আমায় ছেড়ে যেওনা হেমান্তি
কলমেঃ রত্না হোড়
হেমান্তি,আমার বহু হিসাব-নিকাশ বাকি আছে,
আমায় ছেড়ে যাবার তোমার,এত কি তাড়া আছে?
বুঝলে তুমি,যাবেনা কোথাও,আমায় ছেড়ে।
কত দুঃখ আমায় দেবে? এভাবে একা করে তুমি চলে যাবে? আমায় দুঃখী দেখে তুমি বুঝি ভীষণ সুখে থাকবে? বলছি তো, বাসায় এবার দ্রুত ফিরব। তোমার সমস্ত কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলব। তবুও আমায় রেখে চলে যেওনা। ওই জটিল ক্যান্সার কে ছুড়েঁ ফেলে দাও। ক্যান্সার কে বলে দাও, আমার সাথে তোমার বহু পথ চলা বাকি। হেমান্তি তোমার শ্বাস-প্রশ্বাস থেমে গেলে, আমি যে আর স্বাভাবিক ভাবে সুস্থ হয়ে থাকতে পারব না। এমন কঠিন দিন দেখতে হবে, ভাবতেও পারিনি। আমায় রেখে যেওনা। ওহ্ হেমান্তি,আমার সাথে যাবে এখুনি বাড়ি। বলছি তো আর আমি করব না বাড়াবাড়ি। যা বলবে, সব পালন করব।
ডাক্তার বলে গেছে, মাত্র মিনিট কয়েক পর তুমি না ফেরার দেশে চলে যাবে। সব রকম চিকিৎসা করেও তুমি ফিরবেনা। বলো না হেমান্তি, এই পরিস্থিতিতে আমি কি করব? তুমি সুস্থ হয়ে যাও। তোমার যে কাঠগোলাপ গাছে ফুল ফোটা দেখা বাকি। তোমার কোলে ছোট্ট শিশু আসবার কথা ছিল। ভুলে গেছো? তোমার যে সুমুদ্রে যাওয়া বাকি। আমি! আমি! বলেছি তো, এবার থেকে টাকা জমিয়ে রেখে দেবো। আমার তোমার এক সাথে চাঁদ দেখা বাকি। বলছি তো, এবার থেকে সময় বের করব। পূর্ণিমার রাতে তোমার সাথে গল্প করব। তোমার যে, লাল জবা পছন্দ, আমার তা এনে দোওয়া এখনো বাকি। সত্যি বলছি, আমি আর কখনো তোমায় উপহাস করব না। সাধারণ জবা পছন্দ, এমন আর বলব না।
আমাদের যে “সন্ধ্যাতারা” নামে বাড়ি হবার কথা ছিল, দ্রুত কাজ শেষ করব। কথা দিলাম।
আমি আর সিগারেট কিনব না। টাকা নষ্ট করব না। আমি সকাল সকাল উঠে, তোমার সাথে ফুল তুলতে সাহায্য করব, চলে যেওনা হেমান্তি। আমি যে জ্বলে-পুড়ে শেষ হয়ে যাবো। তুমি ছাড়া আমার ঠিক চলবেনা। আমার সমস্ত নিশ্বাস থেমে যাবে। ভীষণ ভালোবাসি তোমায়। আজ অনুভব করছি,শুনতে পাচ্ছো? হেমান্তি, চোখ খুলে দেখো, আমার অশ্রু, মিথ্যা নয়। এই অবেলায় আমায় ছেড়ে যেওনা। স্ত্রী বিয়োগ আমি সহ্য করতে পারব না। আর তোমায় কোন বিষয়ে কথা শুনিয়ে দু-চারটে কথা কাটাকাটি করব না। আমি পাগল, তুমি নাহয় আমায় দশ কথা শুনিয়ে দিও।আমি সব সহ্য করব
তবুও আমায় ছেড়ে যেওনা।
হেমান্তি, শুনতে পাচ্ছো তো,হেমান্তি,হেমান্তি!!!!
ওহ্বেশ বুঝতে পারছি,তোমার হাত ঠান্ডা হয়ে গেছে। তার মানে তুমি চলে গেলে? রাখলেনা আমার কথা! হেমান্তি আমার কি হবে? হেমান্তি বলো? আমার ভালোবাসা বুঝি কম ছিল? যে ক্যান্সার কে খুব আপন করে নিলে? একদম সুমুদ্রে ভাসিয়ে দিয়ে চলে গেলে?
এত অনুরোধ করেও রাখতে পারলাম না। তুমি কি অনুভব করতে পারোনি? শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত আমি তোমার
হাত ধরে ছিলাম। সারাজীবন একসাথে থাকতে চেয়েছিলাম৷ কিন্তু তুমি সব রেখে সেই ক্যান্সারের কাছেই চলে গেলে। এখন আমার কি হবে?
হেমান্তি,,,,,,,,,,,,, হেমান্তি,,,,,,,,,,,,,,হেমান্তি,,,,,,,,,,,,,,।।
কবি পরিচিতিঃ- লেখিকা পরিচিতঃ নাম রত্না হোড়, জেলাঃ ফরিদপুর, পিতাঃ সুভাষ হোড়। মাতাঃ কল্পনা হোড়।
তিনি ফরিদপুর সটকারি রাজেন্দ্র কলেজে
অণার্স “সমাজ বিজ্ঞান” ডিপার্টমেন্টে অধ্যায়নরত।
তার যৌথ কাব্য সংখ্যা ৯
সর্বপ্রথম সপ্তর্ষি পত্রিকায় তার লেখা প্রকাশিত হয়।
তার প্রিয় ফুল কৃষ্ণচূড়া।
তিনি গান করতেও পছন্দ করেন। তিনি কবিতা,গল্প,
নাটক, উপন্যাস, উক্তি, প্রবন্ধ সহ বহু বিষয়ে লেখালিখি রয়েছে।
বহু বাধা বিপত্তি কাটিয়ে তিনি প্রতিভার দিকে এগিয়ে যান।
দারুন লাগলো
শুভ কামনা