রক্তমাখা প্রতিজ্ঞার পতাকা কলমে আতিয়া মাহজাবিন

রক্তমাখা প্রতিজ্ঞার পতাকা কলমে আতিয়া মাহজাবিন

রক্তমাখা প্রতিজ্ঞার পতাকা
লেখিকা: আতিয়া মাহজাবিন

রক্তে লেখা শপথখানি, গোপন ছিল চোখের জল,
অভ্যুত্থানের একেক ধাপে কেঁপেছে যে অস্থিমল।
গর্জে উঠেছিল কণ্ঠ—নিপীড়নের বন্ধন চিরে,
জেগে উঠেছিল বিপ্লব, প্রতিহিংসার আগুন জ্বলে।

এই যে উড়ে চলে নিশান—স্বাধীনতার অগ্নিকেতন,
তারে বুনেছে সন্তানেরা, আত্মাহুতির দুর্দিনে তন।
প্রতিটি সেলাইতে লুকায় একেকটি লাশের গল্প,
যে গল্পে নেই শান্তি কিংবা নিছক বিদ্রোহী মন স্বল্প।

শাসকেরা রোপেছিল শিকল, অন্ধ রাতে রক্ত ঝরায়,
সত্য বলার অপরাধে মুখ বন্ধ করত জুলুমের ছায়ায়।
জীবনের চেয়েও বড় হয়ে উঠেছিল একটিমাত্র শব্দ—
“আজাদী!”—যা পাথরের মতো ছুঁড়ে মারত আঘাত প্রতিদ্বন্দ।

একেকটি রাস্তা ছিল জুলুমের, একেকটি দেয়াল ছিল শূন্য,
তবু দাঁড়িয়েছে তরুণেরা, ছেঁড়া জামায় আগুন-গন্ধ।
তারা জানত—এই মাতৃভূমি খেলনা নয়, নয় রঙিন সীমানা,
এ যে এক মৃতপ্রায় জননীর বুক—ফুটাতে চায় জীবনের বীজগান।

তাদের হৃদয়ে ছিল আগুন, চোখে ছিল প্রলয় বারুদ,
যেন প্রতিটি চরণের নিচে গড়িয়ে পড়ে প্রতিশোধের বারুদ।
তারা জেগেছিল নীরবে, গুলি ঝরেছিল গলায়,
তবু শেষ নিঃশ্বাসেও মুখে ছিল—
“স্বাধীনতা আসা চাই!”

কে জানে, কত মা নিভৃত কোণে সন্তানের ছবি ছুঁয়ে কাঁদে,
কে জানে, কত প্রভাতে রক্তের রেখা টেনেছে ইতিহাসের রাঁধে!
এই বিজয়, এই নিশান—শুধু কোনো নির্বাচন নয়,
এ এক রক্তাক্ত প্রতিজ্ঞার কাব্য, শহীদ-কণ্ঠে লেখা অদম্য সনদ!

তুমি যখন উড়াও পতাকা—মিছিলে বা মঞ্চে দাঁড়িয়ে,
জেনে রেখো, সে পতাকা লাল, শুধু রঙে নয়—রক্তে রাঙিয়ে।
প্রতিটি ঢেউয়ের ঘূর্ণিতে বাজে—
“আমি এসেছি মৃত্যুর পথে,
তুমি যেন বাঁচো ইজ্জতের আলোয়,
স্বাধীন মাতৃভূমির উষ্ণ হাতে!”

আরো পড়ুনঃ  স্বপ্ন কলমে মারুফা ইসলাম সূর্মী

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *