একটি টাওয়ার ও আমরা
কলমে রিয়াজুল করিম সোহান
” হ্যালো, কই তুই? “, এমন একটি জিজ্ঞেসার মাধ্যমে কথোপকথন শুরু। বা মেসেঞ্জার গ্রুপ এর একটি ক্ষুদ্র নোটিফিকেশন আমাদের বুঝার জন্য যথেষ্ট, চিরচেনা গন্তব্যে যেতে হবে। আমাদের পূর্বসরীদের মতোই আমরাও ঐ জায়গাটাকে বেছে নিয়েছিলাম।কীসের মশার কামড়, কীসের রোদ, বৃষ্টি, শীত। সব সময় আমাদের গন্তব্য একটাই। সারাদিন এর স্কুল শেষ করে যখন গোধূলি লগ্নের দিকে ঐখানে একটুখানি বসতাম, সবাই সবার সারাদিনের ক্লান্তি ভুলে দুঃখ, কষ্ট, হাসি- তামাশা ভাগ করে নিতাম। তখন আমরা কোন আলাদা আলদা সত্ত্বা না, একই দেহে যেনো একই সত্ত্বা।
মনে পড়ে সেই দিনের কথা, যখন অসহ্য গরমে ঐখানের পুব আকাশের চাঁদের আলো ঠিকই আমাদের সঙ্গী হতো। চারিদিকে কী ভীষণ কুয়াশা!!! হাড়হিম করা শীত।ভালো করে খেয়াল করলে দেখা যাবে কারা যেনো আবছায়ার মতো দেখতে। আর শীতের রাতে কুয়াশার চাদর ভেঙে, যখন চাঁদ মামাকে দেখা যেতো,……. এই অনুভূতিগুলো ভাষায় বর্ণনা করার মতো নাহ। শুধু আমরা যারা ছিলাম তারাই এই লেখাগুলো পড়ে চোখ বন্ধ করলেই উপলব্ধি করতে পারব..
আর যার সাথে আমাদের সবচেয়ে বেশি বন্ধুত্ব সেই টাওয়ার হয়তো নতুন সঙ্গী খুঁজে নিয়েছে। শেষবারের মতো যখন সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বলললাম ” চলিরে দোস্ত “। সেদিন বরাবরের মতোই নির্বাক দাঁড়িয়ে ছিলো। হয়তো মনে মনে বলেছিলো ” যেও নাহ, আমি একা হয়ে যাব। আমি তো তোমাদের গল্প শুনার সুন্দর একটা শ্রোতা। কোন প্রশ্ন ছাড়াই বছরের পর বছর গল্প শুনে যাচ্ছি। তবুও তোমরা আমাকে ছেড়ে চলে যাও “
আর হয়তো ধুলাবালি ঝেরে বসা হবে নাহ তার পদতলে। শীতের দিনের ছায়াগুলো নাহ ঐখানেই শেষ, গরমের দিনে আজও চাঁদ উঠে আর বলে ” ছেলেগুলো গেলো কই? “। টাওয়ার কে বলব ” ভালো থেকো তুমি। তোমার নতুন সঙ্গী খুঁজে নিও। মাঝে মাঝে আমরা এসে আমাদের স্মৃতিগুলোতে যে ধুলাবালি জমা থাকবে, সেগুলো পরিষ্কার করতে হয়তো তোমার পদতলেই একদিন বসে পড়ব। আবার পরিষ্কার করা স্মৃতি মনের কুঠুরিতে রেখে দিব৷ কিন্তু সেদিও তুমি সাক্ষী থাকবে রাগ, ভালোবাসা, মান অভিমান আর বন্ধত্বের……………..”