শবে বরাত নিয়ে কবিতা ও কিছু কথা
শবে বরাত” মুসলমানদের জন্য একটি বরকতময় রাত। এই দিনে যে যা চাইবে আল্লাহ তায়ালা সব দিবে। “শবে বরাত” বা “লাইলাতুল বরাত” হচ্ছে হিজরী শা’বান মাসের ১৪ ও ১৫ তারিখের মধ্যবর্তী রাতে পালিত মুসলিমদের গুরুত্বপূর্ণ রাত। উপমহাদেশে এই রাতকে শবে বরাত বলা হয়। ইসলামী বিশ্বাস মতে, এই রাতে আল্লাহ তার বান্দাদেরকে বিশেষভাবে ক্ষমা করেন। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের অনেক মুসলমান নফল ইবাদাতের মাধ্যমে ❝শবে বরাত❞ পালন করেন। অনেক অঞ্চলে, এই রাতে তাঁদের মৃত পূর্বপুরুষদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। এই রাতে দান করা সর্বোত্তম। শব’ মানে রাত, ‘বরাত’ মানে মুক্তি। এই রাতে যে যত বেশি জিকির করবেন তত বেশি নেকী পাবেন। শবে বরাতের ফজিলত বিষয়ে এ হাদিসটি সবচেয়ে প্রসিদ্ধ ও গ্রহণীয়। এ রাতের সব ফজিলত এ একটি হাদিসের মাধ্যমেই বুঝে আসে। এ রাতের প্রার্থনার মাধ্যমে আল্লাহ তাওবাকারীকে ক্ষমা করে দেবেন, অভাবীকে রিজিক দেবেন, বিপদগ্রস্থকে বিপদ মুক্ত করবেন। এই রাতে কিছু মানুষ নামাজ বাদ দিয়ে পটকা/আতশবাজি ফুটায়। এটা করা একদমই উচিত নয়। এতে অনেক মানুষের সমস্যা হয়। বিশেষ করে যাঁরা অসুস্থ তাদের বেশি সমস্যা হয়। মানুষ ঠিক মতো সালাত আদায় করতে পারে না। তাই এই দিনে আতশবাজি না ফুটিয়ে নামাজ আদায় করে দুঃখী-গরীব মানুষদের সাহায্য করলে মনে এক আলাদা শান্তি লাগবে। যেই শান্তিটা আতশবাজি বা পার্টি করে পাওয়া যাবে না। তাই সবাই এই দিনে বেশি বেশি নামাজ পড়ুন, দোয়া করুন, জিকির করুন, দান করুন।
– শবে বরাত কলমে জেরিন আক্তার বৈশাখী
শবে বরাত
মেহেদী ইকবাল
শবে বরাত হলো মোদের
ইবাদতের রাত,
প্রভুর কাছে ক্ষমা চেয়ে
তোলো দুটি হাত।
ধর্ম মেনে কর্ম করো
পাবে যে দুই কূল,
ইবাদতে পাপ মুছে নাও
হও জান্নাতি ফুল।
রোজা রেখে নামাজ পড়ে
ঘুমে না হও কাত,
কোরআন পড়ে জিকির করে
রাত্রি করো মাত।
পাপ করেছ বারোটি মাস
করোনি তো লাজ,
ক্ষমা চেয়ে পবিত্র হও
তওবা করে আজ।
একান্ত মন নিয়ে যদি
চাইতে পারো মাফ,
আল্লাহর খাস দয়ার গুণে
গুনা হবে সাফ।
শবেবরাতে চেয়ে নাও মাফ
আউলিয়া আক্তার সীমা
হাজার রাতের শ্রেষ্ট একটি রাত,
বছর ঘুরে আবার এল শবেবরাত।
জেনে না জেনে করছি কত-শত পাপ,
প্রভু তুমি আমাদের করে দাও মাফ।
ইবাদত করার তৌফিক কর দান,
ইসলামের পথে থাকতে চাই যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ।
হাজার রাতের শ্রেষ্ট এই রাতে,
নামাজ বিহীন ঘুমিও না ভোর প্রভাতে।
মন দিয়ে ডাকো মহান প্রভুকে,
প্রভু, খাঁটি মুমিন হতে কবুল কর আমাদেরকে।
শবেবরাতে গভীর ইবাদতে মগ্ন থাকতে চাই প্রভু,
তোমার কাছে হাত তুলেছি ফিরিয়ে দিও না কভু।
মহিমান্বিত রাতের মেলা
মোঃ রবিউল হাসান
অচেনা রাতের মেলা, নীল আকাশে ঝরে নিখুঁত চাঁদের আলো।
অবিরাম হৃদয়ে মুখোশ প্রেমের আগুন ধরে ধরে জ্বলে উঠে,
অন্ধকারের গায়ে মৃদু বাতাস স্বপ্নের নাচন আঁকে,
বিচারহীন স্নেহের আলো প্রকাশ পায় মনের আঁধারে।
স্বপ্নের নগরে প্রেমের সুর কানে আঁধার আঁকে,
হৃদয়ের অন্ধকারে চাঁদের আলো স্বপ্নের মেলা আঁকে,
অবাক রাতের মেলা, সৃষ্টি করে নতুন গল্পের সুর।
মনের আঁধারে মহিমান্বিত রাতের প্রেমের সুর।
মুক্তির একটি রাত
মোঃ শরীফ উদ্দিন
শাবান চান্দের চৌদ্দ তারিখ
লাইলাতুল বরাত,
ফজিলতে ___ পরিপূর্ণ
বৎসরে এক রাত।
ভাগ বন্টনে মহান আল্লাহ্
দেখে পুণ্যের মান,
বরাত রাতের শেষাংশ তে
রিজিক করে দান।
লাইলাতুন মিন নিসফি শাবান
মুক্তির জন্য পাপ,
আল্লাহ্ আমার ঐ রাত্রি তে
দিলকে করে ছাফ।
না ঘুমিয়ে রাতটি কাটাও
দরুদ জিকির এ,
না-ওতো ভাই পাইতে পারো
আর এই রাত্রি কে।
ঘুমাইও না ঘুমাইও না
ঘুমাইও না ভাই,
বরাত রাতের মত তো আর
কোন রাত্রি নাই।
পিতা মাতার ওই কবরে
যিয়ারতের পর,
নামাজ পড়ে ভাব জিকিরে
উঠাও দিলে ঝড়।
এই জমিনে গমন করে
এই রাত্রি তে রব,
পাপ পুণ্যের হিসাব লিখে
ফেরেস্তা’রা সব।
শবে বরাত
ফেরদৌসী খানম রীনা
শবে বরাতের রাতটি মুসলমানদের
জন্য পবিত্র রজনী,
খোদার কাছে প্রার্থনা করার সময়
আমরা তা জানি।
এবাদতে মসগুল হয়ে কাটাব
পবিত্র রজনীটি,
আল্লাহর কাছে চাইব ক্ষমা
তুলে হাত দুটি।
ভাগ্য বিধাতা তিনি করেন যদি
ভুল-ত্রুটি গুলো মাফ,
মনকে করেন যদি পাপ মুক্ত
পবিত্র ও সাফ।
শবে বরাত মানে ভাগ্য লিখন
প্রত্যক মোমিন বান্দার,
সারা রাত জেগে এবাদত করে
হবো প্রিয় খোদার।
আমাদের গুনাহ মাফ করবেন
দয়াল প্রভু,
বান্দাকে তিনি নিরাশ করেনা
আছে যত পাপ তবু।
সকল মোমিন এবাদতে মসগুল
পবিত্র এ রাতে,
সকল মুলমানদের মুক্ত করা
দয়াল প্রভুর হাতে।
শবে বরাত
শাহাব উদ্দিন ভূঁইয়া (জয়)
শাবান মাসের চৌদ্দ তারিখ
পবিত্র শবে বরাত,
মুসলিম উম্মাহ’র ভাগ্য রজনী
ফজিলতপূর্ণ রাত।
এই রাতে নর-নারী সব
এবাদতে মগ্ন হও,
অতীতের মাপ মোচন হবে
সেজদা’তে লুটে লও।
আল্লাহ তুমি সবই পারো
নজির মোড়ল
আল্লাহ তুমি সবই পারো
সর্বোচ্চ শক্তিমান,
সবচেয়ে বড় খোদা তুমি
সর্বোত্তম মেহেরবান।
চাইলে তুমি পাথর থেকেও
ঝরনা পানি ঝরে,
মরুর বুকেও ফুল ফুটে গো
বাগান টা যায় ভরে।
চাইলে তুমি সাগর বুকেও
চড় জাগাতে পারো,
মাঝ সাগরে নাও ডুবিলেও
হয় না ক্ষতি কারো।
তোমার দয়ায় বেঁচে গেলো
ঐ ইব্রাহিম নবী,
তোমার কথায় সবই চলে
চন্দ্র এবং রবি।
শবে বরাত
এম শামছুল ইসলাম সুহেব
খুশির সওগাত নিয়ে আবার
এলো ভাগ্য রজনী,
প্রভূর কাছে তুলবো সবে
গোনাহ মাফের সুর ধ্বনী!
শাবান মাসের চৌদ্দ তারিখ
দিনের শেষে রাত,
মাগফেরাত আর রহমতপূর্ণ
আসে শবে বরাত!
বান্দার পানে আল্লাহ দেন
রহমতের বারিধারা,
ক্ষমা করেন সবার গোনাহ
হিংসুক, মুশরিক ছাড়া!
কুরআন পড়বো প্রাণ জুড়িয়ে
জিকির করবো নিরলে,
দু’হাত তুলে রবের কাছে
চাইবো সবে দিল খুলে!
রাত জুড়ে সবে অধিকহারে
পড়বো নফল নামাজ,
দিনের বেলা নফল রোজা
রাখবে মুসলিম সমাজ!
এই রাত্রিতে রবের কাছে
সবার আরাধনা,
মাফ করে দাও মহান প্রভূ
জীবনের সব গোনা!
শবে বরাতের প্রার্থনা
মুহাম্মদ মুকুল মিয়া
বরকতময় সওগাত নিয়ে
শবেবরাত আসে,
মুসলিম উম্মাহ আনন্দে তাই
খুশির ছোঁয়ায় ভাসে।
আল্লাহ তুমি কবুল করো
মোদের মোনাজাত,
আমরা সবে চাই যে সদা
পাপ থেকে নাজাত।
মসজিদেতে গিয়ে মোরা
তাইতো নামাজ পড়ি,
খোদার দেয়া বিধান মেনে
সুখের জীবন গড়ি।
রোজা রাখবো-কোরান পড়বো
দান করিবো ভাই,
সঠিক পথে আমরা সবে
পথ চলিবো তাই।
এই রাতেরই উছিলায়-
আল্লাহ, ক্ষমা করে দিও,
হাসর দিনের পুলসিরাতটা
পাড় করে নিও।
এল শবে বরাত
সৌপর্ণ মাছুম
দু’হাত তুলে কর্ মােনাজাত
রহমতের রাত, এল শবে বরাত।
শবে বরাত এল রে আজ
ভুলে যারে দুনিয়ার কাজ
দমে দমে জপরে শুধু, দরূদের আয়াত।
চোখের জলে ডাক “এলাহি-
তুমি বিনে উপায় নাহি
ক্ষমা কর সকল গােনাহ্ তুলেছি দু’হাত।”
দয়াময় আজ দিতে রাজি
চেয়ে নে রে মন মাঝি
যাহা চাবি তাহাই পাবি, দু’হাত শুধু পাত।
কার বদনসিব খােশ্ বা কাহার
কার হবে মাফ গােনার পাহাড়
ভাগ্যলিপি নবায়নে, পাবি আজ নাজাত।
মুক্তির রাত
মোহাম্মাদ সাজিদ হোসেন
মানুষ হয়ে জন্ম নিলাম
করলাম কত পাপ!
তবুও দয়াময় হাজার ছুতোয়
করে দিতে চায় মাফ!
এমন একটি রাত্রি দিলেন
মুক্তি লাভের জন্য।
এই রাতে দোয়া কবুল হলে
জীবন হবে ধন্য!
দিন কেটেছে বয়স বেড়েছে
পাপ হয়েছে জমা।
হিংসুক আর মুশরিক বাদে
এ রাতে, সবাই পাবে ক্ষমা!
শব মানে রাত আর
বরাত মানে মুক্তি
তিনি স্রষ্টা, মহামহিম
তাতেই সর্বশক্তি!
রাত্রি গভীর হতে থাকলে
প্রথম আসমানে নামেন।
পাপীতাপী যত বান্দা আছে
ক্ষমার জন্য ডাকেন!
রিজিক চাইবে কে আছো?
হাতটা তুলে বলো।
কে আছো আজ অভাব অনটনে
জ্বলে না কার চুলো!
কেউ গোপনে পাপ করেছো
হাতটা শুধু তুলো।
রোগে ভুগছো, বিপদে পরেছো
স্রষ্টারে সব বলো!
সব পাপীদের শেষ আশ্রয়
দয়াময় এই প্রভু।
বান্দা ভুলে যায় তার প্রভুরে
তিনি ভুলেন না কভু!
পবিত্র রজনী
মোঃ ফাহিম উদ্দিন (আরজু)
আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন ইবাদতের জন্য
ইসলাম ধর্মে জন্মে আমরা হয়েছি আজ ধন্য
শবে বরাত এর রাত হোক আল্লাহ তায়ালার জন্য
আমরা আজ বেঁচে রয়েছি হই তার শরণাপন্ন
ক্ষমার জন্য যথেষ্ট এ বরাতের রাত্রি
হয়তো আপনি পাবেন এ জীবনের প্রাপ্তি
প্রয়োজন আমাদের আল্লাহর সাহারা
মুমনিগণকে ফেরেশতারা দেয় আজীবন পাহারা
বরাতের রাতে ভাগ্য আপনার করুন বাহার
আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করুন বারেবার
তিনি হলেন সর্বশ্রেষ্ট তিনি রহমান
বরাতের রাতে হে আল্লাহ করুন রহমত দান
আপনার কাছে চাওয়ার ত কোনো শেষ নাই
তারপরও শুকরিয়া আপনার সব দিয়েছেন তাই
সকল মুসলিম ঘুম ছেড়ে ইবাদত করবে রাতে
কেউ হয়তো রোজা রাখবে আল্লাহকে পেতে
অনেকে কুরআন পড়বে আমল নিয়ে যেতে
অনেক মানুষ ব্যস্ত থাকবে ক্ষমা চাইতে চাইতে
সবার গুনা মাফ করুন হে সর্বশক্তিমান
ইসলাম ধর্মের জন্য আমরা দিতে পারি প্রাণ
এ রাতে হোক শুধু আল্লাহর গুণগান
আমাদের কবুল করুন হে আল্লাহ আপনি মহান…
“লাইলাতুন নিসফে মিন শাবান”
মুহাম্মদ আবু নোমান
লাইলাতুন নিসফে মিন শাবান ভাগ্য নির্ধারণকারী যামিনী,
নবীজীর হাদিস দ্বারাই প্রমাণিত শবে বরাতের কাহিনী।
অস্বীকার করার উপায় নেই কোন মুমিন বান্দার,
সেই রাতে আল্লাহ খোলে দেন রহমতের ভাণ্ডার।
সাক্ষী জোছনার আলো; সাক্ষী আসমানের তারা!
আল্লাহ দৃষ্টি দেন জেগে আছে তার কোন বান্দারা।
যারা ডাকে না মহী মহীয়ান রব আল্লাহ তায়ালা কে,
কত যে দয়ময় তিনি, তবুও তিনি ডাকেন তাঁর বান্দাকে।
কে আছো আমাকে ডাকার?
কে আছো তিতীক্ষা চাওয়ার?
দেব আমি তার ডাকে সাড়া
হবেনা কোন বান্দা হাত ছাড়া।
হিংসুটে, মুশরিক মানুষদের করবে না তিনি ক্ষমা
কত সুন্দর করে প্রিয় নবী দিয়েছেন তাদের উপমা।
প্রতিদিনের মত ঘুমে কাটিয়ে দেওয়া যাবেনা শবে বরাতের রাতে,
অভাবী, দুর্ভাগা,পাপিষ্ট হওয়া থেকে পানাহ চাই সবি মুনাজাতে।
সেজদায় মস্তক নত করে করো তাকে বারবার আহ্বান
লাইলাতুন নিসফে মিন শাবান! লাইলাতুন নিসফে মিন শাবান
আরো পড়ুন এবং লেখুন চিরকুটে সাহিত্য প্লাটফর্মে |