ফাস্ট হবার প্রতিযোগীতা
মোঃ নাঈম মিয়া
হরেক রকম ডাকের মেলা বসে বিশ্বালয়ে
কার ডাক কে শুনতে পাবে বেলা অবসর লয়ে?
তাই এবার জাত প্রজাতির সবাই জড়ো হলো
ফাস্ট হওয়ার প্রতিযোগিতায় সবাই মেতে রইলো।
কাকে ডাকে কা কা করে বড্ড দারুন স্বাধে
ইচ্ছে কী আর সাড়বে নেকো মুখে ঘুমটো বেঁধে?
মুষলধারে বৃষ্টি হবে শুনবে রেওয়াজ সবে
তাহার পালা ভঙ্গ হলো সবাই ভেজে যাবে।
ভিজলে কী সে প্রতিযোগিতা হবে ষোলো আনা
সময়কে তো কাল হটিয়ে যায় না কভু কেনা।
মোরগ ডাকে কু- কু -রুক্কুর ডাকে আর হাঁস
জিতবে বলে পড়লো সেথায় সাত কবুতর লাশ ।
শেয়াল ডাকে হুক্কাহুয়া বিড়ালে ম্যাও ম্যাও
গরু ডাকে হাম্বা হাম্বা কুকুরের ঘেউ ঘেউ।
কোকিল ডাকে মধুর কন্ঠে সে বাসন্ত রানী
যাহার কন্ঠে পেছন হাটে কত মানব প্রাণী।
সাতটি ব্যাঙের পার্টি হলো ডাকতেছে ঘ্যাঁং ঘ্যাঁং
ঘোড়া কী রে ডাকতে জানে?তাই মেলে দেয় ঠ্যাঁং।
দোয়েল পাখি ডাকবে এবার সবাই হলো চুপ
কন্ঠে তাহার পড়ে গেল সাতটি খড়ের স্তুুপ।
বাঘে ডাকে হালুম হালুম সবাই ভয়ে সাড়া
সিংহ রাজা ডাক দিয়ে তাই করলো তাকে তাড়া।
অমন বেলায় প্যাঁচার ডাক লাগছিলো তো বেশ
ঝগড়া জুড়লো কন্ঠে তাহার কে করিবে শেষ?
তাইতো পন্ডিত শিয়াল এবার আরেকটি ডাক দেয়
আপন বুদ্ধির ভেড়াজালে যদি জিতে নেয় !!
বুঝলো তাহার সব চালাকি ও বনের সব গাছে
প্রকর গর্জনে তারা মেতে রইলো নাচে।
তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হাওয়া এলো হেথায়
হো- হো করা রেওয়াজ যেন সবাই শুনতে পায়।
হাওয়ার শব্দ ভালোই ছিল নয়কো খারাপ তেমন
সবার মাঝে শীতে শীতে উঠে গেল কাপন।
ঝরণা জলে বইতে থাকে শুনে যেন সবে
একে একে তিনটি ডাক আসলো একই রূপে ।
গাছের হাওয়ার ঝরণার ডাক কন্ঠ হুবহু একই
কাহারও কান হইতে তাহা নয়কো দিল ফাঁকি।
সিংহ রাজায় বললো এবার অন্য কারো ডাক
বিচ্ছিরি সব কণ্ঠ এবার তোরা সবাই রাখ্!
মগ ডালেতে বকের বাসা ডাকতে করলো শুরু
গলা যে তোর নয়কো ভালা ওরে নাটের গুরু।
অমন গালি দিয়ে চড়ুই ডাকে কিচির মিচির
মিষ্টি অতি কন্ঠ তাহার কান হলো সব ধীর।
বাবুই পাখি ডাকলো আবার কন্ঠে দুটো মিল
বিচ্ছিরি এক কন্ঠ হেকে আসলো সেথায় চিল।
টুনটুনি আর ময়না বড়ই মজার পাখি ভাই
তাহাদেরও কন্ঠে যেন কান খুলিয়া যায় ।
ডাহুক শুধু নামের পাখি ডাক নহে তার ভালো
শুনবে যদি মধুর কন্ঠ কাকাতুয়ার কাছে চলো।
অমন বেলায় ভালুক এলো গর্জন করবে সে
কাকাতুয়া উঠলো ডেকে তাহার পিঠে বসে।
ভালুক তখন রেগে মেগে দিল বড্ড হাক
কাহারো নয় শুধু শুধুই কাকাতুয়ার প্রতি রাগ।
যাক গে বাবা রাগ যে তাহার পড়লো মাটিতে
তাইতো মাটি তলিয়ে গেলো কন্ঠ ধরিতে।
সবার কন্ঠ শুনতে শুনতে যাচ্ছে বেলা কেটে
কেউ কী ওদিক লক্ষ্য করে দেখেছে ও মোটে?
তাইতো হাতি কইতে কথা মুখের জল দেয় ফেলে
পড়ে তখন জলে ও তাই দিল কণ্ঠ তুলে।
এ যে দেখি না জানা এক কন্ঠ আসলো সেথায়
যার কথাটি কখনো না আসলো কারো মাথায়।
জিতবে বলে আপন কন্ঠে উঠল ডেকে বাজ
তাহার কন্ঠে রাগ করে তাই ডাকে মেঘরাজ।
মেঘরাজেও ডাকতে থাকে সবার করে ভয়
ভয় দেখিয়ে কেউ কখনো করলো কিবা জয় !
রেগে সবাই দেখে তখন প্রতিযোগিতার লাস্ট
সকল কণ্ঠ গুনে এবার দেখবে কে হয় ফাস্ট।
অমন বেলায় আসলো ভেড়া কণ্ঠ
ছাড়বে সে
তাইতো তাহার শুনতে কন্ঠ সবাই সেথায় বসে।
মাছরাঙা ও বল পাহিয়া আসলো কণ্ঠ দিতে
কন্ঠ না দিলেও তবে,পানকৌরি তার সাথে।
বাদুর তখন উড়ে উড়ে আসলো সেই সালিশে
ঝিঃ ঝিঃ পোকা লুকিয়ে সেথায় ঝোপ লাগানো বাঁশে।
হাজার হাজার কন্ঠ এলো একের পরে এক
কাহার কন্ঠ সেরা হলো সবাই তোরা দেখ।
নিজেই নিজের কন্ঠে সেরা ভাবল সেথায় সবাই
তাদের সবার কন্ঠ শুনে পুরস্কার দিতে কেউ নাই।
রচনাকাল:-১৩ ডিসেম্বর ২০২০ খ্রিস্টাব্দ
চিড়াকান্দি বা/এ,হবিগঞ্জ
কবি পরিচিতিঃ- নীল মিয়া (নাঈম)। তিনি ছোট থেকেই কবিতা লেখা লেখি করে আসছেন। তাঁর পিতা মোঃ আক্তার মিয়া এবং মাতা মোছাঃ জমিলা খাতুন। ফাস্ট হবার প্রতিযোগীতা শিরোমানে এই কবিতাটি দৈনিক চিরকুটে সাহিত্য অনলাইন প্লাটফর্মে প্রকাশিত।
আরো পড়ুন এবং লেখুনঃ- দৈনিক চিরকুটে সাহিত্য
নিয়মিত পড়ুন এবং নিয়মিত লেখুন