অন্যরকম তুমি, ৮ম পর্ব।

 অন্যরকম তুমি
জান্নাতুল ফেরদৌস তারিন
৮ম পর্ব

আহির চলে গেলো,তুবা আর তৃণা মিলে ক্লাজের এক কোনাই গিয়ে বসলো।
তৃণা: তারপর বল দোস্ত তোর কী খবর,,আমাকে তো ভুলেই গেলি,,,জামাই পেয়ে হিহি
তুবা:দূর কী বলিস তোকা ভুলা যায় নে কী
তৃণা আরে যায় মেডাম ভুলা যায়,,জামাই এর ভালেবাসা পেলে আর কী লাগে বল,,
তুবার এতোদিন তৃণাকে কিছু বলে নী আহিরের বিষয়ে,,আসলে বলার জন্য সুযোগ পায় নী,,কিন্তু তৃণার এত শত প্রশ্ন শুনে তুবা ঠিক করলো আজ তৃণা কে সব বলে দিবে,,কারন সে যেটা মা বাবাকে বলতে পাড়ে না সেটা তৃণাকে ঠিকই বলে,,ওর থেকে কিছু লুকায় না তুবা,,,
তুবা:তুকে কিছু বলার আছে রে,,,
তৃণা :হুমম বল না,,আমি তো অপেক্ষা করছি তোর থেকে কিছু শুনবো বলে,,,
তুবা:আগে তুই কথা দে কাউকে কিছু বলবি না এমন কী আমার মা বাবা কেও না,,,
তৃণা একটু অবাক হলো কী এমন কথা ওর মা বাবাকেও বলা যাবে না
তৃণা:আচ্ছা তুই বল, আমি কাউকে কিছু বলবো না,,,
তুবা:কথা টা আমি তুকে কী করে বলি,,,
তৃণা:তুই এতো ভাবছিস কেনো,,আমাকে কিছু বলতে কী বাবা লাগে,,,
তুবা:নারে,,আসলে আহির আমাকে বউ হিসেবে মানতে পাড়েনী রে,,,
এই কথা শুনে তৃণা তো আকাশ থেকে পড়লো,,কারন তুবার মতো এতো ভালো একটা মেয়ের সাথে এমন কিছু হবে আসলে ভাবা যায় না,,
তৃণা:মানে,,,!!কী বলছিস তুই,,আর এত দিন পর কেনো বলছিস তুই,,আন্টি আংকেল জানে?
তুবা:নারে কেউ কিছু জানে না,,আর আমি কাউকে কিছু বলতে চাচ্ছি না,,
তৃণা:মানে কী,,এভাবে কতদিন চলবে,,আর ওনি তুকে বউ হিসেবে না মানার কারন কী?
তুবা:ওনি নাকী অন্য কাউকে ভালোবাসে,,
তৃণা:কে সে,,আর তাহলে তুলে বিয়ে করলো কেনো,,,
তুবা:জানি না কিছু,,,বাদ দে,,চল ক্লাসে যায়,,,
তৃণা তুবার এই মুখটা যেনো দেখতে পাড়ছে না আর,,যে মেয়েটা এত হাসিখুশি থাকে সবসময় আজ তাকে সবসময় চোখের কোনে পানি নিয়ে থাকতে হয়,,,যে মেয়েটা তার জীবনসঙ্গীর জন্য অন্য কারো সাথে রিলেশনে যায় নী,,আজ তাকে এভাবে কষ্ট পেতে হচ্ছে,,,,না এটা তৃণা আর মেনে নিবে না,,,সে কিছু তো একটা করবে,,সে তার বেস্টফ্রেন্ড এর কষ্ট আর সহ্য করতে পাড়ছে না,,,,

আরো পড়ুনঃ  অন্যরকম তুমি লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস তারিন, দ্বিতীয় পর্ব

 

.
কিছুদিন পর তৃনা কলেজ থেকে বাড়ি যাওয়ার সময় একটা লাইব্রেরিতে উঠলো আর আহিরও কিছু প্রয়োজনীয় বই এর জন্য ঐ খানে গেলো,,,
তৃণা পিছু পিড়তেই দেখে আহির,,,আহির কে দেখে তার তুবার সেই কান্নামাখা মুখের কথা মনে পরে যায়,,আর মেজাজ গরম হয়ে যায়,,সে আহিরের কাছে গিছে
তৃণা:আসসালামু আলাইকুম
আহির:ওয়া আলাইকুমুস সালাম,,
তৃণা:কেমন আছেন?আমাজে ছিনতে পাড়ছেন?
আহির:ভালো আছি,না আপনি কে
তৃবা মনে মনে ভালো তো থাকবেন,অন্যের জীবন নষ্ট করে তো ভালো থাকার কথা আপনেরা বড় লোকের ছেলেরা,,,তৃণা কল্পনা থেকে বাহির হয়ে বল্লো
তৃণা:আমি তুবার ফ্রেন্ড তৃণা
আহির:ওহহ আচ্ছা,,তো ভালো আছেন?
তৃণা:জ্বী আলহামদুলিল্লাহ,, আচ্ছা আপনি কিছু না মন করলে আমরা কী একটু বসে কথা বলতে পাড়ি,,,
আহির:আচ্ছা,সমস্যা নেই চলেন,,
আহির আর তৃণা একটা জায়গায় এসে বসলো
আহির:জ্বী বলুন কী বলবেন?
তৃণা:আপনার সমস্যা টা কী বলেন তো,,আমার বান্দুবীকে আপনার পছন্দ না কেনো?নির্ঘাত ও ভালো মানুষ তাই সব সহ্য করে,,,
আহির:বুঝতে পারছি আপনার বান্ধুবী আপনাকে সব বলেছে,,দেখুন আপনার বান্ধুবী মানুষ হিসেবে সত্যি অনেক ভালো,, ওনার উপর আমার কোন অভিযোগ নেই,,
তৃণা:তাহলে মেনে নিচ্ছেন না কেনো?
আহির:আমি অন্যকাউকে ভালোবাসি,,,
তৃণা:বাহ,,তাহলে বিয়ে করার দরকার কী ছিলো,,,না কী কারো জীবন নষ্ট করতে আপনাদের ভালো লাগে,,,
আহির:আমি সব কথা তুবাকে বলেছি,,ওনার কিছু জানার থাকলে ওনি আমাকে সরাসরি নিজে জিঙ্গেসকি করতে পারতো কিন্তু বুঝতে পাড়ছি না ওনি আপনাকে দিয়ে কেনো জানতে চাচ্ছে,,,
তৃণা:দেখুন আপনি ওর দোষ দিবেন না,,ও আমাকে কিছুই বলেনী,,আমি নিজ থেকে আপনাকে জিঙ্গেস করেছি,,,
আহির তৃণাকে ঐ দিনের কথা টা সব খুলে বল্লো,যে দিন সে ১ম অজানা একটা মেয়ের প্রেমে পড়ছিলো,,,
তৃণা আহিরের কথা শুনে একটু মিলাচ্ছে সব বিষয় টা,,সে হঠাৎ তার মোবাইল থেকে একটা ছবি দেখিয়ে বল্লো দেখুন তো আপনি কী এদের কথা বলছেন?
আহির:হুমমম আমিতো এদের কথায় বলছি কিন্তু আপনি এদের ছবি কই পায়ছেন,,আর এখানের গোলাপি ওড়না পড়া মেয়েটাকেই আমি ভালোবেসে পেলছি,,,
তৃণা হাহা করে হেসে দিলো,, তৃণার হাসি দেখে আহির অবাক হলো এবং বিরক্তির সূরে বল্লো
আহির:আজব তো আপনি হাসছেন কেনো,,,
তৃণা:দাঁড়ান আমি একটু হেসে নী,,,হাহাহা,আপনি কেমন প্রেমিক যে নিজের ভালোবাসার মানুষের এত কাছে থেকেও ছিনতে পাড়েন নী,,
আহির:মানে,,আপনি কার কথা বলছেন,,,
তৃণা:এটা সেই মানুষ,,যে এখন আপনার বউ,,,,আর আপনি ছিনতেই পাড়লেন না,,
আহির:কী বলছেন কী,,
তৃণা:হুমম দেখুন এটা তুবা ওর নেকাব ছাড়া আরো কয়টা ছবি আছে এই বোরখায়,,,
আহির সব ছবি দেখে খুব অবাক হলো আর বল্লো
আহির:আমি না হয় ছিনিনা ই আপনেরা বোরখা পড়া ছিলেন তাই,,কিন্তু আমাকে কেনো ছিনেন নী আপনি আর আপনার বান্ধুবী,, সেদিন তো আমাদের দেখাও হয়েছিলে কথাও হয়েছিলে
তৃণা:আপনি খেয়াল করেন নী,,আপনার সাথে যখন আমরা কথা বলছিলাম তখন আমরা নিছের দিকে তাকানো ছিলাম,,,আপনাকে আমরা কেউ দেখিনী,,
আহির:কিন্তু তুবাকে এখন আমি কী বলবো,ওর সাথে তো অনেক অন্যায় করেছি আমি,ওকে ওর অধিকার দী নাই আমি,,এখন কীভাবে দাঁড়াবো আমি ওর সামনে,,,
তৃণা:সেটা আপনি ভালো জানেন,,,তাড়াতাড়ি গিয়ে আমার বান্ধুবীর মুখে একটু হাসি পুটান,,ও বেচারি অনেক কষ্টে আছে,,,
আহির:হুমম আমি যাচ্ছি,,আল্লাহ হাফেজ,,আর অনেক ধন্যবাদ
তৃণা:আল্লাহ হাফেজ

আরো পড়ুনঃ  গল্প জীবন সংগ্রামে রুপকথা! কলমে নিশীতা সুলতানা শিল্পী, ২য় পর্ব

,আহির বাসায় যাওয়ার সময় কিছু ফুল নিয়ে গেলো,,
বাসায় গিয়ে দেখে তুবা রুমে নেই,
তাসনুবাকে জিঙ্গেস করলে ও বলে বাবি হয়তো বারান্দায় আছে ভালো করে দেখতে,,,
আহির ঐ খানে গিয়ে দেখে তুবা মন খারাপ করে আকাশের দিকে তাকিয়ে বসে আছে,,
আহির:আসবো?
তুবা:আরে আপনি,,জ্বী আসেন,,বলেন কী লাগবে,আমি এনে দিচ্ছি,,চা খাবেন?
আহির:না আসলে তোমার সাথে না মানে আপনার সাথে কিছু কথা ছিলো
তুবা:জ্বী বলেন
আহির: আসলে সরি, আমি অনেক অন্যায় করেছি আপনার সাথে,আমি আসলে বুঝতে পাড়ি নাই,,
তুবা:আপনি কী বলছেন আমিও তো কিছু বুঝতে পাড়ছি না,,আপনার শরীর ঠিকাছে তো?
আহির:আমি একদম ঠিকাছি।

 

নিয়মিত পড়ুন এবং লেখুনঃ- দৈনিক চিরকুটে সাহিত্য 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *