পাহাড়ি ঝর্ণার কবিতা
প্রতিটি মানুষের ব্যক্তিগত কিছু ইচ্ছে থাকে, যেমন কেউ আছে টাকা জামিয়ে পাহাড় করতে চাই। আবার এমনও কেউ আছে হাতে টাকা হলে ঘুরতে যেতে চাই। পাহাড়ি ঝর্ণার কবিতা যেমন সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তেমনি অল্প কয়েক মিনিটে জন্য নিঃস্তব্ধত সেই জায়গা গুলোতে গেলে সবার মন জুড়িয়ে যাবে। পাহাড়ি ঝর্ণার কবিতা গুলো পড়ুন, পড়লে ভালো লাগে আশা করি।
পাহাড়ি ঝর্ণা
ডাঃ তারক মজূমদার
ঝর্ণা তুমি চললে কোথায়
পাহাড়ের কোল বেয়ে
খোঁশ মেজাজে আছো যে
আসুক বিপদ ধেঁয়ে।
তোমার রুপ যৌবন যেন
আমায় কাছে টানে
প্রেমে পড়ি বারবার কত
ঈশ্বর শুধু জানে ।
সুমিষ্ট হাসি ওগো তোমার
কত যে ভালোবাসি
আকণ্ঠ করি পান তোমায়
খুঁশির জোয়ারে ভাসি।
ওগো ঝর্ণা তুমি কেন
চঞ্চল সব সময়
যন্ত্রণা আছে জানি আমি
জীবন দুঃখ ময়।
পাহাড়ি ঝর্ণা
শক্তিপদ পণ্ডিড
পাহাড় থেকে ঝর্ণা ঝরে
খলখলিয়ে নামে,
নদীর দিকে ছুটছে ধেয়ে
বিরামহীন যে থামে।
রাংতামোড়া রুপোলি স্রোত
ঝরছে সুতোর মতো,
পাহাড়তলীর একটা বাড়ি
আমার যদি হতো।
রোজ দুপুরে শীতল জলে
দিতাম গা ভাসিয়ে,
স্নানের পরে ফিরতাম ঘরে
খুশির আবেশ নিয়ে।
পাহাড়ি ঢল বেয়ে নামছে
টপকে পাথর নুড়ি,
ঝর্ণা-পাহাড় কী যে রূপ তার
বর্ষাতে নেই জুড়ি।
কলকাতা, ভারত।
বলে যাও
অমরেশ বিশ্বাস
চললে কোথায় ঝর্ণা তুমি
পাহাড় জুড়ে ছুটে
নিচ্ছ তুমি এই পৃথিবীর
সকল মজা লুটে।
তোমায় জানি ঝর্ণা নামে
তুমি খুবই মিষ্টি
ইচ্ছে করে দেখি তোমার
ওই অপরূপ সৃষ্টি।
তৃষ্ণা মিটে যায় নিমেষে
তোমাকে পান করে
ঝর ঝরিয় ঝরছ দেখে
সবাই দুচোখ ভরে।
ঝর্ণা দাঁড়াও একটুখানি
যাও আমাকে বলে
পাহাড় ছেড়ে তুমি কেন
যাচ্ছ সমতলে?
পাহাড়ের অশ্রু
ডাঃ নূরুল ইসলাম মোল্লা
পাহাড় থেকে ঝর্ণা নেমে
নদীর সাথে মেশে
রূপের বাহার ছড়ায় যে তার
নাচে মিষ্টি হেসে ।
তার রূপেতে মুগ্ধ সবাই
সুখটা যে দেয় আনি
আদর করে স্বার্থ বুঝে
বলে ঝর্ণা রাণী ।
সবুজ হাসে খাল বিল ভাসে
চাষিরা চাষ করে
সহায় পেয়ে প্রাণী জগৎ
তৃপ্তিতে মন ভরে ।
কেউ বোঝেনা পাহাড় কাঁদে
তার যে অশ্রুধারা
মানব সমাজ শান্তি মেখে
হয় যে দিশেহারা ।
অদ্রি কন্যা
সুভাষ চন্দ্র রায়
পাহাড়ের বুক থেকে উঠে
ধেয়ে চলো তেজে,
চলতে চলতে ওঠে তোমার
রজত নূপুর বেজে!
কলকল ঝলমল উচ্ছ্বল অঞ্চল
উড়ে উড়ে চলছে,
ফেলে আসা পথের কথা
প্রাণ খুলে বলছে!
চুপ গিরিখাত ওই ধারাপাত
কানটি পেতে শোনে,
উদাস প্রেমিক আর প্রেমিকা
স্বপ্নেরই জাল বোনে!
ধিন ধিন নেচে নেচে ধেয়ে
ঠিক ঠিক একদিন তবে,
সাগরের ঢেউ তুমি তার কেউ
নিশ্চিত সঙ্গম হবে!
কী অপরূপ বর্ণা
প্রদীপ বিশ্বাস
পাহাড়ের ওই গাত্র বেয়ে
নেমে আসে ঝর্ণা,
চাঁদনী আলোয় ঝিকিমিকি
কী অপরূপ বর্ণা!
থামে না তার চলার গতি
যেন নূপুর ছন্দ,
বন-বীথির নীরবতায়
শুনতে তো নয় মন্দ!
স্বচ্ছ-তোয়া অবয়বে
কভু গৈরিক বর্ণ,
বৃক্ষ হতে পড়ছে ঢলে
আবেশিত পর্ণ।
বন-আবাসিক তৃষ্ণা মিটায়
ঝর্ণা-বারি পানে,
খাদ্য-খাদক আসে ছুটে
ঝর্ণা-উদক টানে।
ঝর্ণা রানী
ক্ষুদিরাম নস্কর
এই যে পাহাড় অমন করে
চুপ যে তুমি থাকো!
তোমার মেয়ে ঝর্ণা রানীর
খোঁজ কি কিছু রাখো?
কার সাথে যায় কত দূরে
কাদের সাথে মেশে?
সারাটা ক্ষণ মন উচাটন
কাটায় দেখি হেসে।
কি বললে ও ছোট এখন!
বয়স টয়েস ভলো,
বলে রাখি থাকতে সময়
চোখটা এবার খোলো।
বইতে দিলেই বয়ে যাবে
ভাসতে দিলেই ভেসে–
বললে হবে চলাই জীবন
পস্তিয়ো না শেষে।
ফুলঝুরি ঝর্ণা
মোঃ শরীফ উদ্দিন
পাহাড় পর্বত লেকে ঝর্ণায়
রূপ ঐশ্বর্যে বাংলা,
ঐশ্বরিক এক মায়াপুরী
বটবৃক্ষে মংলা।
সাত ছুরির ওই চায়ের বাগে
মৌ হাতে ফুল ঝুরি,
হেলেদুলে গুনগুন পাড়ে
তুলে পাতার কুড়ি।
পাহাড় গিরির অরূপ কীর্তি
দৃষ্টি নন্দন ভূমে,
ঝর্ণা ধারার শব্দ সেথায়
ঝিরিঝিরি চুমে।
দোয়েল শ্যামা অরূপ বানর
পাহাড়ের ওই ঢালে,
কোলাহলে রূপ-আঙিনায়
গুনগুন গুঞ্জন ভালে।
শব্দে নাচা মেয়ে
শীতল চট্টোপাধ্যায়
নীরব পাহাড় ঝর্ণা তারই
শব্দে নাচা মেয়ে ,
ঝর্ণা ঝ’রে নদী হয়ে
যায় দূরে গান গেয়ে ।
গভীর ঘন পাহাড়ী বন
ঝর্ণা একা স্বরে ,
জলের নূপুর বাজিয়ে সে
নাচছে বনের ঘরে ।
পাহাড় কঠিন ঝর্ণা তরল
সৃষ্টি অপরূপে ,
ঝর্ণা দেখে বিস্ময়েতে
হারায় কথা চুপে ।
অনেক উঁচু পাহাড় বুকের
গল্প বলা হয়ে ,
দিনের পরে রাত পেরিয়ে
ঝর্ণা চলে কয়ে ।
পাহাড়ী ঝর্ণা
মরিয়াম খাতুন
সবুজ বনের সবুজ মাথায়
দেয় যে উঁকি পাহাড়।
তাহার বুকটা চিরে নামে
মিষ্টি ঝর্ণার বাহার।
কলকলিয়ে আসছে নেমে
স্বচ্ছ জলের ধারা।
নেচে গেয়ে ফুল পাখিরা
হচ্ছে দেখি সারা।
পাহাড়ের ঐ সাদা জলের
মুগ্ধ করা ঝর্ণা।
অপরুপ যে দেখতে লাগে
থেকে রুপা স্বর্ণা।
আপন তালে ঝরায় পাহাড়
সিগ্ধ জলের রাশি।
মেতে উঠে পাখির গানে
রাখাল বাজায় বাঁশি।
ঝর্ণার পাহাড়
রিপন চন্দ্র দাস জীবন
ঝর্ণার পাহাড় পাথারিয়া
বড়লেখা থানা,
দেখতে আসে কত মানুষ
কেউ করেনা মানা।
মাধবকুণ্ড পরীকুন্ড
রামাকুন্ড বলো,
বন্ধডুবা জমজ ঝর্ণা
কাকড়া ছড়ি হলো।
ফুলটানি ও পুছম ঝর্ণা
ফুল বাগিছা ঝর্ণা,
ফুল ঢালোনি ঝেরঝেরি যে
ত্রিপল ঝর্ণার কন্যা!
জামিনী আর রজনী হয়
কুন্ড দুটি বামে,
মৌলভী ও পাইতুম ঝর্ণা
পাথারিয়া ধামে।
ঝর্ণা দিদি
স্বপন মুখোপাধ্যায়
ঝর্ণা দিদি তোমার সঙ্গে
অনেক কথা আছে—
বলবো বলে শুনবো বলে
এই এসেছি কাছে।
ওই সে উঁচু পাহাড় চুড়ো
ওখান থেকে নেমে,
ছুটছো তুমি ছুটছো তুমি
একটুও না থেমে।
ফুল পাখি আর প্রজাপতির
শোভা চারি পাশে,
গঙ্গাফড়িং লাফায় কেমন
সবুজ ঘাসে ঘাসে।
চলাই যে গো জীবন, সেটা
ঠাম্মিদিদুই বলে—
নদীর সাথে কলকলিয়ে
মেশো সাগর জলে।
বীরভূম, পশ্চিমবঙ্গ।
সে এক ঝর্ণা
অজয় বিশ্বাস
পাহাড় থেকে এল নেমে
পাহাড়ি এক ঝর্ণা,
সোনা রোদের ঝিলিক মেখে
হল সোনার বর্ণা।
পাহাড়ি ফুল বলে ডেকে
যাই না আমি পিছে,
ঝর্ণা বলে নেই তো সময়
যাচ্ছি আমি নীচে।
উপল বলে ঝর্ণাকে তাই
অবনত হয়ে,
আমাদেরই ওপর দিয়ে
যাও না তুমি বয়ে।
এভাবেতেই পাহাড়ি সেই
ঝর্ণা এল নেমে,
যত বাধাই আসুক সামনে
যাবে না সে থেমে।
কলকাতা, ভারত।
ঝর্ণা উচ্ছ্বাস
সাজ্জাদ হাসান
ঝরণা ধারার মতো
কতটা উচ্ছ্বাস,
উপচে পড়া জল যতো
রুদ্র প্রশ্বাস।
সেই জল সারা অঙ্গ
পাহাড় নদী অপার,
ভিজিয়ে দাও না সঙ্গ
যত ক্ষেত-খামার।
পবিত্র স্রোতে জল
পবিত্রতা ধরণী,
মুঠোয়ে ভরা স্বপ্ন
পাপ মোচন ঘরণী।
একটু পলকে দৃশ্য
বিধি কাছে মাথা নত,
শ্যামল এই শস্য
অপরূপা পাছে যত।
ঝর্ণা
অরুণ কুমার দাঁ
পাষান ফেটে ঝর্ণা ঝরে
পাষান বুকে হাসি,
শীতল বারি পড়ছে ঝরে
খুশি রাশি রাশি।
সবুজ গাছে দেয় ছিটিয়ে
শীতল বারি ধারা,
ঝর্ণা ছুটে নদীর পানে
যেন পাগল পারা।
জলের ফেনা মেলছে ডানা
বাতাসে যায় ভেসে,
ঝর্ণা শোভা মনোলোভা
পাথর উঠে হেসে।
পাষান বুকে জীবন আছে
ঝর্ণা নামে ডাকি,
এই অপরূপ দৃশ্য দেখে
অবাক হয়ে থাকি।
দুষ্টু মেয়ে
বদ্রীনাথ পাল
পাহাড় থেকে ঝর্ণা যখন
কলকলিয়ে আসে-
ঠিক যেন এক দুষ্টু মেয়ে
খিলখিলিয়ে হাসে।
ছলছলিয়ে যায় এগিয়ে
ঢেউটি যখন তুলে
নাচে যেন সে কোন্ মেয়ে
চারিপাশটি ভুলে।
শান্ত বড়ো ঝর্ণা যখন
আসে সমতলে-
রবির কিরণ চাঁদের আলো
খেলে তারই জলে।
দুই পাড়ে গাছ তাদের শাখে
বসে পাখির মেলা-
ঝর্ণা যেন তাদের সাথেও
খেলে সারাবেলা।
সেই গল্পটা
স্বাগতা ভট্টাচার্য
গল্প শোনো একটা পাহাড়
রঙটা গায়ের কালো।
মনে মনে ঝর্ণাটাকে
বাসলো ভীষণ ভালো।
দিক ভিজিয়ে চুল থেকে নখ
থাক জড়িয়ে বুকে।
থাকবে না তাও মন খারাপে
এবং সুখে দুখে!
পাহাড়টাকে থাকবে ছুঁয়ে
নাচবে ময়ূর যেন।
কয় না কথা পাহাড়টা তাও
চুপটি থাকে কেন?
পাহাড় জানে পাহাড়কে নয়
সাগর ভালো বেসে।
দেবেই ধরা ঝর্ণাটা ঠিক
সাগর বুকে এসে।
মাধবকুণ্ড ঝর্ণাধারা
সাকিব মাহবুব
পাথুরে ওই পাহাড় বেয়ে
ঝর্ণাধারা নেমে,
জলের ধারা দূর চলে যায়
কোথাও যে না থেমে।
মাধবকুণ্ড নামে সবাই
এই ঝর্ণাটি জানে,
হিন্দুধর্মে এই জায়গাকে
পবিত্র স্থান মানে।
সবুজিয়া তরু-লতায়
এই জায়গাটি ঘেরা,
দেশের প্রথম জলপ্রপাত তাই
সবার কাছে সেরা।
ইচ্ছে হলে যাই ছুটে যায়
ওই ঝর্ণাটির পাশে,
অনেক লোকের হয় সমাগম
ঝর্ণা দেখার আশে।
ঝর্ণা রানী
স্বপন কুমার মৃধা
পাহাড় থেকে ঝর্ণা রানী
ঝরছে অঝোর ঝরে,
চোখ জুড়ানো রূপমাধুরী
দেখে মনটা ভরে।
ঝর্ণাধারা স্রোতের গতি
নদীর পথে চলে,
স্রোতে ভাঙ্গা নুড়ি পাথর
দুঃখের কথা বলে।
পাখির কুজন গাছের ডালে
বসছে গিরি চুঁড়ে,
ঝর্ণা রানীর রূপের আলো
দেখছে উড়ে উড়ে।
প্রকৃতির এই রূপের শোভা
স্রষ্টার সৃষ্টি দানে
বইছে ঝর্ণা পাহাড় বুকে
মধুর ছন্দ গানে।
মুম্বাই, ভারত।
ঝর্না মাসি
বিদ্যুৎ মিশ্র
পাহাড় থেকে ঝর্ণা মাসি
যেইনা বয়ে আসে,
খুকু আমার হাততালি দেয়
খিলখিলিয়ে হাসে।
নদীর জলে কাটবে সাঁতার
জিদ ধরেছে খোকা,
ছিপ ফেলেছে মাছের আশায়
নয়তো তেমন বোকা।
পাহাড় থেকে ঝর্ণা যখন
সমতলে পড়ে,
কোথাও যেন বাজছে বাঁশি
শব্দ তেমন করে।
দূরের থেকে পর্যটকের
ভিড় জমে যায় খাসা,
কী অপরূপ দৃশ্য রে ভাই
হারিয়ে যায় ভাষা।
কাশীপুর, পুরুলিয়া।
পাহাড়ি ঝর্ণা
বিশ্বজীৎ ভাস্কর
পাহাড় বেয়ে ঝর্ণা নামে
সাদা পাথরের গায়
সোনালী রোদ পড়লে জলে
রামধনু শোভা পায়।
ঝর্ণা ধারায় সবুজ বাহার
হাজার পাখির ডাকে
ময়ূর নাচে পেখম তুলে
ফল্গু নদীর বাঁকে।
পাহাড় রাতে ঝিঁ ঝিঁ পোকা
জোনাকীদের মেলা
ঝর্ণা যেনো তাদের সাথেও
খেলে সারাবেলা।
শিকারীদের বন্ধ চুরি
লড়বো শক্ত হাতে
পশু পাখি রক্ষা পাবে
ভয় কী আছে তাতে।
জোকা, কলকাতা(ভারত)।
ও পাহাড়ি ঝর্ণা
ওয়াহিদুজ্জামান
ঝরঝরঝর ঝর্ণাধারা
তুই যে পাগলপারা!
তুই ঝিকমিক সোনা রোদে
তুই যে বাঁধনহারা।
ওই যে পাহাড় রূপের বাহার
তোর পরশে হাসে।
তার চূড়োতে মেঘের পাঁজা
হাওয়ার ছোঁয়ায় ভাসে।
তুই যে ছুটিস মনের সুখে
পাহাড়ি ঢাল বেয়ে।
নদীর ডাকে দিস কি সাড়া
চপলমতি মেয়ে?
চারদিকে তোর পাহাড়ি ঘাস
ফুল ও পাখি নানা।
বাংলা মায়ের ফোটায় যে রূপ,
হই দেখে দেওয়ানা।
হে পাহাড়ি ঝর্ণা
দিলীপ আচার্য
অবাক হই যে দেখে তোকে
হে পাহাড়ি ঝর্ণা!
ঝরে যে যাস নিজে থেকে
একটু সবুর কর না।
চলার পথে দেখেছি তোর
সাদা ধোঁয়ার ফেনা,
চারপাশ জুড়ে কুয়াশা মেঘ
দেখেই যায় যে চেনা!
পাহাড়ের গা বেয়ে নামিস
রূপের ডালা নিয়ে,
কোথা থেকে আসিস রে তুই
কোথায় থামিস গিয়ে?
চলার পথে তুলিস ছন্দ
লোকে ছুটে আসে,
প্রিয় যে তুই সবার কাছে
তোর প্রেমে সব ভাসে।।
ঝর্না
সোমনাথ সামন্ত
আঁখি মেলে দেখতে থাকি
সেই পাহাড়ি ঝর্না,
ইচ্ছে করে বলি তাকে
আমায় টেনে ধরনা।
ঝরতে থাকা ঝর্নাধারায়
ভাসতে ইচ্ছে করে,
মনের মাঝে মনপাখিটা
গানটি মেলে ধরে।
গাছের পাতায় টপ টপা টপ
ঝর্নার জল যে ঝরে,
ঝর্না তারই রূপের ছটায়
মনকে খুশি করে।
ঝর্না এলে নদী খুশি
নাচে নদীর প্রাণী,
ঝর্না বলে আমি সবার
মন ভোলাতে জানি।
খুশি আনে
রতন বসাক
পাহাড়ি এক ঝর্ণা আছে
আমার গাঁয়ের পাশে,
সেই ঝর্ণাকে দেখার জন্য
অনেক মানুষ আসে।
তুলোর মতো জলের ধারা
ঝরঝড়িয়ে নামে,
তীব্র বেগের স্রোতের গতি
নদীর বুকে থামে।
আশেপাশের জমির যতো
কাজে আসে চাষে,
ঝর্ণার ওই জল খুশি আনে
তাইতো চাষী হাসে।
মায়ের মতো গাছ ও মানুষ
ঝর্ণা আগলে রাখে,
উপর থেকে নিচের দিকে
সদাই বইতে থাকে।
পাহাড়ি ঝর্ণা
অজিত চৌধুরী
সুন্দর দেখি দৃশ্য তোমার
অভিনব শোভা,
দূরে থেকে দেখি যবে
বড়ই মনোলোভা!
শুভ্র শুভ্র জলরাশি
নিত্য করে খেলা,
মুগ্ধ হয়ে দেখি আমি
শুধু সারা বেলা!
ঝরো ঝরো ঝরে পড়ো
আঁকা বাঁকা রেখা,
অন্তহীন বয়ে চলো
শুধু একা একা !
সুরে সুরে ছন্দে তালে
মাতাও তুমি গানে,
সেই বেলা লাগে দোলা
আমার মনে প্রাণে!
বীরভূম, ভারত।
ঝর্ণা দেখা
ফাতেমা সাইফুল বীনু
অনেক উঁচু পাহাড় থেকে
ঝর্ণা যখন ঝরে,
অদ্ভুত একটা শব্দ এসে
মনযে কেমন করে!
সিলেটে এক ঝর্ণা আছে
এমন পাগল করা,
উঁচু পাহাড় ঝর্ণা নিয়ে
লিখবো নতুন ছড়া।
গাড়ি ছেড়ে হাটছি তখন
ঝর্ণার কাছে যেতে,
হঠাৎ কিসের শব্দ দূরে
শুনি কানটি পেতে।
আছড়ে পরা পানির শব্দ
মনটা কোথায় হারায়,
পাগল সবাই ঝর্ণা দেখে
দু’হাত যেন বাড়ায়।
পাহাড়ি ঝর্না
জীবন সরখেল
কে যে বলে ঝর্না তোমায়?
পারেনা বুঝতে লোক
এ জগতের দুঃখে কষ্টে
অবিরাম ঝরে শোক!
স্নেহ ভালবাসার ধারায়
আমরা করি যে স্নান
রোগ,শোক,জরা,ব্যাধি ভুলে
হতে পারি অম্লান।
নদ নদীর অমৃত উৎস
হে পাহাড়ি ঝর্না
সবুজ শ্যামলিমা ধারায়
করে তোলো বর্ণা।
তরল জোৎস্না ধারা হয়ে
চিরে পাথরের বুক
ক্লান্ত শ্রান্ত প্রাণীর মুখে
ঝরাও অমৃত সুখ।
পাহাড়ি ঝর্ণা
শক্তিশেখর দাস
পাহাড়ি যে ঝরনা ঝরে
শুধু ঝর ঝর করে,
অতি বেগে ছুটে চলে
নদীর রূপ যে ধরে।
আশে পাশে সবুজ বরণ
গাছ-গাছালি কতো,
পাখিরা সব বাসা বাঁধে
তারা নিজের মতো।
তাদের অতি মধুর সুরে
চারিদিকটা ভরা,
তারি মাঝে ঝর্ণাধারার
শোভা উজাড় করা।
পাহাড় থেকে ঝর্ণা নামে
মধুর কলতানে,
সেই সুরেতে মনের মাঝে
সুখের আবেশ আনে।
পাহাড়ি ঝর্ণা
স্বপনকুমার বিজলী
এক অপরূপ পাহাড় আছে
আমার বাড়ির পাশে
সূর্য উঠে পুব আকাশে
তাকে দেখে হাসে।
দিনে রাতে পাহাড় বেয়ে
আসছে ঝর্ণা নেমে
বলছে যেন চলতে থাকো
কেউ যেও না থেমে।
ঝর্ণা দেখে নানা পাখি
সুর করে সব ডাকে
সবুজ রঙের কত যে গাছ
খুশির আবেশ মাখে।
ঝর্ণা এসে মিশে গেছে
একটা নদীর বুকে
গাছ পাখি মাছ তাকে পেয়ে
সবাই আছে সুখে।
কলকাতা ভারত।
নিয়মিত পড়ুন এবং লেখুন চিরকুটে সাহিত্য প্লাটফর্মে অথবা অনুমতি প্লাটফর্মে |