সায়মা ইসলাম রিয়ান্তী’র সেরা ৩ টি কবিতা

সায়মা ইসলাম রিয়ান্তী নিয়মিত লেখালেখি করে। তার সেরা তিনটি কবিতা পড়ুন…

সায়মা ইসলাম রিয়ান্তী

মৃত্যুর দিনের ফরিয়াদ
সায়মা ইসলাম রিয়ান্তী

দিনের পর দিন যাচ্ছে
বছরের পর বছর যাচ্ছে
বাড়ছে নাকো বয়স, কমছে আমার আয়ু।
আমার মৃত্যুর দিনে যারা আসিবেনা
তারা যেন আমার চল্লিশা খেতে না আসে।
যেই আত্মীয়ের আমাকে শেষ দেখার সময় নেই
সেই আত্মীয় যেন আমার কবরের পাশে না কখনো আসে।
আমাকে যেন রাতের বেলা কবর দেয়া হয়।
যারা আমায় সত্যিই ভালোবাসো তারা,
আমার মৃত্যুর পর মোনাজাতে দোয়া রেখো।
আমার অসুস্থের দিনে আমাকে যেই নাতি- নাতনিরা
দেখতে না আসে,
আমার মৃত্যুর দিনেও তারা যদি থাকে
অফিস, চাকরি, ব্যস্ততা নিয়ে।
তারা যেন কখনো আমার কবরের পাসে না আসে।
তারা যেন আমার চল্লিশা খেতে না আসে।
আমার মৃত্যুর পরে কে রাখবে আমায় মনে।
বাবা-মা, বন্ধুবান্ধব, ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনি,আত্মীয়-স্বজন
সবাই যাবে ভুলে।
সবই চলবে, সবই থাকবে,
থাকবো নাকো আমি।

 

সায়মা ইসলাম রিয়ান্তী

বড় নিয়ামত 
সায়মা ইসলাম রিয়ান্তী

নিজের ইচ্ছ- অনিচ্ছাকে যে প্রাধান্য দেয় না
সে হলো পরিবারের বড় মেয়ে।
তাদের ধৈর্য শক্তি ও সহ্য শক্তি
অন্যদের থেকে একটু বেশিই হয়।
সচ্ছলতাহীন পরিবারে দেখা যায়,
অন্য সন্তানদের তুলনায় বড় মেয়েরাই ঢাল হয়ে দাঁড়ায়।
পরিবারের একমাত্র , মেজো,সেজো, ছোটো মেয়ে
যাই হোক তারা পরিবারের বড় মেয়ের মতো ব্যক্তিত্বসম্পন্ন নয়।
হাজার কষ্টকে চাপা রেখেও
তারা এক কপোল হাসতে পারে।
পরিবারের বড় মেয়ে মানেই আত্মসুখকে বিসর্জন দিয়ে,
পরিবারের সুখের জন্য লড়াই করা।
তারা হলো ছায়াময়ী মানবী,অনাড়ম্বরপূর্ণ, মানবিকতাসম্পন্ন।
পরিবারের বড় মেয়েরা তাদের পরিজনদের সুখের জন্য নিজের সুখকে বিসর্জন দিতে সর্বদা প্রস্তুত।
তারা প্রিয়জনদের সুখের জন্য,
আপন কষ্টকে ধামাচাপা দিতে প্রস্তুত।
সব বড় মেয়েরা যে আত্মত্যাগকারী সেটাও কিন্তু নহে।
কিছু কিছু বড় মেয়েরা তাদের অন্তর্গত এর
অপ্রকাশ্য কথা কখনোই প্রকাশ্য করে না।
বড় মেয়ে মানেই আল্লাহ তালার শ্রেষ্ঠ নিয়ামত।

আরো পড়ুনঃ  ছয় ঋতু ছয় রঙ কলমে বখতিয়ার উদ্দিন

 

সায়মা ইসলাম রিয়ান্তী

ভালোবাসি কি!
সায়মা ইসলাম রিয়ান্তী

ভালোবাসি!ভালোবাসি!ভালোবাসি
আমি আমার বাংলাকে ভালোবাসি।
ভালোবাসি বললেই ভালোবাসা হয়ে যায় না।
আমি আমার বাংলাকে ভালোবাসি
এই মিথ্যে কথাটি সবাই বলি।
কিন্তু ক’জন ই বা ১৯৭১ সালের বীরদের মতো জীবন দিতে প্রস্তুত?
বাংলাকে ভালোবাসা মানে বাংলার মানুষের জন্য চিন্তা কিরা,বাঙালির
সুখে-দুঃখে পাশে থাকা,সবার বিপদে এগিয়ে আসা।একে অপরের পাশে থাকা।
বাংলাকে ভালোবাসা মানে ত্যাগ করা,নিজেকে ভালো কাজে উৎসর্গ করা।
একেই বলে ভালোবাসা।
সর্বোপরি আমি শ্রোদ্ধা জানাই তাদের যারা নিজের জীবন ত্যাগ করে দিয়েছেন আমাদের স্বাধীনতা।

 

 

কবি পরিচিতিঃ সায়মা ইসলাম রিয়ান্তী। ২০০৭ সালে ১৩ ই অক্টোবার বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার বলইকাঠী গ্রামে জন্ম।পিতা শহিদুল ইসলাম এবং মাতা সালমা ইসলাম। প্রাথমিক শিক্ষা মকিমাবাদ নজিমুন্নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। মাধ্যমিক শিক্ষা আমিনা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে।এসএসসি তে জিপি এ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।ছোটবেলা থেকে শিক্ষকতা প্রফেশনটা খুব পছন্দের।তার পাশাপাশি নতুন কিছু তৈরি করার আগ্রহ অনেক বেশি। লেখালেখি করতে খুবই পছন্দ করি। আমার লেখাগুলো সাধারণত বাস্তবতাবাদী ও প্রতিবাদ মুখী।মাধ্যমিক থেকে লেখালেখি শুরু করে দেই। বর্তমানে অমৃত লাল দে মহাবিদ্যালয় কলেজে অধ্যায়নরত ও তার পাশাপাশি অনলাইনে শিক্ষকতা করি। ভবিষ্যতের লক্ষ্য ডাক্তার হওয়া মানুষজনের জন্য অন্যরকম কিছু করা।আমার লেখালেখি তে সাধারণত সত্যি ও বাস্তবতা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। আল্লাহর ভরসায় জীবনের সামনের পথচলা আরো সুন্দর ভাবে এগিয়ে যেতে চাই।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *