মায়ের শূন্যতা বুঝতেই দেয়নি বাবা
১৯৯৪ সালে আমার “মা” জননী এই নশ্বর পৃথিবীর যাবতীয় মায়া-মমতা ত্যাগ করে মহান রবের অলঙ্গনীয় ডাকে সাড়া দিয়ে চিরকালের জন্য পরকালে পাড়ি জমালেন।
ঐসময়ে আমার বয়স সবে মাত্র ৮ বছর প্লাস। এমন অল্প বয়সে সন্তানের জন্য মায়ের বিয়োগ ব্যাথা মেনে নেয়াটা স্বভাবতই খুব কষ্টের ব্যাপার ছিল বটে। কিন্তু আমার প্রাণপ্রিয় বাবা কোনক্রমেই সেই সময়ে মায়ের বিয়োগ ব্যাথা বা শূন্যতার অসহনীয় কষ্ট যাতনা আমরা অবুঝমনা সন্তানদের বুঝতেই দেয়নি।
প্রিয় বাবা আমাদের মায়ের মতোই আদর সোহাগ দিয়ে সেবা-যত্নে বিন্দুমাত্রও অবহেলা করেননি। যার ফলে আমি ও আমার স্নেহের ছোট ভাই ফারুকুল ইসলাম (ফারুক) “মা” হারানোর দুঃখ কষ্ট কিছুই বুঝতে সক্ষম হয়নি।
বাবাকে সমাজের অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিভিন্ন কলাকৌশলের ভিত্তিতে লোভ-লাভের প্রলোভন দেখিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করতে সময়ে অসময়ে ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু তাদের সেই কলাকৌশল সবই ছিল। কারণ তাদের সব প্রস্তাবের শুধুমাত্র একটাই জবাব দিতেন যে, আমি আমার ছোট দুই ছেলে দ্বীন ইসলাম ও ফারুকুল ইসলামকে ভীষণ ভালোবাসি। কাজেই এখন দ্বিতীয় সংসার করে “মা” হারা এতিম সন্তানদের কিছুতেই কষ্ট দিতে চাই না। তোমরা আমাকে অনর্থক যন্ত্রনা না দিয়ে একটা কথা শোন! আমার বড় ছেলে তাজুল ইসলাম সে এখন প্রাপ্ত বয়স্ক। তার জন্য ভালো পরিবারের মাঝে একটা নামাজী ও আমলদার মেয়ে খুজতে পারো। আল্লাহ আমাকে তিনটি ছেলে আর একটি মেয়ে দিয়ে যথেষ্ট নিয়ামত দান করছেন। আলহামদুলিল্লাহ।
বাবা আমাদের স্বার্থেই দীর্ঘদিন যাবত ধরে দ্বিতীয় বিয়ে থেকে বিরত থেকেছেন আজীবন। কাজেই আমরা গর্ব করেই বলতে পারি যে, আমাদের বাবার সাথে কোন বাবারই তুলনা হয় না। সেই বাবাও ৪ঠা অক্টোবর ২০২০ সালে মহান আল্লাহর ডাকে সাড়া পরলোক গমন করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইলাইহি রাজিঊন।
লেখক: মোহাম্মদ দ্বীন ইসলাম আনছারী
কাটানিশার, সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।