গরম নিয়ে কবিতা
আমাদের প্লাটফর্মে সব-সময় আমরা বিষয় ভিত্তিক লেখা প্রকাশ করার চেষ্টা করি। সম্প্রতি সময়টা খুব খারাপ যাচ্ছে। বিশেষ করে শ্রমিক মানুষদের, যারা দিন আনে দিন খায়। তাদের একদিন না কাজ করলে হয় না। এই প্রচন্ড রৌদে হয়তো আমরা শান্তির ঘুম ঘুমাচ্ছি আধুনিকতার ছোঁয়ায়। গরম নিয়ে কবিতা গুলো সাপ্তাহিক অনুমতি পাতা থেকে সংগ্রহিত।
খরার তাপদাহ
খাদিজাতুত তাহিরা
প্রকৃতি আজ নিরব হয়ে
বয়ছে খরার তাপ,
এই দুনিয়া ভরে গেছে
নানান রঙের পাপ।
খরার তাপে মাঠি ফাটে
তবু হয় না বৃষ্টি,
কৃষক মোনাজাত করে
কেঁদে ভাসায় দৃষ্টি।
খরার তাপে সৃষ্টি কূলে
অসহনীয় হয়ে নাচে,
আল্লাহ তুমি রহম করলে
খরার থেকে বাঁচে।
ফসলাদি নষ্ট হচ্ছে
খরার মুখে পড়ে,
আল্লাহ তোমার রহম ছাড়া
সৃষ্টিকূল যেন মরে।
পিঠফাটা রোদ
খাদিজা ইয়াসমিন আঁখি
বৈশাখের পিঠ ফাটা রোদে
তৃষ্ণার্ত কাক টাও একটু পানি খোঁজে,
খাল-বিল, নদী সব গেছে শুকিয়ে
চারদিকে শুধু হাহাকার শুরু হয়েছে।
ফসলের মাঠে খরা ধরেছে
কৃষকের কপালে দুঃখ জমেছে,
ফসল বাঁচানোর কত চেষ্টা
চালিয়ে যাচ্ছে কৃষকেরা।
মাঠ-ঘাট শুকিয়ে হয়েছে খা- খা
বৃষ্টির জন্য চলছে কত দোয়া,
রাস্তার ধারে নেই কোনো গাছপালা
কি করে পাবে মানুষেরা একটু ছায়া।
প্রচন্ড গরমে অসুস্থ হচ্ছে সবাই
ভীর জমেছে ডাক্টারের চেম্বারে তাই,
থাকতো যদি গাছপালা অনেক বেশি
গরম করলেও মানুষ পেতো একটু স্বস্তি ।
গাছ লাগানোর কোনো বিকল্প নেই,
গাছ লাগাই পরিবেশ বাচাই।
গরমে পুড়ছে ধরা
বাসুদেব সরকার
সূর্যের তাপে পুড়ছে মানুষ
পুড়ে যাচ্ছে ধরা,
খালবিল সব আজ শুকিয়ে যে
চলছে দেশে খরা।
মাঠের ফসল জ্বলে পুড়ে
হয়ে যাচ্ছে ছাই,
তপ্ত গরম বিপদ চরম
বাঁচার উপায় নাই।
প্রাণীকূল আজ হুমকি মুখে
গরমে নেই জল,
বন উজার আর বৃক্ষ নিধন
পাচ্ছে তারই ফল।
হিটস্ট্রোক হয়ে মরছে মানুষ
বাড়ছে সূর্যের তাপ,
নিজের হাতে কামাই করা
মানুষজনের পাপ।
◾বাসুদেব সরকার, পেশা: শিক্ষক
চরভৈরবী, হাইমচর, চাঁদপুর, বাংলাদেশ।
চরম গরমে
এম শামছুল ইসলাম সুহেব
গরম এখন চরম আকারে
রুপ নিয়েছে ভাই,
হরেক রকম রোগ-বালাইয়ে
ঘিরে ধরছে তাই!
বয়স্ক আর অসুস্থ, শিশুর
সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি,
রোগাক্রান্ত হচ্ছে তারা
এখন নানানমুখী!
সর্দি, জ্বর, কাশি আর
জন্ডিস, নিউমোনিয়া,
শ্বাসকস্ট বাড়ছে প্রবল
চর্মরোগ, ডায়রিয়া!
বাইরে বের হলে সাথে
রেখো ক্যাপ, ছাতা,
সূর্যের কিরণ থেকে সতত
ছায়ায় রাখো মাথা!
বেশি করে পানি, শরবত
সবাই করো পান,
রোদ এড়িয়ে চলে খোঁজো
ছায়াযুক্ত স্থান!
নিয়ম মেনে গোসল আর
বিশ্রাম সবে নাও,
অসুস্থ হলে দ্রুত গতিতে
ডাক্তারের কাছে যাও!
অনল প্রবাহ
মোঃ আক্তারুজ্জামান আক্তার
অনল প্রবাহে পুড়ছে ভুবন
হাফিয়ে উঠেছে মানব জীবন,
মাঠঘাট ফেটে আজ চৌচির
শুকিয়ে গেছে ঐ নদীর তীর।
পুকুরের মাছগুলো খাবি খাচ্ছে
রাস্তার পিচগুলো গলে যাচ্ছে,
গাছ গুলো আজ ঘুমিয়ে গেছে
বিদ্যুৎ টাও সাথে দল বেধেছে।
ফসলের খেত পুড়ে ছারখার
পথের ধূলোয় মানুষ মরবার,
কুকুর ছানাগুলো শুঁকছে ধূলা
তপ্ত শরীর আজ যায় না চলা।
গরম
রোকসানা আক্তার
গরম, গরম, গরম, তুমি
ছিনিয়ে নাও মানুষের লাজ শরম৷
মাথায় রাখতে পারিনা কাপড়,
গরম তুমি কর একটু সবুর৷
বৈশাখের ধান কেটে আনে কৃষক,
গৃহ বধূর কাছে দোকানের
ঠান্ডা চেয়ে বসে বাড়িতে৷
শ্বশুর, শ্বাশুরির, সেবা,
বাচ্চাদের কান্নাকাটি শব্দ,
আমি গরমে হয়ে যাই সতন্ধ৷
নিজের হয় মাথাব্যথা
প্রয়োজন ছাড়া শুনতে
ইচ্ছে করে না কোন কথা৷
গরম চুলায় বসাই রান্না,
গরমকে কিছু বলতে পারি না৷
বার বার মনে আসে কান্না৷
গরম তুমি ভালো থেকো,
সুখে থেকো আনন্দে থেকে,
এই মোর কামনা, ধন্যবাদ।
গরম লাগে
নূর মোহাম্মদ
কইবো কি কইতে লাগে সরম
এতো রোদ আর ঘামে ভিজে,
নাই তো কোন শান্তি
গরম আর গরম।
না আসে ঘুম না আছে শান্তি
এ গরমে কেমনে থাকি।
গরমের জ্বালায় অতিষ্ঠ আমি,
সরমে আমি কইতে না পারি।
বাতাসে লড়ে চড়ে গাছের পাতা,
লাগেনা বাতাস গায়ে,
যতই লড়ে চড়ে গাছের পাতা।
গরম আর ভালো লাগে না।
গরমের আদ্রতা
শাকিল হাছান
গরম আমাদের জন্য স্বাভাবিক
এসি ছাড়া চলে না তাদের মাথা নাই ঠিক,
গরম আমাদের জন্য স্বাভাবিক
দালানকোঠায় থাকে মানুষ শোষন গলাবাজি করে তাদের মাথা নাই ঠিক।
গরম আমাদের জন্য স্বাভাবিক
শিক্ষত হয়েও মুর্খ সাথে তালে তাল মিলিয়ে
চলে তারা নাই ঠিক,
গরম আমাদের জন্য স্বাভাবিক
হিংস্র মানুষ নামে অমানুষ মাতালরা নাই ঠিক।
গরম আমাদের কাছে স্বাভাবিক
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আগলা প্রীত দেখায় তাদের কাছে অস্বাভাবিক।
গরম
ইসরাত জাহান নাদিয়া
গ্রীষ্মকালে কি অসহ্য গরম,
মাথার বেগ রাগে হয় কি চরম।
গরমে ঢাকা নগরীকে দিয়ে আড়ি,
চলে যাবো আমি স্বপ্নের বাড়ি।
গরমের যন্ত্রণা
মুহিতুল ইসলাম মুন্না
গরমে বিনাশ শরীর
যাতনা রাত্রির পাড়
প্রত্যহ ঘুম কাড়েছে
নিয়েছে মৃত্যুর দ্বার।
একাত ওকাত হয়ে যাই
খাটে আবার ফ্লোরে
গরমের যন্ত্রণাতে
যায়নি একটু দূরে।
নির্ঘুমে হয় সকালবেলা
বিদ্যুৎ করে জালা,
দাবদাহে চামড়া পুড়ে
হয়ে যাচ্ছে কালা।
গরম যেনো অনুন ভাই
টগবগিয়ে উঠছে
মস্ত বড়ো জংশনেতে
মানুষ যেনো মরছে।
গরমে ভাল্লাগে না
হুসাইন আহমাদ
এই গরমে ভাল্লাগেনা,
কোনো কাজে মন বসেনা,
সুইলে ঘুম আসেনা,
গেলে কারেণ আর আসেনা;
কি যে করি এই ভাবনা,
ভাবিতে আর পারিনা।
কবিতার সুর মিলেনা,
তবুও ছন্দ কোনা,
কবি তো এই আমি না,
কবিতার ভাব বুঝিনা,
গরমে আর পারিনা।
তাপদাহের ঝুঁকি
মোহাম্মদ আবুল কাসেম
বোশেখ এলো বাংলাদেশে
তাপদাহ নিয়ে,
রক্ষা করো ওগো মাবুদ
বৃষ্টিপাত যে দিয়ে।
আমরা তোমার অবুঝ বান্দা
পাপ করেছি জানা,
এই দুনিয়ার মোহে পড়ে
হয়ে গেছি কানা।
রোদের তাপেই এই অবস্থা
জাহান্নাম যে কেমন!
কী পরিণাম হবে সেদিন
জানতাম যদি তেমন!
তুমি ছাড়া উপায় যে নাই
দো-জাহানের তরে,
গরম থেকে উদ্ধার করো
স্বস্তি দাও গো ভরে।
মাঠের ফসল পুড়ছে তাপে
জীব যে দিশাহারা,
এমন যদি চলতে থাকে
যাবো আমরা মারা।
দানবরূপী ঝড়
মোঃ হাবিবুর রহমান
আসলো ঘরে নতুর বছর
মেঘের দেখা নাই,
রবির কিরণ জ্বলছে দ্বিগুণ
ঠান্ডা কোথায় পাই।
দানবরূপী কালবৈশাখী
এবার আসছো না,
মরুর বুকে সাগর বানাও
আমরা পরের ছা।
এলে তুফান ভাঙো গাছ ঘর
বৃষ্টি সাথে লও,
মুষলধারায় জগৎ ভাসাও
চাষীর কথা কও।
উষ্ণ বায়ে মরছি সকল
বাইরে যাওয়া দায়,
কালবৈশাখী আসো জলদি
আমার শহর গাঁয়।
মেঘের নায়ে আসুক তুফান
ভাঙ্গুক দু’খান চাল,
সোহাগ মেখে সূয্যি মামা
উঠবে পূবে কাল।
উত্তপ্ত বৈশাখ
মোঃ শরীফ উদ্দিন
বাজায়া শাখ্ এলি বৈশাখ
বানবৃষ্টি তাপ নিয়ে,
ইচ্ছে করে ডুবে থাকতে
নদীর জলে গিয়ে।
উল্কা হাওয়ার ভয়ে সেই তো
যাই না নদীর ঘাটে,
আরাম তরে পরলে বিদায়
ঘূর্ণিপাকের বাটে।
করি কী হায় ও বৈশাখী
সয় কেমনে গরম,
বৈশাখী রে ও বৈশাখী
বলতে লাগে শরম।
মাটির নিচে কেন্ জ্বালাইলি
কোন্ বিরহে আগুন,
হঠাৎ আবার ঝড়ো হাওয়া
একি’রে তোর ফাগুন।
কী রূপ নিয়ে এলে তটে
ওরে ও বৈশাখী,
অতিষ্ট আজ অরূপ রূপে
দ্যাখনা খুলে আঁখি।
গরম
রাহাত হাসান
সিলেট, বাংলাদেশ
হাতপাখাটা দাও না বুবু
গায়ে লাগাই বাতাস,
কি গরম পড়েছে দেখো
হয়ে গেছি হতাশ।
দেখো চেয়ে আমার দিকে
ঘাম ঝরছে গায়,
টপ টপাটপ মাথার ঘাম
পরছে আমার পায়।
যখন তখন কারেন্ট মামা
হয়ে যায় নিখোঁজ,
গরমে সবার পিত্তি জ্বলে
কে রাখে কার খোঁজ।
এ-ই গরমের তীব্রতায়
গা যে আমার জ্বলে,
মন ছুটে যায় বারেবারে
গা ভেজাতে জলে।
প্রচন্ড এই দাবদাহে
ঘুম গিয়েছে হারিয়ে,
কারেন্ট মামা আসতো যদি
প্রাণটা যেতো জুরিয়ে!
গরম
মোঃ রাশেদুল ইসলাম রাশেদ
রোজ সকালে সূর্য মামা উঠে
আজ দেখি অনেক রাগ,
চক্ষু মেলে দেখতে কষ্ট হচ্ছে
বাহিরে রয়েছে বিষণ তাপ।
ঘরের মানুষ বাহিরে বের হয় না
আকাশের মনে বিষণ কষ্ট,
অতিরিক্ত গরমের কারণে হয়ে যাচ্ছে
নানা রকম ফসল নষ্ট।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে
ঘরে আজ ঝুলছে তালা,
মানুষের জীবনে শান্তি নাই আজ
সবার চোখে আকাশটা দিশেহারা।
গরমে আজ আমরা কষ্ট করছি
দোয়া চাই মালিকের কাছে,
আমাদের তৌফিক দেন মহান আল্লাহ
থাকতে পারি যেন আপনার পাশে।
সৃষ্টির জগৎটা আজ পরিবর্তন ঘটেছে
আসছে ফিরে কালো রাত্রি,
সারা বিশ্বে বিভিন্ন সমস্যার মুখে
জানি না কোন পথের যাত্রী।