প্রকৃতির অবদান তিরোধান প্রতিকার
আমাতুল্লাহ ফাতেমা
মহিমান্বিত আল্লাহ তায়ালার অপার নেয়ামতে ভরা; কুদরতি হাতে গড়া, অগণিত শিল্প কারুকার্যে মণ্ডিত এই নিখিল ভুবন। প্রত্যেকটি নেয়ামতে চোখ যেন আটকে রয়; শত-সহস্র প্রহরে তা যেন ফেরাবার নয়। আকাশ-বাতাস, চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-তারা, পাহাড়-নদী, ঝর্ণা-ধারা সুজলা-সুফলা প্রকৃতি আশরাফুল মাকলুকাতের জন্য বিনা মুল্যে দান করেছেন করুণাময় আল্লাহ তায়ালা। মানবজাতি সেই প্রকৃতির উপর ভর করে নিয়ামক হিসেবে আন্ঞ্জাম দিচ্ছে নিত্য দিনের প্রয়োজনাদি।প্রকৃতি মন-প্রাণ উজাড় করে দিয়ে যাচ্ছে মানবজাতির শ্বাস-প্রশ্বাস, আহার-নিদ্রা, আনন্দ-বিনোদন। যে দেয় প্রাণ উজাড় করে, তার তো কিছুটা প্রাপ্য থাকে যত্ন পাওয়ার। আমরা মানব জাতি এতটায় অকৃতজ্ঞ যে, প্রকৃতি যত্ন দুরে থাক; প্রকৃতির যতটুকু প্রাপ্ত তা দিতে ও নারাজ।আমরা নিতে পারি হাত ভরে,দেবার বেলায় আমাদের হাত-মন করে প্রচন্ড ব্যথা। প্রকৃতিকে দিতে ব্যথা করায় আজ মানবজাতির নিজের জীবনই যে তীব্র ব্যথার সম্মুখীন, সে দিক থেকে মানবজাতি একদমই উদাসীন। এই যে পরিবেশ দূষণের কারণে জলবায়ু পরিবর্তন, জরাজীর্ণ, ক্ষত-বিক্ষত বায়ুমন্ডলী। মানব প্রস্তুতকৃত প্রকৃতির তান্ডব যখন চলে তখন প্রকৃতির পরিচর্যায় চলে কিছুদিন গবেষণা-মিটিং-মিছিল কর্মসূচি রুপায়ন।বাস্তবায়ন অল্প-স্বল্প। অতঃপর ফাইলবদ্ধ।
অতঃপর শুরু প্রকৃতির প্রতি অযত্ন, অবহেলা।
মানুষ ক্ষুধা পেলে বা ক্ষুধা পাওয়ার পূর্বেই যেমন খাবারের অনুসন্ধানে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে,তেমনি ভাবে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় মানুষ জেনো ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে। এভাবে মানুষের মাঝে প্রকৃতি রক্ষায় গণসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।।এখন যখন পরিবেশের ক্ষুধা পেয়ে বসেছে হাহাকার করছে প্রকৃতি খাবারের তাড়নায়; তখনো প্রকৃতির খাবার নেই; নেই কোন ব্যবস্থাপনা। যে প্রকৃতি তোমায় খাবার দিল, সে পরিবেশ -প্রকৃতি আজ ক্ষুধার্ত। তোমায় রোগ পেলে যাও নিতে চিকিৎসা এদেশ-ওদেশ, পরিবেশের জন্য নিচ্ছ কোন চিকিৎসা। নিচ্ছ তো শুধু গবেষণা-মিটিং; বাস্তবায়নের চোখ মিলছে না।
সরকারি অনেক কর্মসূচি শুধু কর্মচারীদের ফাইল বন্ধি আর কথার বাহাদুরি। কাজের মাঠে ঘুম কাতুরী ।
তারা পরিবেশ খাত থেকে পকেট ভরা টাকা বান্ডিল দেখতে পায় না, সেজন্য তারা সেদিকে চোখ ফিরে চায় না।অথচ প্রকৃতি আমাদের শত-সহস্র মিলিয়ন-বিলিয়ন টাকার সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে বিনা পয়সায় ।পরিবেশ -প্রকৃতিকে ভর করে কৃষি-শিল্প-চিকিৎসা খাত চলা-ফেরা, উঠা-বসা করছে।
তাই বলব একটু পরিবেশ খাত গুলোকে ঢেলে সাজান,কর্মসূচি রুপায়ণ ও বাস্তবায়ণ করুন।তা না হলে পরিবেশ আমাকে-আপনাকে প্রতিবছর দেখাবে বুড়ো আঙ্গুলি।
সরকারি উদ্যোগে পল্লী থেকে শুরু করে শহর-গ্রাম,নগর-বন্দর প্রতিটি ঘরে ঘরে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতার চোখ তৈরি করতে হবে। শুধু বইয়ের পাতায় নয়,প্রতিটি চোখের পাতায় রাখতে হবে পরিবেশ সচেতনতা।
প্রকৃতি তার অপার সম্ভাবনা নিয়ে উপস্হিত মানব দ্বারে।
সুশীল মানব-সভ্যতা-সংস্কৃতি একটি অপরটির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এগুলোর সঙ্গে যখন ‘প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা’ অনুশীলন -অনুধাবন,রুপায়ণ-বাস্তবায়ন কেন্দ্রীভুত হবে তখনই একটি সুস্বাস্হ্যকর সবুজে ভরা,সুন্দর প্রকৃতি অর্থনীতিতে গুরুত্ত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারে ও গড়া সম্ভব।
একটি দেশের সাম্প্রতিক শিশু-কিশোর যখন সবুজ প্রকৃতি-পরিবেশ সম্পর্কে সবকের বীজ অন্তরে বপন করবে,তখন আপনা-আপনি পরবর্তী প্রজন্ম সে গতিতত্ত্ব আয়ত্ত্বে আনবে অনায়াসে।
কাহালু, বগুড়া।