স্বাধীনতা দিবসের কবিতা
স্বাধীন সবাই হতে চাই, কেউ পরিবার থেকে বা কেউবা দাসত্ব থেকে। কিন্তু চাইলেই কি পাওয়া যায়?.. নিশ্চিয় না। আমাদের দেশ বাংলাদেশ, এক সময়ের পূর্ব পাকিস্তান আর পশ্চিম পাকিস্তানের সেই হয়তো কারো অজানা নয়। যাই হোক, আমাদের পূর্ব-পূরুষের রক্তের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা। আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক, ইচ্ছে মতো অনেক কিছুই করতে পারি। কেউ শোষণ করছে না শাসন করছে না, আহা কি শান্তি। আজকে পরাধীন থাকলে হতো স্বাধীনতা কি তা সম্পর্কে ভালো একটা ধারণা হতো। যাই হোক, নিচে স্বাধীনতা দিবসের কবিতা গুলো পড়ুন আশা করি ভালো লাগবে
এই স্বাধীনতা তোমার
মুহাম্মদ আমির হোসেন
আমার স্বাধীনতা তুমি লুন্ঠন করেছ
তোমার হাতে পান্ডুলিপি
হত্যার মিশন, বারূদের গন্ধ
তুমি দুর্ধর্ষ ডাকাতের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ো
ছোবল দিতে তেড়ে আসো গর্তের মতো অন্ধকারে
তোমার বেয়োনেটে মানুষের রক্ত লেগে আছে
তুমি শাসক, শোষক ও প্রশাসক
এই স্বাধীনতা তোমার, আমার না।
তুমি ডান্ডাবেড়ী পরিয়েছো
লাল সবুজের ভয়ার্ত কারাগার বানিয়েছ
জনতাকে ভৃত্য করে নৃত্য করো তুমি
কংক্রিট থেকে জনপদ কিংবা বনভূমি
তোমার করায়ত্ত ও কর্তৃত্ববাদ
অশুভ শনির মতন নির্বিবাদ
মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে জনতা
এটা তোমার স্বাধীনতা, আমার না।
তুমি পতাকা উড়াও
শৌর্য বীর্য খেয়ে অশুভ শক্তি
মাড়িয়ে যাও, পিষ্ট করো, বর্ণমালা
যে আমাদের অধিকার শিখিয়েছে
ধূর্ত শেয়ালের মত ছিনিয়ে নিলে তুমি
তোমার অট্টহাসিতে আমার কলিজা ফেটে যায়
এই স্বাধীনতা তোমার, আমার না।
তোমার সত্যের ভোজভাজি
আমাকে ভোলাতে পারেনি রক্তে ঝরা দিন
চেতনা টগবগ করে হত্যাকারীর সম্মুখে
ওরা শোনায় আষাঢ়ে গল্প
জল কামান, বুলেট, হত্যার বিষ বাষ্প
আমার স্লোগান স্তব্ধ করে দেয়—
এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম অধিকারের সংগ্রাম
হত্যাকারীদের অপ্রকৃতিস্থ করে দেয়
কর্তৃত্ববাদী ভিশন মিশন
আমাকে চিতায় তুলে দেয়
এই স্বাধীনতা তোমার, আমার না।
তোমার কৌলিন্য উদ্দ্যত আচরণ
আমাকে ঠায় দায়সারা বানিয়েছে
তরুণ যুবক যুবা ছাত্রদের মগজে
অনুর্বরতা ঠেসে দিয়েছে
যা ইচ্ছে তাই কবিতাও লেখা যায়
পোষা কুকুরের মতন লেজ নাড়ানো শিক্ষা
অচলায়তন ঘিরেছে বাংলাকে
এই স্বাধীনতা তোমার, আমার না।
আরো পড়ুনঃ কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা |
লাল সবুজের স্বাধীনতা
হাসান স্বজন
এদেশ আমার মুক্তিসেনার
রক্তে কেনা দামে
এদেশ আমার দিনমুজুরির
কৃষাণ ভায়ের ঘামে।
লাল সবুজের এই দেশেতে
মু্ক্তিকামীর দলে
কাব্য দিয়ে দেশের কথা
কলম নিয়ে চলে।
পদ্মফোটা বিলের মাঝে
পদ্যে গাঁথা দেশে
স্বাধীনতার চেতনাতে
যাই প্রতিক্ষণ ভেসে।
রক্ত ঢেলে বাংলা গড়ে
স্বদেশ প্রেমে কবি
সোনালী এই অপরূপের
শিল্পী আঁকে ছবি।
মায়ের ভাষায় প্রাণের এ দেশ
থাকবে প্রদীপ জ্বেলে
স্বাধীনতার লাল সবুজে
জয়ধ্বনিতে মেলে।
জাতির পিতার এ দেশ আমার
লক্ষ প্রাণের দানে
লাল সবুজের স্বাধীনতা
জানায় কানে কানে।
স্বাধীন বাংলা
কলমে তাসনিয়া তানহা
স্বাধীন দেশের মানুষ মোরা
নেই কোনো ভয়,
যুদ্ধ দিনের কঠিন সময়
অবশেষে সেই জয়।
নয়টি মাসের কষ্ট যতো
লাল সবুজের বুকে ,
হাসছি মোরা স্বাধীন দেশে
মন ভরেছে সুখে।
পেলাম মোদের প্রিয় স্বাধীনতা
রক্ত দামে কেনা,
এই দেশটি প্রানের স্বদেশ
মোদের চির চেনা।
সংযুক্ত হতে পারেন আমাদের ফেসবুক আইডিতে |
স্বাধীনতা কি তুমি
সিরাজুল ইসলাম মোল্লা
অতৃপ্ততায় স্বাধীনতা কি তুমি আজও না বুঝি,
সারা দিনমান জপি হৃদ গহীনে তোমায় খুঁজি।
খুঁজি স্বাধীনতা, না বুঝি অন্যের সম যথার্থতা,
নিশ্চয় মর্মার্থে পরস্পর শান্তি সুখের সাম্যতা।
কারোর স্বাধীনতায় হতে পারে লঙ্গিত ধর্ম মর্ম,
স্বাধীনতা মানে নয়তো যেমন খুশি তেমন কর্ম।
স্বাধীনতা মানে নয় ভালোলাগা স্বেচ্ছাচারিতা,
সমান্তরাল প্রয়োগ বাঁধতে পারে সাংঘর্ষিকতা!
স্বাধীনতা মানে বিহঙ্গের মতই আত্মার মুক্ততা,
স্বাধীনতা মানে অধীনতামুক্ত আত্মার তৃপ্ততা।
অপরাপর অনিষ্ট মুক্ত সার্বজনীন শুদ্ধ প্রয়াস,
মুক্ত পৃথিবীর মুক্ত জীবন গঠনে মুক্ত নিঃশ্বাস।
কথায় কথায় বলি কোথা মানবিক স্বাধীনতা,
স্বাধীনতা তবে কি একপক্ষের পৃষ্ঠপোষকতা!
স্বাধীনতা যদি নাই পাবে কেমনে বললে তবে,
আসলে নীতি নৈতিকতা মৃত সবে অদ্য ভবে।
নৈতিক মূল্যবোধে যথাযথ প্রাপ্যতা বিনিময়ে,
সার্বিক সত্যের সহিত স্বাধিকার স্থাপিত রয়ে।
খন্ডিত ভূমি নয়, শ্রদ্ধাশীল সাম্যে সমঝোতায়,
স্বাধীনতার অবগাহন সিক্ত মনন শান্ত তথায়।
স্বাধীনতার ফসল
মো.মেহেদী ইকবাল জয়
বিজয় দিবস যখন আসে
মনটা দুঃখ করে,
বীর ছেলেরা যুদ্ধে গিয়ে
ফিরে নি আর ঘরে।
পাকিস্তানি আর রাজাকার
যখন হানা দিলো,
এদের থেকে দেশ বাঁচাতে
অস্ত্র তুলে নিলো।
একাত্তরের দিনগুলোতে
হলো মরণ যুদ্ধ,
শুনি যদি এই কাহিনী
দম হয়ে যায় রুদ্ধ।
নয়টি মাসের যুদ্ধ শেষে
শত্রু হলো ধ্বংস,
সৃষ্টি হলো বাংলাদেশের
নতুন একটি বংশ।
দেশের বুকে আছি সুখে
স্বাধীনতার জন্য,
এই দেশেতে জন্ম হয়ে
আমি খুবই ধন্য।
লড়াইয়ের ফল
রতন বসাক
পরাধীনে চায় না থাকতে
এই জগতে কেউ,
সেই কারণে মনে জাগে
স্বাধীনতার ঢেউ।
বাধাবিপদ আসে আসুক
আগে যেতে হয়,
চেষ্টা করলে মনের জোরে
তবেই মেলে জয়।
ইচ্ছে মতো আমরা সবাই
বেঁচে থাকতে চাই,
লড়াই করে স্বাধীন হবার
চেষ্টায় থাকি তাই।
ভয় করি না রক্ত কিংবা
দিতে নিজের জান,
স্বাধীনতা লড়াইয়ের ফল
নয়তো কারো দান।
একটা কথা বলতে পারি
স্বাধীনতার সুখ,
পেয়ে গেলে তখন থেকে
ভুলি অনেক দুখ।
বিজয় দিনের আলো
রেজাউল করীম
মাগো তোমার খোকন সোনা কোথায় গেছে বলো?
পুব আকাশে সূর্য হাসে স্কুলের যে সময় হলো!
মাগো তোমার কি হয়েছে মুখটি কেন কালো
রাগ করো না আমায় তুমি জলদি করে বলো?
এ ঘর খুঁজি ও ঘর খুঁজি নেইতো কোন ঘরে
কাদের সাথে কোথায় গেল আমায় পর করে!
সকাল গেল দুপুর গেল এলো সন্ধ্যা ফিরে
তোমার ছেলে কোন সময়ে আসবে তবে নীড়ে?
একা একা ভাল লাগেনা কেমনে হবে খেলা
আমিও যদি আড়াল হই বুঝবে তখন জ্বালা!
কেমন করে থাকবো আমি যাই কি তারে ভোলা
কও কথা কও আমার সাথে সয়না বুকে জ্বালা!
কাল বৈশাখের মেঘের মতো মুখটি কেন কালো?
দোয়া করো মাগো তুমি মনের দুয়ার খোলো
দাও এনে দাও খেলার সাথী লাগবে তখন ভালো
আঁধার টুটে আনবো আমি বিজয় দিনের আলো।
নিয়মিত পড়ুন এবং লেখুন চিরকুটে সাহিত্য প্লাটফর্মে |