পহরচাঁদা’র সড়ক দুর্ঘটনায় রুপাকে বাঁচানো গেল না

পহরচাঁদা’র সড়ক দুর্ঘটনায় রুপাকে বাঁচানো গেল না

জান্নাতুল তানজিদ মিশকাত।আদর করে সবাই রুপা বলে ডাকে।
১৩/১০/২০২২ ইং রোজ বৃহস্পতিবার, পেকুয়া থেকে পহরচাঁদা নানা বাড়িতে আসার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলেন।
মামাদের একমাত্র বোনের প্রথম মেয়ে, আম্মুর কলিজার প্রথম নাতনী, প্রথম ভাগ্নী,ঘরের প্রথম মেহমান।সবার ইচ্ছা ছিলো হাফেজী বানাবে।তাই পেকুয়া দারুদ তাকুয়া হাফেজী মাদ্রাসা ভর্তি করানো হয়েছিল।

একজন মেধাবী ছাত্রী ছিলেন(৪র্থ শ্রেণী আর হাফেজীতে পড়ে)।রুপার মা মাদ্রাসা গেলে যথেষ্ট সম্মান করতো শিক্ষকরা।প্রায় ১৫ দিন আগে নানা বাড়িতে আসে। A+ পেয়েছে তাই খুশিতে মা নানার বাড়ির সবাইকে নাস্তা বানায় খাওয়াছে।কে জানে দুই সাপ্তাহ পর সেই পৃথিবীতে এভাবে চির বিদায় নিবে।

শক্রবার বন্ধ থাকায় মাদ্রাসা থেকে নানুরবাড়িতে আসবে তাই খুশিতে দুপুরে কিছু খায়নি। খুশিতে তাড়াতাড়ি মাদ্রাসা থেকে নানুর বাড়িতে চলে আসতেছে। কে জেনে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের খাবার তৈরি করে রাখবে। মাদ্রাসা থেকে পহরচাঁদা মাদ্রাসার চত্ত্বরে রুপাকে কে নামিয়ে দেয় সিএনজি ড্রাইভার।তখন দুপুুর ঠিক ৩টা বাজে।গাড়ি যখন আসতেছে না তখন রাস্তা পাড় হওয়ার সময় রন সাইড থেকে দ্রুতগামী সিএনজি এসে রুপাকে ধাক্কা দিলে সামনে পড়ে যায়। আর বুকে উপর চাকার চাপে বুকের ভিতরে ক্ষত-বিক্ষত করে দেয় ,কেউ বুঝলো না বুকের ভিতরের অবস্তা,আর মাথা পেটে যায়।

রুপা নিজে নিজে রাস্তা থেকে উঠে সিএনজি এসে বসে।নিজে নিজের ব্যাগ টা ও নিলো।এমন কি তার বাবার নাম্বার দিলো,নানুর বাড়ি ঠিকানা বলল,আহ ভেঙে পড়লোনা তার মন আর ঈমানের ছিলো শক্তি।যেনো আল্লাহ পক্ষে ফেরাস্তা তার মুখে কথা বলতেছে।তখন দুর্ঘটনার ঠিক সময় আল্লাহ পক্ষে যেনো একটা মানুষরুপি ফেরাস্তা কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান চলে আসে।মেয়র মুজিবুর রহমান ড্রাইভার পাশে রুপার সাথে একজন কে বসতে বলে, কেউ বসলো না,এই হলো মানুষের মানবতা।ধিক্ষার জানাই মানুষকে।কিন্ত কেউ উঠলো না।
পহরচাঁদায় মানুষের মানবতা হারিয়ে গেলো।শেষেই মেয়র মুজিবুর রহমান নিজে রুপাকে বুকে নিয়ে চকরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়।সেখানে মেয়র মুজিবুর রহমানের চেষ্টায় প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।তবে পরীক্ষা করার মত চকরিয়াতে যথেষ্ট  ইনস্টুমেন্ট নাই।তারপর কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।সেখানে পরীক্ষা করে মাথার চেয়ে বুকের আঘাত বিশাল।ফুসফুসের  সাথে রক্তখরন হচ্ছে।বুকের হাড় ভেঙে গেছে ।সেখানে ডাক্তার বলে অপেরশন করার মত অপরেশন এর ডাক্তার ও ইনস্টুমেন্ট না থাকার কারণে চট্রগ্রাম যেতে বলে।তখন রুপা কথা বলছে খুব স্বাভাবিক ভাবে।রুপা কতটা শক্ত ছিলো। শুধু বাড়ি যাওয়ার জন্য ছড়ফড় করতে থাকে ।কিন্তু তখন ডাক্তার  মেয়র আর রুপার বড় মামাকে বলল,বাঁচবে না(গোপনে)।রক্ত শুন্যতার কারণে রক্ত দেওয়া হয়েছে।তবু মেয়র মুজিবুর রহমান চট্রগ্রাম নিয়ে যাওয়ার জন্য  যথেষ্ট সহযোগীতা করলো…।

আরো পড়ুনঃ  ১০ টি প্রস্তুতি বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ২০২৩

তিনি সাথে সাথে এম্বুলেন্স রেডি করে চট্রগ্রাম দিকে রওয়ানা হন।চকরিয়া ক্রস করার আগে রুপা “আল্লাহু” একটা শব্দ বলে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। তখন রুপার বড় মামা জমজম হাসপাতালে নিয়ে চেক করে।ডাক্তার বলে ,সেই একটু আগে পৃথিবী থেকে চির-বিদায় নিলো,”ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন”।

আমরা রুপার আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *