বৃষ্টি ভেজা রাত নিয়ে কবিতা

সেরা ১০টি বৃষ্টি ভেজা রাত নিয়ে কবিতা

বৃষ্টি ভেজা রাত নিয়ে কবিতা গুলো পড়ে যেন একটা মনের প্রশান্ত মেলে৷ প্রতিটি কবিতার ফুটে উঠেছে হাজারো কল্পনার জগতের রোমাঞ্চকর মূহুর্ত। যেগুলো বরাবর আমরা মিস করি, প্রিয় মানুষ, প্রিয় জায়গা আরো কত কি? বৃষ্টি ভেজা রাত নিয়ে কবিতা গুলো না পড়লে বোঝাই যাবে না। ১ম থেকে শেষের পর্যন্ত প্রতিটি কবিতা অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

 

 

বৃষ্টির জলে ভেজা
কবি সাকিব মাহবুব

বৃষ্টি ভেজা বাদল দিনে
মন হাহুতাশ করে,
ছুটে চলে অতীত পানে
রাখা যায় না ধরে।

ছোট বেলায় বৃষ্টি হলে
এক বয়সী মিলে,
হইচই করে জলে ভিজে
হর্ষ পেতাম দিলে।

নতুন জলে আমরা যত
পাড়ার সকল ছেলে,
সাঁতার কাটা নৌকা চড়া
পড়াশোনা ফেলে।

সাঁকো চড়ে পানিতে লাফ
নতুবা লাই খেলা,
টের পেতাম না কখন জানি
কেটে যেতো বেলা।

কখনো বা বৃষ্টি হলে
স্কুলটা ছুটির পরে,
সদলবলে বৃষ্টি ভিজে
ফিরে যেতাম ঘরে।

 

 

বৃষ্টি
রবি আহমদ তালুকদার

এমনও বৃষ্টির দিনে
ঘুমের ঘরে দিন দুপুরে
স্বপ্ন নিয়েছি কিনে।
আকাঁশে মেঘের ভেলা
বাতাসের সাথে একান্ত এ মন
করছে কেবল খেলা।
বৃষ্টি এলো বৃষ্টি
মাঠের বুকে নতুন জলের
করল আবার সৃষ্টি।
রংধনু উঠল ওই
মনের মানুষ খোঁজে বেড়াই
কার কাছেতে কই।

ঠিকানাঃ ছাতক, সুনামগঞ্জ

 

বৃষ্টি জলে ডোবা তলে
মুনীর আল হাদী

ওই যে দূরে গগন জুড়ে
বেড়ায় ঘুরে মেঘের ভেলা,
রুমঝুম তালে টিনের চালে
বৃষ্টি ঝরে দুপুরবেলা।

হঠাৎ হঠাৎ ফঠাৎ ফঠাৎ
ডেকে ওঠে মেঘের রাণী,
বাঁধন হারা জলের ধারা
কলমি লতা খায় চুবানি।

খানিক পরে আলো করে
বিদ্যুৎ মারে আলোর ঝলক,
খালি চোখে ঝলক দেখে
থমকে যায়রে নেত্র পলক।

কাশের বনে ক্ষণে ক্ষণে
দোল দিয়ে যায় পূবাল হাওয়া,
অফিস থেকে বার্তা লেখে
ঝরের খবর গেল পাওয়া।

আরো পড়ুনঃ  তোমাকে চাই | কবি বাবুই

ঝরের গতি বাতাস অতি
হবে ক্ষতি সারাদেশে,
বৃষ্টি জলে ডোবা তলে
সবকিছু যায় দূরে ভেসে।

 

বৃষ্টি ভেজা রাত নিয়ে কবিতা
সুজিৎ চন্দ্র রায়

তুমি বৃষ্টি হলে,
আমি হব মেঘ।
তোমার আমার মিলন হবে
হলে জলোমেঘ।

আমি মেঘ, হব বৃষ্টি,
মেঘের ঘর্ষণে।
তোমার সৃষ্টি আমার মাঝে,
একেই সন্ধিক্ষণে।

মেঘ ডাকলে বৃষ্টি আসে,
হইযে শান্তিময়।
শীতল হাওয়ায় প্রান জুড়িয়ে,
কাটে ক্লান্তিময়।

মেঘ, বৃষ্টির মনের কথা,
চলবে মেঘলা দিনে।
বর্ষাকালে প্রমের মৌসুম,
কাটবে আলিঙ্গনে।

মেঘ,বৃষ্টির মধুর প্রেম,
মিলব নদীর জলে।
কানায় কানায় পূর্ন হবে,
মিললে অন্তরালে।

ঠিকানাঃ দিরাই, সুনামগঞ্জ, বাংলাদেশ

 

বৃষ্টি এলে
মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম

বৃষ্টি এলে তোমার কথা
পড়ে বেশি মনে,
কথা বলার ইচ্ছে জাগে
বন্ধু তোমার সনে।

বৃষ্টি এলে তুমি ছাড়া
আর কিছুনা বুঝি,
বৃষ্টি এলে বন্ধু আমি
তোমায় শুধু খুঁজি।

বন্ধু তুমি বৃষ্টির দিনে
আমার বৃষ্টিরাণী,
বৃষ্টি এলে দেখি সদাই
তোমার ছবিখানি।

বৃষ্টি এলে খুঁজি তোমায়
আমার বুকের মাঝে,
মনে চাইলে এসো বন্ধু
বৃষ্টি রাণীর সাজে।

ঠিকানাঃ মধ্যনগর, সুনামগঞ্জ।

 

 

মেঘ মালা
মাসউদুর রহমান সা’দী

জমকালো ঐ আকাশ জুড়ে
মেঘ মালাদের বাস,
ঝম-ঝমিয়ে পড়বে বলে
করছে যে হাঁসফাঁস।

তর সয়ে না আন্তরে আর
এদিক ওদিক ছুটে,
আনন্দেতে খায়েশ মিটে
পড়বে যে খুব লুটে।

মুশল ধরায় আকাশ ভেঙে
পড়ে যখন চালে,
ধুক-পুকিয়ে কেঁপে উঠে
হৃদয় ঐ না হালে।

হেসে উঠে পুঁচকে সানা
খুবই উচ্চৈঃস্বরে,
ভিজবে বলে আত্মাকে তো
রাখে না আর ধরে।

ঠিকানাঃ ভাটারা, ঢাকা।

 

বৃষ্টিময়
আবদুল্লাহ আহসান

সারাদিন টুপটাপ
বৃষ্টির দিনে,
আকাশে গুঞ্জন
টপ টপ টিনে।

খাল বিলে থই থই
রাস্তাটা ফাঁকা,
মেঘাকাশে সূর্য
থাকে গা ঢাকা।

পিঁপড়ের ঘর গৃহে
বন্যার ঢল,
পাখির বাসায় নামে
ঝর্ণার জল।

আরো পড়ুনঃ  গোধূলি সন্ধ্যা কলমে রোকসানা ইসলাম

সারাদিন ঝমঝম
বৃষ্টির দিনে,
নেই কোথা স্বস্তি
নেই ঘর বিনে।

 

 

বৃষ্টি দেখতে ভালো
আবু কাউছার সরকার

টিনের চালে বৃষ্টির নাচন
দেখতে লাগে ভালো,
ঝড়ের গতি আনলে সাথে
মনটা সবার কালো।

তাল মিলিয়ে পড়লে বৃষ্টি
খইয়ের মত ফুটে,
হালকা বায়ু থাকলে সাথে
অধিক বেগে ছুটে।

চাল গড়িয়ে জলের ধারা
নরম করে মাটি,
চলতে থাকে নিজের পথে
যেথা আপন ঘাঁটি।

বৃষ্টির শেষে গাছের পাতা
দোলে বায়ুর সাথে,
বিন্দুর রূপে জলের কনা
ঝরে দিবস রাতে।

 

বৃষ্টির মিষ্টি সোহাগ
রতন নস্কর

কাজল কালো বাদল মেঘে
আকাশ গেছে ঢেকে,
এক লহমায় সৌদামিনী
আলোক দিলো এঁকে।

ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি এলো
আঁধার হলো বেলা,
সোঁদা মাটির সুবাস মেখে
বাতাস করে খেলা।

দাদুরি সব জলসা বসায়
পুলক জাগে প্রাণে,
মন হয়ে যায় উদাস নদী
বৃষ্টি মুখর গানে।

হাসছে বকুল মাখছে বারি
সন্ধ্যা নামে ধীরে,
শীতল হাওয়ায় হৃদয় নাচে
আকাশ ঝরা নীরে।

গন্ধ ছড়ায় কামিনী ফুল
সাঁঝ প্রদীপের আলো,
বৃষ্টি তোমার মিষ্টি ছোঁয়ায়
সোহাগ লাগে ভালো।

 

 

টাপুরটুপুর বৃষ্টি
বিপুল কুমার ঘোষ

টাপুরটুপুর বৃষ্টি এলো
চেপে মেঘের ভেলা ,
গুরু গুরু গর্জনে মেঘ
চমক লাগায় মেলা ।

ঝরছে প্রবল বারিধারা
যেন বায়ুর বেগে,
উঠবে নতুন প্রাণের সাড়া
ধরার বুকে জেগে ।

কাঁপন লাগে বনে বনে
দুলছে যত শাখী,
ফুলের গন্ধে অলি আসে
কুলায় ফেরে পাখি ।

ফুটছে টগর জুঁই চামেলি
কদম চাঁপা কেয়া,
জলাশয়ে ভেকের ডাকে
নেমে আসে দেয়া ।

বৃষ্টি দেখে মনের সুখে
মাঠে চলে চাষী,
সোনার ফসল তুলবে ঘরে
ফুটবে মুখে হাসি ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *