অন্যরকম তুমি কলমে জান্নাতুল ফেরদৌস তারিন, পর্ব ০১

অন্যরকম তুমি
জান্নাতুল ফেরদৌস তারি
পর্ব ০১

তুবা খুব সহজসরল ও ভদ্র একটি মেয়ে।তুবা খুব ধনী পুড়িবার মেয়ে এমন টা না,তার বাবা জসিম উদ্দিন একজন বেসরকারি কর্মজীবী, তার মা সাজিদা বেগম একজন গৃহিণী।
মা-বাবা ও ছোট বোন তোয়া কে নিয়ে তাদের সূখি পরিবার।হাসি আনন্দে তাঁদের দিন কাটে,,,কিন্তু মাঝে মাঝে তুবার খুব মন খারাপ হয়,,,,কারন সে জেনারেল লাইনে পড়ালেখা করে,,,তাই সে তার বাবা-মা কে মাঝে মাঝে জিঙ্গেস করে কেনো তাকে মাদ্রাসায় পড়ানো হলো না,,?
কিন্তু এর কোন উত্তর আসে না,,
তাই তুবা প্রচুর মন খারাপ হয়,,মাঝে মাখে নামাজে বসে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে আর তার হেদায়েত এত জন্য দোয়া করে,,,
তুবা অবসর সময়ে ভিবিন্ন হাদিসের বই পড়ে,,ইসলাম সম্পর্কে জানার অনেক ইচ্ছে তার,,,
তুবা জেনারেল এ পড়লেও সে অনেক ধার্মিক,, যতটা পাড়ে ততটা চেষ্টা করে ইসলামে পথে চলতে,,এতে তাকে সাহায্য করে তার মা সাজিদা বেগম।
একদিন তুবা পর্দা সম্পর্কে একটা হাদিস পড়ছিলো,,,সেখানে পর্দার উপকারিতা দেখে চমকে উঠে,,,,আর পর্দা না করার ভয়াবহতা দেখে ভয় পেয়ে যায়,,,তাই সে ঠিক করলো সে কাল থেকে ইস্কুলে পর্দা করে যাবে,,,
তুবা যখন পর্দা করে ইস্কুলের উদ্দেশ্যে বাহির হলো তখন খুব ভয় পাচ্ছিলো,,,,মনে মনে ভাবতে লাগলো যদি স্যার রা ইস্কুল থেকে বাহির করে দেয়,যদি অপমান করে,,
এসব ভাবতে ভাবতে ও আল্লাহর কাছে সাহায্য চাচ্ছিলো,,,

অবশেষে সে বিদ্যালয়ে এসে পৌঁছালো,,,বিদ্যালয়ের ছেলে মেয়েরা এমন ভাবে তার দিকে তাকিয়ে ছিলো মনে হচ্ছিলো সে একজন অপরাধী,,, কেউ কেউ আবার হাসাহাসি ও। করছিলো,,তুবা এসবে কান না দিয়ে ক্লাসে গিয়ে বসে আছে,,,,,,
কিছুক্ষণ পড় ক্লাস শুরু হলো,,,কিন্তু একের পর এক স্যার ক্লাস শেষ করে চলে যাচ্ছে কিন্তু তাকে কিছু বলছে না,,,,
সবশেষে ইস্কুল ছুটি হয়ে গেলো কিন্তু কেউ কিছু না বলায় তুবা খুব অবাক হলো,,,তাই সে আকাশের দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হাসলো আর শুকরিয়া আদায় করলো,,কিন্তু,হঠাং অজান্তে তার চোখে পানি আলে আসলো,,,
এর পরদিন যখন তুবা বিদ্যালয়ে গেলো তখন লক্ষ করলো আরো কয়টা মেয়ে পর্দা করে এসেছে,,,,ওরা তুবাকে দেখাতেই এসে জড়িয়ে দরলো আর বল্লো:ধন্যবাদ দোস্ত,, তুই পথ দেখিয়েছিস বলে আজ আমরাও পর্দা করে আসলাম,,,
তুবা তাদের দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হেসে ক্লাসে চলে গেলো,,,,তুবা লক্ষ করলো,,ক্লাসে তার বান্ধুবীদের মধ্যে একজন পর্দা করে আসছে তার নাম তৃণা,,,,,তৃণাকে দেখে তুবা তো মনে হয় কেঁদেই দিবে,,,,
কিন্তু বাকি দুই বান্ধুবী পর্দা করে আসে নী,,,আসলে তাদের থেকে পর্দার আশাও করা যায় না,,,
আসলে একসময় তারাও ছিলো তৃণার মতো প্রিয়ো বান্ধুবী কিন্তু আজ তারা ওয়াদা না রাখার কারণে তুবার সাথে তাদের তেমন সম্পর্ক নেই,,,এই দুই বান্দুবী হলো ইরানী ও ইশপি,,,,,,
ওয়াদা টা ছিলো এই,,তারা কখনো হারাম রিলেশনে জড়াবে না,,,কিন্তু কয়েক বছর তারা ওয়াদা টা রাখলেও পরবর্তিতে আর পাড়লো না,,,
তুবা বান্ধুবীদের প্রচুর ভালোবাসতো,,,তার পরিবারের পর ছিলো তার বান্ধুবীরা তাই সে কখনো চায়তো না তাদের কে হারাতে,,তাই তুবা ওয়াদা করালো যাতে ওরা হারাম রিলেশনে না যায় তুবা জানতো এটা হারাম, পাপের সম্পর্ক তাই সে নিজেও এসব থেকে দূরে থাকতো আর বান্ধুবীরাও এসবে জড়াক ও চায়তো না এটা,,,,,
আর একটা বন্ধুত্বের সম্পর্কে যখন প্রেম নামের পাপ টা আসে তখন বন্ধুত্বের সম্পর্ক আগের মতো থাকে না,,,,তখন বান্ধুবীর ছেয়ে ঐ প্রেমিক বেশি আপন হয়ে যায়,,,বান্দুবীর সাথে কথা বলার সময় না থাকলেও প্রেমিকের সাথে ঠিকই নিয়ম করে কথা বলে,,এসব তুবার খুব মনে লাগতো,,তাই ও এসব পছন্দ করতো না ও চায়তো ওরা চার বন্ধু একসাথে হাসিমঝা করে চলবে ওদের মাঝে যাতে কেউ না আসে,,,,
তুবার যে প্রেমের প্রস্তাব আসতো না এমন না,,,ও অনেক চিঠি/প্রস্তাব পেয়েছে কিন্তু এসব কে কখনো পাত্তা দেয় না..
রিলেশনের আরেকটা ব্যাপার তুবার খুব খারাপ লাগতো তা হলো,হাত ধরা,একসাথে ছবি তোলা,দেখা করা ইত্যাদি এসব অন্যদের জন্য সামান্য ব্যাপার হলেও তুবার জন্য এগুলা অনেক জগন্ন কাজ,,,তার মতে একটা মেয়ের সমস্ত সৌন্দর্য তার জীবন সঙ্গির জন্য,,,তার সমস্ত ভালোবাসা তার জন্য রাখা উচিৎ,,, অনেকে মনে করে তারা তো বিয়ে করবে তো এসব করলে সমস্যা কী,,,,?
কিন্তু যদি বিয়ে না হয়,,আর বিয়ে হলেও কী ইসলামে আছে এভাবে অবৈধ ভাবে ছেলেমেয়ে মিলামিশা করা,,?ওরা কী আল্লাহ কে ভয় পায় না,,,ওরা কী জানে না,,”নিশ্চয় সকল প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে”

আরো পড়ুনঃ  গল্প জীবন সংগ্রামে রুপকথা! কলমে নিশীতা সুলতানা শিল্পী, ২য় পর্ব

তুবার বান্ধুবীদের যখন অনেক বুঝিয়ে কাজ হয়নী তাই সে ওদের সঙ্গ ধীরে ধীরে ত্যাগ করতে লাগলো,,,কেননা সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে,,,

তুবার পরিবার অনেক হাসিখুশি,,তুবার সাথে তার মা বাবার সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্কের মতো,,তাই তারা ভিবিন্ন হাসি ঠাট্টা করে,,,

তুবার এসএসসি পরিক্ষা শেষ তাই সে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গেলো,,,ঐ খানের প্রাকৃতিক দৃশ্য তার খুব ভালো লাগে,,তাই একটু ছুটি পেলেই সে গ্রামে ছলে আসতো,,,,গ্রামে ওর চাচাতো ভাই বোনদের নিয়ে অনেক মঝা করে,,,গ্রামে সবাই একত্রে বসে আড্ডা দেয় তখন তুবার অনেক ভালো লাগে,,,গ্রামে চাঁদের আলো ভরা আকাশ দেখতে অনেক সুন্দর লাগে,,,তুবার সাথে পিচ্ছিদের অনেক সহজে ভাব হয়ে যায়,,,সে গ্রামে যাওয়ার সময়,,, সব সময় পিচ্ছিদের জন্য চকলেট নিয়ে যায়,,,পিচ্ছিদের সাথে কখনো কানামাছি খেলে আবার কখনো অন্ধেপাতিল খেলে,কখনো ঘুড়ি উড়াই,,বাচ্ছারা তাকে আদর করে “পাখি আন্টি” বলে ডাকে,,,,এই নাম টা তুবার অনেক পছন্দের,,,
এভাবে গ্রামে অনেক দিন কেটে গেলো,,,সবাইকে বিদায় দিয়ে চলে আসলো তুবা,,,
এসএসসি রেজাল্ট মোটামুটি অনেক ভালো হয়েছে,,,

নিয়মিত পড়ুন এবং লেখুনঃ- দৈনিক চিরকুটে সাহিত্য 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *