চিন্তাধারা

চিন্তাধারা
আব্দুল্লাহ মাসউদ

আজ ফজর নামাজ শেষে কাক ডাক ভোরে পায়চারি করার উদ্দেশ্যে আমি,মামাতো ভাই ও তিন বন্ধু রওনা দিলাম। সাথে ছিল গা শীতল করা হিলেম হাওয়া। প্রাকৃতির এমন মন জুড়ানো পরিবেশ আমাদের মুগ্ধতার চূড়ায় পৌঁছে দিলো। পথ চলতে চলতে একপর্যায়ে পাহাড়ি পথের কাছাকাছি পৌঁছে গেলাম আমরা। কিছু পথ পাড়ি না দিতেই দূর দৃষ্টিতে কিছু মানুষকে দেখলাম। তারা রাস্তার একপার্শে সমবেত হয়ে আছে। আমরা কালবিলম্ব না করে কৌতূহল ভাঙ্গাতে তাদের নিকটবর্তী হলাম। চোখে পড়ল একজন ব্যক্তি বসে আছেনা। দেখেই মনে হচ্ছে বিষণ্নতায় বিষিয়ে আছে তার মন। চোখে মুখে চিন্তার আভাস। সামনে একটি ছোট গর্ত রয়েছে। তার পাশেই একটি গরুর মরদেহ পড়ে রয়েছে।
লোকেদেরকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম, তার পরিবারের একমাত্র উপার্জন মাধ্যম ছিল এই গরুটি। কে যেন তার গরুকে মেরে ফেলেছে। তাতে আমরাও বেশ শোকাহত হলাম। তারপর সমবেত হওয়া লোকদের থেকে একজন গর্তের দিকে ভালোভাবে তাকিয়ে কিছু নিদর্শন মাধ্যমে বুঝতে পারলো , যে গর্তে সাপ রয়েছে। আরেকজন অগ্রসর হলেন, তিনিও ভাঙ্গা ডিম দেখে সাপের উপস্থিতি বুঝে নিলেন। আরেকজন অগ্রসর হলেন, তিনি সাপের খোলস দেখে সাপের উপস্থিতি বুঝে নিলেন। সবাই সাপের উপস্থিতির ব্যাপারে একমত পোষণ করল। কিন্তু একজন ছিল নাছোড় বান্দা। ‌ সে কিছুতেই সাপের উপস্থিতির ব্যাপারে মানতে রাজি নয়। তাই সে গর্তে হাত ঢুকিয়ে দিল। কিছুক্ষণ না যেতেই সে ছটফটাতে শুরু করলো। আমরা সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়লাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই সে লোকটি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করল।

ঠিক এই লোকটির মত আমাদের বর্তমান অবস্থা। আমরা গুনাহ করছি, কিন্তু এ সম্পর্কে আমাদের কোন জ্ঞান নেই, আমরা যদি জানতাম যে আমরা গুনাহে লিপ্ত রয়েছি, তাহলে আমারা তার থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করতাম। কিন্তু আমরা গুনাহ করে তাকে গুনাহ মনে করি না। যে কারনে আমাদের মধ্যে বিশেষ করে ছড়িয়ে পড়েছে তা হল নব বর্ষ উদযাপন করা। আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি যে, এটা শরীয়ত সম্মত কাজ কি না? আমরা যা যা করি এদিনে শরীয়ত এই ব্যাপারে কতটুকু সম্মতি প্রদান করে? এটা আবিষ্কার করেছে কে? কোথা থেকে এটা এলো? এগুলো কি আমরা কখনো নিজের মনে প্রশ্ন করেছিলাম? আমারা তো প্রশ্ন করা থেকে উদাসীন,এই কারনেই পশ্চিমাদের কৃষ্টিকালচার ছড়িয়ে পরেছে আমাদের পুরো সমাজে। এতে আমাদের সমাজের মেয়েরা ধর্ষিত হয়। আর এই ধর্ষণের কাজে লিপ্ত হচ্ছে, সমাজের যুবকেরাই। আমরা কি চিন্তা করেছি যে আমাদের সন্তানেরা কোথায় যাচ্ছে এযুগে আর কোথায় সারা দিন অতিবাহিত করছে ? আর কি ই-বা করেছে? আজ এই প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার মতো সাধ্যটুকু সমাজ থেকে বিলিন হয়ে গেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *