবাসা নাই। কিন্তু সব হতে পারতো।
ওই যে, ভাগ্য যে মুখ ফিরিয়ে নিলো।
আমার চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে, আপনায় কতটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছিলাম। এখন বুঝতে পারি,
আপনায় নিয়ে বেশি ভাবা মনে হয়, অর্থহীন ছিল।
এই জীবনে আর আপনায় যে আমার পাওয়া হলো না।
ঈশ্বরের এই নিষ্ঠুরতম বিচার কেন আমার প্রতি হলো, সঠিক জানিনা। কিন্তু আপনায় নিয়ে ভাবতে ভালোলাগে,
লিখতে ভালোলাগে,কেবল সে লেখা আপনার নিকট পৌঁছাতে পারেনা। আচ্ছা, আপনি তো শুনেছি খুব ভালো আছেন, আপনার বিবাহিত স্ত্রীর “আতসী” কে নিয়ে।
কখনো যদি জানতে পারেন,
আমি আপনায় ভালোবেসে ছিলাম।
তখন কী একবার আমার জন্য অনুসূচনা করবেন? আপনি কী আমার সেই লেখাগুলো পড়তে চাইবেন?

আরো পড়ুনঃ  সেই আলো আজকের অনু - অপ্রত্যাশিত চিঠি ২০২০ সালে পরিচিত মানুষের কাছে

জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বের জীবনী

>> জনপ্রিয় লেখক আরিফ আজাদের পরিচিতি ও জীবনী

>> লেখক বখতিয়ার উদ্দিন সংক্ষিপ্ত পরিচিত ও জীবনী

>> রাজনৈতিবিদ শেখ তন্ময় এর পরিচিতি ও জীবনী

প্রিয়, আপনায় যে আমার পাওয়া হলো না। এই দুঃখ আমি মানতে কেন পারিনা। বার বার প্রশ্ন করি মনকে,
কিন্তু মন সে প্রশ্নের উত্তর দেয়না। গভীর শোকে কাতর হয়ে, বিরহ অনলে পুড়ে ছাই হয়ে, আপনায় শেষবারের মতো বলছি প্রিয়, আমি যে আপনায় ভালোবাসি, কিছুতেই ভুলতে পারবো না। কখনো যদি জানেন,
কেউ একজন মানুষ ছিল, তাহলে আমার জন্য একটু অাক্ষেপ করবেন। বিশেষ অনুরোধ রইল প্রিয়,
আপনার ওই অাক্ষেপের, অপেক্ষায় আমি রইলাম।
যেমন চৈত্র মাসের দুপুরে, শুকনো মাটি বৈশাখের বৃষ্টির জলের জন্য অপেক্ষা করে।


আমিও এখন ওই চৈত্র মাসের দুপুর হয়ে গিছি।
আপনি আমায় চিনলেন না কেন? প্রশ্ন করে, আমি আমার মস্তিষ্ককে ধীরে ধীরে বিষময় করে তুলছি।
আমি অন্যায় করছি, নিজের উপর, চোখে ঘুম নেই৷ আর নিজেকে শাস্তি দিতে চাইনা।
প্রিয়,খুব অভিমান করেই লিখলাম চিঠিটা,পড়বেন তো? আপনি তো জলন্ত দাবানল, যা আমি খুঁজেছি,বহুকাল।
মস্তিষ্ককে করেছি বহুবার বেসামাল।

জানেন,আপনাকে আমায় একটা অগ্নিকুন্ড মনে হয়।
অদৃশ্য ভাবে সেই অগ্নিকুন্ডে আমি আটকে রয়েছি।
বহু কষ্টে আপনার বিরহ অনলের যন্ত্রণা ভুলেছিলাম, কিন্তু ততক্ষণে আমার সমস্ত হৃদয়ে দাবানল ছড়িয়ে গেছে। আর লিখছি না,আপনায় ভুলতেও পারছিনা।



আপনি এর পরের জন্মে আমারি থাকবেন।
হ্যাঁ, আমার অনুরোধ রইল প্রিয়। এবারে আপনিও অন্য কারো, আমারও পথ ভিন্ন। সেই পরের জন্মে
আপনার সাথে আমি আমার এই জন্মের অসমাপ্ত প্রেম কাব্য সমাপ্ত করবো। কিন্তু এই জন্মে যে আমি,
আপনার দাবানলে একটু একটু করে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছি। তা জানলে আমার জন্য আপনার মায়া হবে?
অনুসূচনা করবেন তো? নাহ্ আমায় স্বার্থপর মনে করবেন না, আপনি আপনার সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করবো না। সে বিষয়ে সন্দেহ করবেন না।
ওহ্ খুব বেশিই লিখে ফেলছি? তাহলে এখন বরং ইতি টেনে দিচ্ছি। যদি বড় চিঠি দেখে আপনি বিরক্ত হন,
আসলে ভালোবাসি তো, বিরক্ত করতে চাই না।
তাহলে আপনি ভালো থাকবেন। আপনার স্ত্রী
“অতসী” কে ভালো রাখবেন।
ওহ্ আচ্ছা ভুলেই গেছি, এত ভুলে যাই এখন,
যা বলবো, আপনার অতসী বুঝি সুন্দরী? নাহ্ এমনি প্রশ্ন করছি। অবশ্য আমিও কী অদ্ভুত এক পাগল মানুষ, আপনি কখনো আমার চিঠির উত্তর দেবন না।
তবুও প্রশ্ন করছি,ওহ্ এবার আপনার সমস্ত চিন্তা-ভাবনা আমার মস্তিষ্ককে পুরোপুরি শেষ করে দেবে মনে হচ্ছে।।



পত্র যে শেষ করতেই মন চাইছেনা, ইচ্ছে হচ্ছে আরো কিছু লিখি, আসলে আমি রোজ আপনায় নিয়ে পত্র লিখি, কখনো পৌঁছাতে পারিনি। প্রিয়,আপনায় যে আমার পাওয়া হলো না। আমার যে চোখে অশ্রু থামছে না। তবুও চিঠির শেষে তো করতে হবে। ভালো থাকবেন,
ইতি, “রোহিনী”এক ভাগ্যহীন মানুষ,
যে আপনার মতো মানুষের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হলো। আপনায় আর পাওয়া হলো না।

ইতি রত্না হোড় 

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *