পাশ্চাত্যের ভয়াল থাবা কলমে আমাতুল্লাহ ফাতেমা

পাশ্চাত্যের ভয়াল থাবা কলমে আমাতুল্লাহ ফাতেমা

পাশ্চাত্যের ভয়াল থাবা

আমাতুল্লাহ ফাতেমা 

 

আমি, তুমি, সে আমরা সবাই উন্নত জীবন যাপন করতে ব্যতিব্যস্ত। কিন্তু অনুন্নত জীবনের মাঝে আমরা অনবরত হাবুডুবু খেয়ে আসছি। এর অন্যতম প্রধান কিছু কারণ হতে পারে বলে আমার ছোট মাথা ধারণা করছে-

পাশ্চাত্যের অপসংস্কৃতি,বিদেশীয় পণ্যে আকৃষ্টতা,অরুচিকর পাঠ্যপুস্তক,পুঁজিবাদীর জয়জয়কার, তরুণ সমাজের ঘরকুনো বিলাসী জীবন যাপন-কর্মবিমুখতা-উদ্যমহীনতা-নারী-গাড়ি প্রিয়তা।

 

◾পাশ্চাত্য অপসংস্কৃতি পৃথিবী নামক গ্রহের রন্ধ্রে-রন্ধ্রে, শিরা-উপশিরায় বয়ে চলছে।আর তাকে জয় করতে চলছে খুন-রাহাজানি-লুটতরাজ।

সর্ব মুলে পাশ্চাত্যের ভয়াল থাবা। 

 

 

◾ পুস্তক জ্ঞানের ধারক-বাহক। বিশুদ্ধতা বিরাজ করে শিশুমন। নব নব সৃষ্টির উদ্যমতা বিরাজ করে তরুণ মনে।এদুটোই সমাজের মুল প্রাণকেন্দ্র বিন্দু।পুঁজিবাদী ধন ব্যবস্হা ও অরুচিকর পাঠ্যপুস্তক এ দু’প্রাণকেন্দ্রতে পুশ করছে বিষক্রিয়া।ক্ষমতার মসনদে বসা ক্লাসিকাল মতবাদই এখন 

তাদের ধ্যান-জ্ঞান-সাধনা। 

সর্বমুলে পাশ্চাত্যের ভয়াল থাবা।

 

 

◾দেশে-দেশে, যুগে-যুগে পৃথিবী নব নব যে প্রতিবাদীধ্বনি, সুন্দরের আহ্বান, বাতিলের আতঙ্ক ছড়িয়েছে তার শতভাগ পথ-পাথেয় যুগিয়েছে তরুণ-কিশোর। বাংলার ভাষা আন্দোলন-স্বাধীনতা সহ বিভিন্ন ময়দানে তরুণ ঢেলে ছিল বুকের তাজা রক্ত। এখন সে তাজা রক্তে বহমান পাশ্চাত্য নামক ভাইরাস। এই ভাইরাস মরণব্যাধি ভাইরাস। যা তরুণ সমাজকে টুকরো টুকরো করে গাঙে ভাসিয়ে দিচ্ছে। আর অবলীলায় তা বরণ করে নিচ্ছে তরুণ সমাজ।পাশ্চাত্যের ঘোলাটে চশমায় এখন সুখ খুজে ফেরে উদ্যমহীন-কর্মবিমুখ তরুণ সমাজ।প্রসাধনী হিসেবে তারা গায়ে মাখে নারী স্প্রে। সর্ব মধু পাশ্চাত্যের ভয়াল থাবা।

 

◾বিদেশীয় পণ্যে আকৃষ্টতা জাতীয় অর্থনীতিকে অচল-অবশ করে চলে। দেশীয় অর্থনীতিকে ধসে নামিয়ে, সেখানে রাজত্ব বিরাজ করে পুঁজিবাদী ধনকুবেররা। যে দেশ যতবেশি দেশীয় পণ্যে অভস্ত্য, সে দেশ তত বেশি উন্নত। মানুষ স্বভাবতই অনুকরণ প্রিয়।আর অর্থনীতির ভাষ্যমতে চাহিদা অনিকাংশে অনুকরণ প্রিয়তায় নির্ভরশীল। অনুকরণ করতে করতে পুরো বিশ্ব অর্থনীতি ব্যবস্থা ধনকুবেরদের হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে। আমরা মুষ্টিবদ্ধ হয়ে পাশ্চাত্য পণ্যের /অপসংস্কৃতির চারাগুলো রোপন করেছি ।শুধু পথ দেখিয়েছে পাশ্চাত্যগুরু।আমরা পায়ে পা ফেলে এগিয়েছি সে পথে। আজ পাশ্চাত্য চাহিদা তালিকা সর্বোচ্চ সীমায় বিচরণ করছে।সর্বত্র পাশ্চাত্যের ভয়াল থাবা।

আরো পড়ুনঃ  আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে পরিবার ও শিক্ষকদের ভূমিকা কলমে মোঃ গোলাম দস্তগীর

 

আজ যখন বয়কট, বয়কট বলে চারদিকে জিকির চলছে। তখন আমি বুঝতেই পারি না কোনটি আমার প্রাণ আর কোনটি পাশ্চাত্য। দু’টোকে আলাদা করতে গিয়ে আমাকে বার বার হোঁচট খেতে হয়।নিজ সংস্কৃতি হাতড়াতে-হাতড়াতেই ক্লান্ত প্রায়।জীবনে পাশ্চাত্য জেনো এক অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। বুঝতেই পারি না কোনটি আমার? আমার নিজস্বতার জায়গা পাশ্চাত্য গ্রাস করে নিঃস্ব করে রাজত্ব বিরাজ করছে। 

 

 

বাংলা! তুমি কি জানো?তোমার বুকে তোমার না পাশ্চাত্যের রাজত্ব চলছে! তোমার সন্তানেরা তাকে তোমার আঁচলে ছায়া-মায়া-যতন দিয়েছে। বাংলা তোমাকে তোমার সন্তানেরা ভালোবাসে শুধু মুখে। আচার-আচরণে তারা পাশ্চাত্যের পা-চাটা দাস। তাই এতো শতো বয়কটের ডাকে তুচ্ছ -তাচ্ছিল্যের সাড়া জাগে। ভেবো না আমি তোমার শান্ত-সুবোধ সন্তান! আমিও তোমার কুলংগার,পাশ্চাত্যে গাঁ ভাসিয়ে চলা সন্তান। 

 

বাংলা মা! আমি পাশ্চাত্য চাই না মা।আমি তোমাকে চাই। তোমার সোনা সোনা ক্ষেত ভরা ধান,পুকুর ভরা মাছ,গোয়াল ভরা গরু-মহিষ,সবুজে ভরা মাঠে আমি দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিতে চাই,তোমার সন্তানদের নব নব আবিস্কারে সাজোয়া তোমাকে দেখচে চাই,তোমার বধূয়া সাজে আমার দু’চোখ রাঙাতে চাই।পাশ্চাত্য মুক্ত তোমাকে চাই।যেখানে থাকবে না সাম্প্রদায়িকতা,কর্মবিমুখ-উদ্যমহীন তরুণ, থাকবে না পাশ্চাত্য অপসংস্কৃতির ভয়াল থাবা।

সেখানে শুধু থাকবে ইসলাম-প্রেম-প্রীতি,মায়া-মমতার ছায়া।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *