
জান্নাতি পাখি
খাদিজা খাতুন
ঢাকা শহরের বিশ্রী জ্যাম ঠেলে আর বাসায় যাওয়ার চিন্তা নেই।
জ্যামের ফাঁকে খোলা আকাশে বিমান দেখে আর আফসোস হবে না।
বিকেল হলে মা কে হাজার বার রিকুয়েস্ট করতে হবে না খেলতে যাওয়ার জন্য।
সন্ধে হতে না হতেই মা ভারী গলায় বলবে না হোমওয়ার্ক করার জন্য।
মা তাড়াতাড়ি ঘুমাতে বলবে না সকালে স্কুলে যেতে হবে বলে।
মা প্রতিদিন সকালে আর টেনে ধরে তুলবে না স্কুলে যাওয়ার জন্য।
প্রতিদিনের মতো নিয়ম করে ঠেলতে ঠেলতে ওয়াশ রুমে নিয়ে ফ্রেশ করবে না।
নাস্তা শেষ করতে করতে মা আর টিফিন গুছিয়ে দিবে না।
দ্রুত বের হয়ে জুতা পড়ো আমি বাসা তালা দিচ্ছি, এমন কথা আর বলবে না মা।
যাওয়ার পথে মায়ের কাছে আর বায়না ধরে মজার খাবার খাওয়া হবে না।
স্কুলে পৌঁছে দিয়ে বিদায় বেলায় মায়ের জল জমা চোখ আর দেখতে হবে না।
কারণ,
তোমরা তো চলে গেছো পৃথিবীর এই ঝঞ্ঝাট থেকে অনেক দূরে।
যেখানে ইচ্ছা করলেই সব মজার মজার খাবার খাওয়া যায়।
ইচ্ছা মতো দৌড়াদৌড়ি, নানান রকম খেলায় মেতে থাকা যায় অনন্ত সময়ের জন্য।
যেখানে মায়ের বকা থাকবে না হোমওয়ার্ক করার জন্য।
যেখানকার রাস্তায় জ্যাম থাকবে না, ইচ্ছা হলে বিমানেও উড়তে পারবে।
যেখানে দুপুর পর্যন্ত ঘুমালেও কেউ টেনে ধরে তুলবে না।
যেখানে বিদায় বেলায় মায়ের জল জমা চোখ দেখতে হবে না—কারণ তোমরা চলে গেছো দেখে
মায়ের চোখে জমে থাকা জল গড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে আজীবনের জন্য।