তাঁদের ঈদানন্দ
ওবাইদুর রহমান
ঈদের সুবাস পাওয়া মাত্রই হৃদয়ে খেলে যায় আনন্দের উত্তাল তরঙ্গ। কত উৎসাহ! কত উচ্ছ্বাস! ঈদকে ঘিরে। মুমিন হৃদয়ে খুশির পরশ বুলিয়ে দেয় রব্বে কারীমের এই শাশ্বত বিধান! ঈদ নিয়ে উদ্দীপনা আকাশচুম্বী। নিশি সুধাকর উদিত হয় আনন্দের মহা পয়গাম নিয়ে। প্রতিটি তল্লাট গমগমিয়ে ওঠে ঐশী পুলকে!
তবে ঈদ কি সকলের জীবনে বয়ে আনে আনন্দের ফল্গুধারা? সবাই কি আস্বাদন করতে পারে ঈদের মিষ্টতা ? না। ঈদ সকলের হৃদয়ে উৎসবের সুর তুলতে পারে না। বুলিয়ে দিতে পারে না স্নিগ্ধতার পরশ! কারো কাছে ঈদ নিয়ে আসে বিষাদের বার্তা। তাঁদের কাছে ঈদের আরেক নাম আতঙ্ক।
বলছি ফিলিস্তিনিদের কথা। মিসাইলের হৃদয় বিদীর্ণ আওয়াজে যাদের সকাল হয়। তাদের ধূসর গগনে ঈদশশী উদিত হয় ভয়ংকর চেহারায়! তাতে অঙ্কিত থাকে হত্যা আর ধর্ষণের বিভৎস চিত্র ! ঈদের দিন পুরো পৃথিবী যকন ছুটে চলে দরবারে হাকিমে হজিরা দেওয়ার লক্ষ্যে , তখন কুদসবাসী আরেকবার ভেবে নেয় যে, তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারবে কিনা! আমরা নিজেদেরকে যখন রঙিন কাপড়ে সাজাতে ব্যস্ত, একজন ফিলিস্তিনির হৃদয় তখন শঙ্কিত –এই বুঝি রিভলবারের নগ্ন বুলেট রাঙিয়ে দেয় তার শুভ্রবক্ষ!
ঈদের আমেজে গোটা প্রকৃতিও যখন হেসে ওঠে, গাজার পথ – প্রন্তর তখন ভারী হয় এতিম শিশুর আত্নচিৎকারে। হাজারো বিধবা আর ধর্ষিতা বোনের আর্তনাদে!
ঈদ কেন্দ্রিক উচ্চ বিলাসিতায় সামান্য ভাটা পড়লে আমরা সাজিয়ে বসি অভিযোগের পসরা। অথচ একজন ফিলিস্তিনির এক মুহূর্ত বেঁচে থাকার কি আকুতি!
সাতচল্লিশের পর থেকে অর্ধ-শতাব্দির বেশি সময় ধরে এভাবেই ঈদ উদযাপন করছে ফিলিস্তিনের আপামর জনতা। তাদের সর্বস্ব মিটিয়ে দিচ্ছে ঈমানী চেতনা রক্ষার্থে! তবে খুব দেরি নয়। অনতিবিলম্বে আল-কুদসের পতপত করে উড়বে সালাহুদ্দীন আইয়ুবীর সেই কালজয়ী নিশান।