শালিক পাখি
নাঈম ইসলাম বাঙালি
পণ্ডিত বাবু খুবই মস্ত বড় জমিদার। তার বাড়ির পাশে আছে অনেক লম্বা একটি তালগাছ। কবিগুরু
রবীন্দ্রনাথ তার কবিতায় বলেছিলেন_______
❝তাল গাছ একপায়ে দাঁড়িয়ে
সব গাছ ছাড়িয়ে
উঁকি মারে আকাশে ❞
তালগাছ সাধারণত লম্বায় হয় এটার বৈশিষ্টই লম্বা হয়ে বেড়ে উঠা। তো পন্ডিত বাবুর বাড়ির পাশে যে তালগাছটি ছিল সেখানে ছিল একটি শালিক পাখির বাসা। সেই বাসাটি পন্ডিত বাবুর চোখে পড়ে তখন সে বাসা থেকে পাখির দুটি ছানা নিয়ে আসলো এবং এগুলো পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাখিগুলো বাচ্চাদেরকে ছাড়া এখন নিঃস্ব। পন্ডিত বাবু ছানাকে খুব যত্ন করে লালন পালন করতে শুরু করলো। এ দুটি বাচ্চা ছিল তার খুবই সখের। এই বাচ্চাগুলো পেয়ে সে অনেক আনন্দ ও আপ্লুত।কিন্তু অপরদিকে বাচ্চা হারা হয়ে শোকের মাতাপে বনে বনে পাগল হয়ে ঘুরছে সেই পাখি। বাচ্চা এখন অনেক বড় হয়েছে শালিক পাখির বাচ্চা দুটা এখন কথা বলে পন্ডিত বাবুর সাথে সাথে, তাকে পোষ মেনেছে। বাচ্চাদের প্রতি ছিল তার আলাদা অন্যরকম এক ভালোবাসা। কোনো সময় এই পালিত পাখিগুলো যদি তার হাতের খাবার না খায় তাহলে সেও আর এদিন কোনো কিছু খায়নি। অনেক গভীর ভালোবাসা পাখির প্রতি, তাে সে নিজ হাতে সবসময় পাখির খাবার থেকে শুরু করে সকল ধরণের দেখ শোন ও যত্ন করে। পাখি সুখে থাকা মানে তারই সুখ। এভাবে পণ্ডিত বাবু পাখির বাচ্চাদের সাথে খুব আনন্দেই দিনগুলো পাড় করছে। হঠাৎ একদিন এই পাখিগুলোর রোগ হলো তাই পন্ডিত বাবুর মনটি ছিল খুব খারাপ, শোকে কাতর হয়েগেছে সে। তারপর পাখি দুটিকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে ভালো চিকিৎসা করান তিনি। কিন্তু তার পরেও সুস্থ হয়ে উঠেনি। তাই মানসিকভাবে কিছুই দুশ্চিন্তাগ্রস্থ। কিছুক্ষণ পর যখন তিনি পাখিগুলোকে কাঁচা থেকে বেড় করলেন তখন পাখিগুলো বিষ্মিত করেছে তাকে। বাহির করার সাথে সাথেই বনে উড়াল দিল পাখি দুটি। তখন তিনি বুঝতে পারছিলেন পাখিদের অসুস্থতা ছিল পন্ডিত বাবুর জন্য একটি ফাঁদ। বনের পাখি যত সুখেই থাকুক তা কি আর কাঁচার মধ্যে মানাই। এভাবে স্বাধীন হয়ে মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে পাখি দুটি। কিন্তু পন্ডিত বাবু কিছুতেই মানতে পারছে না এমন হবে সেটা কখনো প্রত্যাশাও করেননি তিনি। তারপরেও পাখির খুঁজে বেড় হয়ে যান, বনে বনে ঘুরছে তবুও পাখির সন্ধান কিছুতেই মেলেনি তার। মুক্ত পাখি কি আর ধরা দিবে কোনো সময় তবুও মনের সান্ত্বনা খুঁজে বেড়াচ্ছেন তিনি। এভাবে বনে বনে পাগল হয়ে ঘুরছে পন্ডিত বাবু। অবশেষে তারও কোনো সন্ধ্যান মেলেনি, নিজ বাড়িতে আর ফেরা হলো না পন্ডিত বাবুর।
আরো পড়ুনঃ নাঈম ইসলাম বাঙালি’র সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ও জীবনী |