চিত্তবিনোদনের এ কাল সেকাল; আলিফ লায়লা
~°বর্তমান সময়ে প্রায় নাটক সিনেমা ও মিউজিকের এক করুন অবস্থা। ঘন্টায় ঘন্টায় লক্ষ কোটি ভিউ হলেও পরবর্তীতে এসব কাজ হারিয়ে যাচ্ছে। বছর খানেক পর মানুষ এগুলো খোঁজে না। মানুষের প্রেম ভালোবাসা স্মৃতি সংস্কৃতিতে এগুলো কোন অস্তিত্ব তৈরি করতে সক্ষম হয় না। সস্তা নায়ক গায়ক আর অভিনেতাদের দিয়ে বিকৃত চিন্তার প্রডিউসার এবং সিনেমা নির্মাতারা অখাদ্য কু- খাদ্য নির্মান করে যাচ্ছে। ভিউ বিজনেস ভালো হলে ও এসব নাটক সিনেমা ও গানের আয়ুকাল খুব-ই কম। এই কাজ গুলোর ফলে যেমন সামাজিক অবক্ষয় সৃষ্টি হচ্ছে, তেমনি কিশোর যুবকরা সুস্থ বিনোদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে । ফলে তরুণদের কথাবার্তা ও চিন্তা ভাবনা উদ্ভট হয়ে যাচ্ছে । ( যেমন:ব্যাচেলর পয়েন্ট)
~°স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে যে সকল সিনেমা ইতিহাস তৈরী করেছে। সে সময়ের কিছু গান,সিনেমা মানুষের আত্মায় স্পর্শ করেছে। সে সব কাজ গুলো অর্ধশত থেকে যুগের পর যুগ মানুুষের কন্ঠে হৃদয়ে বাজতে থাকে গানের কলি হয়ে আর খুঁজতে থাকে জীবনের শত হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি। মন মনন অস্তিত্ব ও আবেগের সাথে মিশে যায় এই সিনেমা আর গান গুলো।( যেমন:অবুঝ মন,অবাক পৃথিবী, জননী,যাদুর বাঁশি ইত্যাদি)
~°আরব্য রজনীর ইতিহাস বেশ জটিল। আধুনিক গবেষকেরা গল্পগুলো সংগ্রহের ইতিহাস নিয়ে অনেক গবেষণা করেছেন। গবেষকরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে আরব্য রজনীর গল্পগুলো অনেকের দ্বারা সংগৃহীত এবং এর পূর্বেকার গল্পগুলো ভারত ও পারস্য থেকে এসেছে। অষ্টম শতকের দিকে এই গল্পগুলো আরবিতে অনুবাদ করে ‘আলিফ লায়লা’ শিরোনামে সংকলিত করা হয়। পরবর্তীতে ভারতীয় সিনেমা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান- সাগর এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনায়, পরিচালক- আনন্দ সাগর, প্রেম সাগর ও মতি সাগর ধারাবাহিক ড্রামা হিসাবে নির্মাণ করেন। ১৯৯৩ সাল থেকে সিরিয়ালটি টিভিতে প্রদর্শনী শুরু হয়। কয়েকটি ভাষায় ডাবিং করা হয়। বেশ জন প্রিয় হয়ে উঠে এই রূপকথা, দুঃসাহসিক, অ্যাকশন, নাট্য। আলিফ লায়লার সাথে আমাদের অনেকেরই অনেক স্মৃতি বিজড়িত শৈশব আছে। শৈশবের এই সুস্থ বিনোদন আমাদেরকে আজও তৃপ্ত করে। (আমার ছোট দুই ভাই এখনো নিয়মিত আলিফ লায়লা দেখে।)পরবর্তীতে “আলিফ লায়লা” ভারত সিনে-গোয়েরস একাডেমী দ্বারা ভূষিত সর্বাধিক বিশিষ্ট টিভি সিরিয়াল বিজয়ী হয়।
°পক্ষান্তরে বর্তমানে শিশু-কিশোর যুবকদের চিত্তবিনোদনের অবস্থা আমাদের সবারই জানা। হতাশা বা উদ্রেক প্রকাশ না করে আমাদের সুস্থ বিনোদন সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করা সময়ের দাবি।
– আসিফ মাহামুদ