হঠাৎ বৃষ্টির কবিতা গুলো পড়তে কেমন জানি লাগবে, কি থেকে কি হয়ে যায়। হঠাৎ রৌদ্রময় শহরে মেঘলা আবহাওয়া যে এমন পরিবর্তন হবে কে জানতো…নিচের হঠাৎ বৃষ্টির কবিতার কবিতা গুলো আপনাকে অনেক অনূভুতি সারা জাগাবে।
বৃষ্টির পানি
শেখ মুহাম্মদ আহসানুল্লাহ
মহান রবের নির্দেশ মেনে
বর্ষিত হয় বৃষ্টি,
আসমানের ওই বারি ধারা
অপরূপ এক সৃষ্টি।
শুকনো জমিন সিক্ত করে
ফসল ফলে ভালো,
সকল সৃষ্টি প্রাণ ফিরে পায়
গাছপালা পায় আলো।
বৃষ্টির পানি বেশ নিরাপদ
পান করিবে সবে,
শুদ্ধ পানির অভাব মিটায়
সব মানুষের ভবে।
প্রচণ্ড এই গরম দিনে
একটু বৃষ্টি হলে,
দেহ মনে প্রশান্তি দেয়
শান্তি আসে চলে।
সৃষ্টিকর্তা বৃষ্টি দিয়ে
সতেজ রাখেন ভূমি,
আল্লাহ পাকের কুদরতি পা
তাই তো সবে চুমি।
বৃষ্টি পড়ে
শ্যামল বণিক অঞ্জন
বৃষ্টি পড়ে শহর জুড়ে
গ্রাম জনপদ কাছে দূরে ,
বৃষ্টি পড়ে গাছের শাখায়
সিক্ত পাখির রঙিন পাখায় !
বৃষ্টি পড়ে নদী মাঠে
খাল বিল আর পথে ঘাটে,
বৃষ্টি পড়ে টিনের চালে
দিগন্ত বন ক্ষেতের আলে ।
বৃষ্টি পড়ে আষাঢ় মাসে
বাণ ডেকে এই বাংলা ভাসে,
বৃষ্টি পড়ে শ্রাবণ ধারায়
মুগ্ধতার রেশ মাত্রা ছাড়ায় !
শ্যামল বণিক অঞ্জন
নকলা মধ্য বাজার
জেলা- শেরপুর
বৃষ্টি
খ ম জাহাঙ্গির হোসাইন,
বৃষ্টি বেঁজা আষাঢ়ের সন্ধা,
সুবাস ছড়াল গোলাপ কামিনী রজনী গন্ধায়!
টাপুস টুপুস বৃষ্টি ঝরন,
দখিনা বাতায়নে করিবে বরন!
বৃষ্টি ঝরায় মরুর ধরায়,
উঠিল কাঁদিয়া রোদ্দূর খরায়!
গাছের পাতায় ধানের ক্ষেতে,
আপনা আপনি উঠিবে মেতে!
মাঠের রাখাল টোপর মাথায়,
ভিঁজিয়া বৃষ্টিতে নিজো গীত গায়!
বৃষ্টি ঝরার শব্দ শুনে,
ব্যাঙ ডাকিল ঘরের কোনে!
বৃষ্টিতে মাতিয়া শিয়াল মশায়,
বুদ্ধি পাকায় মোরগের আশায়!
আকাশ ভাঙা বৃষ্টি ঝরায়,
বাড়ির উঠোনে গিয়াছে ভাসায়!
হঠাৎ বৃষ্টির কবিতা
কবির হোসাইন
ঘনকালো গগনে বিদ্যুৎ চমক
বজ্রপাতের শব্দ যেন দিচ্ছে দমক,
ঈশান কোণে সেজেছে ঘনঘটা মেঘ
অঝোর ধারায় প্রবাহিত বৃষ্টির বেগ।
স্রোত যেন নিয়ে যায় কৃষকের ধান
দেহ ছেড়ে যায় যেন কৃষকের প্রাণ,
কৃষকের গোলা ভরা ছিলো যে ধান
সবকিছু নিয়ে যায় বৈশাখী ভান।
আশায় আশায় ছিলাম
আনন্দ বক্সী
রিমঝিম রিমঝিম বৃষ্টি এসে বললো মাটির কানে
ভেজাবোই রে আজকে তোকে
দেখি না কে আমায় রোখে
সতেজতা আসবো নিয়ে তোর ওই শুষ্কপ্রাণে।
মাটি বলে রবির তাপে পুড়ছি দু’মাস ধরে
ভারি দুষ্টু গ্রীষ্ম বেটা
শরীর পুরো ফুটিফাটা
কালবৈশাখীর দু-এক ফোঁটা ছুঁয়েই গ্যাছে মরে।
স্বস্তি পেলাম আজকে ভারি তোর সে ছোঁয়া পেয়ে
আশায় আশায় ছিলাম আমি
কখন রে তুই আসবি নামি
আমার বুকে পড়বি ঝরে অবিশ্রান্ত হয়ে।
আনন্দ আজ বাঁধনহারা সকল চাষির ঘরে
বসেছিল তোর আশাতে
খুব খুশি তাই তুই আসাতে
উঠবে মেতে কৃষিকাজে আমার বুকের ‘পরে।
সজীব হয় যে রুক্ষ সকল তুই এ ধরায় এলে
নাচুক ময়ূর পেখম তুলে
ইলিশ মাছে বেড়াক খুলে
বুঝেসুঝে ঝরিস খানিক দিস না বন্যা ঢেলে।
জয়নগর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা,পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
বৃষ্টি পড়ে-২
মুহাম্মদ আলম জাহাঙ্গীর
শেরপুর, বগুড়া
হঠাৎ করে মেঘ করেছে
খোলা আকাশ জুড়ে।
দমকা হাওয়ায় বিষ্টি পড়ে
সারাটা দিন ভরে।
বিষ্টি পড়ে গাছের ডালে
পুকুর নদী খালে।
বিষ্টি পড়ে শহর গায়ে
দুখীর ভাঙা চালে।
বিষ্টির পানি পড়লে ধরায়
উর্বর হয় এ মাটি।
ফুল ফসলে ভরে তোলে
করে পরিপাটি।
বৃষ্টিতে ভাসা রূপসী বাংলা
ডাঃ রামপদ মণ্ডল
কালবৈশাখীর ভৈরবী নৃত্যের ঝঞ্ঝা স্তব্ধ হলো,
ভীত সন্ত্রস্ত রাতে স্নিগ্ধ শীতল বাতাস এলো।
তপ্ত গ্রীষ্ম গেল পাটে
আকাশ ভরা মেঘের হাটে
বৃষ্টি নেমে মাঠে মাঠে ফুটল চাষের আলো।
চাষীর ছেলে সারা দিনটা খাটছে মাঠে মাঠে,
করছে নানান ফসল চাষ ভোর থেকে উঠে।
ঘামে শরীর ভিজে যায়
বৃষ্টি ঝরে তাদের গায়
গায়ের বসন গায়ে শুকায় তপ্ত রোদে খাটে।
আকাশ ভরা বৃষ্টি ধারা ঝরে অবিরত,
পুকুর খাল ভরিয়ে দিল মাঠ ছিল যত।
ধানের ফসল ডুবে গেল
আকাশ ভাঙা বন্যা হল
মাটির বাড়ি যত ছিল ভাঙাল তাহা কত।
ধানের ক্ষেতে নৌকা বেয়ে ধরছে মাছ জেলে,
যশুরে কই শোল মাগুর খেলছে মাঠের জলে।
রাস্তার পাশে কুঁড়ে বেঁধে
অর্ধাহারে খাচ্ছে রেঁধে
জীবন কাটে কেঁদে কেঁদে অধিক বৃষ্টি হলে ।
অপেক্ষিত বৃষ্টি
এনামুল ইসলাম
মেঘ নাই, পানি নাই,
কাঠ-ফাটা রৌদ্দুর,
ভুমী ফেটে চৌচির
বুক করে দুর দুর।
বোশেখ যাচ্ছে চলিয়া
কাল-বোশেখ বিনে,
কৃষাণ মাঠের ফসল বাচাঁয়
ডিজেল কেরোসিন কিনে।
কত ডাকি মেঘ কুমারী
আসোনা মোদের গাওয়ে,
তুমি বিনে শুষ্ক মোরা
মাঝি নাই ঘাটের নাওয়ে।
অবশেষে মেঘ কুমারী
ঝরলো এক পশলা,
প্রাণ পেলো ধান, গম
ভুট্টা আর মশলা।
কৃষাণ-মুখে ফোটলো হাসি
পাইয়া তৃষ্ণার বারি,
চাতক পাখি উঠলো হেসে
দিল পেখম ছাড়ি।