মা বাবাকে নিয়ে কবিতা
সাব্বির আহমেদ
আজো জানো কী হে সন্তান মা বাবা কী ধন
জানলে করতে না অবহেলা করিতে যতন,
যে মা বাবা চোখের আড়াল হতে দিতো না তোমায়
তুমি অসুস্থ হলে প্রতিটি মুহুর্ত কাটাতো কান্নায়।
মা ঘুমায় প্রস্রাবে তোমায় রাখে আঁচলে পেছিয়ে শুকনায়
তুমি না ঘুমানোর আগে দুঃখিনী মা কখনো নাহি ঘুমায়,
হাট থেকে হেটে আসে বীর বাবা দশ টাকার জন্য
ভাবে এই টাকায় আনতে পারেনি তোমার জন্য কোনো পণ্য।
মা বাবার সকল কষ্ট পরিশ্রম সন্তান তোমার তরে
তোমাকে কিছু দিতে পারলে মা বাবার মন যায় ভরে,
যে মা বাবা তাকিয়ে থাকে তোমার হাসির সুখে
পেটভরে না খেয়ে সে খাবার তুলে দেয় তোমার মুখে।
মা বাবা এতো ভালোবাসার পর এতো যতনের পর
সন্তান কেনো এখনো মা বাবাকে ভাবে পর,
কোথায় থেকে আজ বৃদ্ধাশ্রমের সৃষ্টি হলো
কোন বা জ্ঞানী মানবতার সন্তান সবাই বলো।
মাগো তোমারই অপেক্ষায়
মাগো, তোমার ছেলে
হয়নি আজও বড়
একলা ঘরে ভয়ে মরে
হয় যে জড়োসড়ো
আজও রাস্তা ভুলে পথ হারিয়ে
ভুল পথে সে ঘুরে
আনমনা হয়ে যে সে
হাজার ভুল করে
একলা ঘরে ঢুকে যখন
থমকে উঠে প্রায়
মা বলে সে ডেকে উঠে
মা যে ঘরে নাই।
একটু ব্যাথা আজও কেমন
মাগো বলে ডাকে
জ্বরের ঘরে কাতর হয়ে
আবল তাবল বকে
কেমন করে আছো মাগো
চোখটি তবে বুঝে
তোমার ছেলে অবুঝ হয়ে
তোমায় যেগো খুঁজে
জানে সে যে, মায়ের মুখটি
পাবে না কভু ফিরে
তবুও মুখটি খুঁজে বেড়ায়
হাজার মুখের ভিড়ে।
রাতের বেলায় চাঁদরে আলোয়
মুখ লুকিয়ে কাঁদে
হাজার অভিযোগ লিখে দেয়
ঐ সে বোবা চাঁদে
বাবা
মার্জিয়া আক্তার রজনী
বাবা তুমি শ্রেষ্ট ছায়া,
আমায় মাখো নিঃস্বার্থ মায়া।
হবে না শুধ তোমার ঋন,
মুখ খানি করো না মলিন।
প্রথম হেটেছি তোমার হাতে,
কথা শিখেছি তোমার ভাষাতে।
চোখ জোড়ায় তোমার হাসি,
বলা হয়নি বাবা ভালোবাসি।
কত খালি পায়ে হেঁটেছো,
তবুও বলো বেশ আছো।
তবে কি তুমি মিথ্যা বলো?
নাকি দুঃখকে অস্বীকার করো।
বড় হবার স্বপ্ন আমার,
সুখ হবে সঙ্গী তোমার।
হাসবে খুশির হাসি।
বলবে এবার ভালো আছি।
মা
মোঃ রাশেদ ইসলাম
মা যে আমার পথ ও চলার
একটি মাত্র আশা,
মায়ের মতো দেয় না কেহই
দ্বিধাহীন ভালোবাসা।
মাকে আমি ভালোবাসি
মন-প্রাণ সব দিয়ে,
মমতাময়ী মা আগলে রাখে
ভালোবাসায় জড়িয়ে।
ছোট্ট ছিলাম যখন আমি
রাত জেগেছেন মা জননী,
দশটি মাস গর্ভে ধারণ
কে পারে আর মায়ের মতন।
ভালোবাসার আরেকটি নাম
আছে জগৎ জোড়া,
মা যে আমার মমতাময়ী
মা-ই সর্বসেরা।
বাবা ছেলের ভালোবাসা
মোঃ আমিনুর রহমান (সারাজ)
বাবা তোমাকে ভালবাসি
প্রাণের চেয়েও বেশি
তোমাকে দেখে আমি যে হই
অনেক বেশি খুশি।
একবার যদি না দেখি তোমায়
ছটফট করে আমার মন
ডাকবে কখন খুকা বলে
ভাবি সারাক্ষণ।
তোমার হাসির মতো হাসি
এ পৃথিবীতে নাই
মুখটা তোমার ভারি হলে
দুঃখ, কষ্টে ভেসে যাই।
নাইবা হলে বড় লোক
নাইবা থাকুক অট্টালিকা
তুমি আমার প্রেরণা বাবা
স্বপ্নরাজার চিলাকোঠা।
মাগো কেমন আছ
মিজান বিএসসি
মাগো তুমি কেমন আছ
ছোট্ট মাটির ঘরে,
খেতে গেলে শুতে গেলে
তোমায় মনে পড়ে।
যে চেয়ারে বসতে খেতে
সে চেয়ারে বসে,
তোমার কথা ভেবে ভেবে
নয়ন জলে ভাসে!
শুতে গেলে তোমার কথা
ভাবি প্রতি রাতে,
কেমন করে শুয়ে আছো
মাটির বিছানাতে!
মাগো তুমি চলে গেলে
মোদের এতিম করে,
কবর পানে চেয়ে থাকি
আসবে কখন ঘরে ?
দয়াল আল্লাহ্ রহম করো
আমার মায়ের তরে,
বেহেশতের সুখ শান্তি দিও
আঁধার কবর ঘরে ।
বাবা
হাবিবুর রহমান
বাবা তুমি খেলার সাথী
সকাল দুপুর সাঁঝে,
তোমার আঁকা প্রজাপতি
স্মৃতি হয়ে ভাসে।
বাবা তুমি বটের ছাঁয়ায়
আমার সকাল বেলা,
উঠোন জুড়ে তুমি আমার
ভালোবাসার খেলা।
কাঁধে তুলে নিতে আমায়
সন্ধ্যা নদীর বাঁকে,
আকাশ জলে চাঁদের খেলা
হৃদয়ে আছে গেঁথে।
বাবা তুমি শ্রেষ্ঠ মানুষ
সব শিশুরই মনে,
তোমার মুখে মধুর কথা
সাহস জোগায় বুকে।
কত স্মৃতি কত কথা
বাবা তোমার সাথে,
নীল আকাশের তারা হয়ে
আছো হৃদয় জুড়ে।
আবার যদি আসো ফিরে
তোমার হাতটি ধরে,
শিউলি ফোটা সকাল বেলা
যাবো বহুদূরে।
মা-বাবার রাজত্ব
আনাচ বিন হোছাইন
মায়ের নিষিদ্ধতায়! নিস্তব্ধ থাকো হে মানব
বাবার ঘামে সুগন্ধি উৎপাদন হয়।
মায়ের মমতা,হারানোর নেই ক্ষমতা
দিয়ে যায় বিলীন! হবে বলিয়ান।
নীরবতা শ্মশান!
মায়ের দোয়ায়! অগ্নি থেকে প্রকৃতি উৎপাদন হয়
বাবার চাহনিতে প্রকৃতিতে আষাঢ় নামে দৃঢ় রুপে।
তাদের দিকে তাকাও!
তাদের মাপতে চেষ্টা করো, তুমি ব্যার্থ হবা।
নিদর্শনা বুঝো! তুমি হারবা নাহ৷
বাবা! তোমাকে বুঝতে গিয়ে আমি হারায় যাচ্ছি।
মা! ও-মা! আমি পৃথিবীর প্রেমে পড়ার আগে তোমার প্রেমে পড়েছি।
মা-বাবা! তোমাদের জড়িয়ে কাঁদতে ইচ্ছা হচ্ছে
তোমরা তো আমাকে কাঁদতে দাও নাই কোনোদিন।
তোমরা আমার মাথার মুকুট, তোমরায় আমার ভবিষ্যৎ
তাতেই আমার মুক্তি, তাতেই আলোর পথ৷
বাবা তুমি রাজা! মা তুমিই রাণী
তোমার অবস্থান বদলাতে পারার ক্ষমতা নাই করো।
তোমাদের দেখে আমি পাই সস্থি
তোমরায় রাজা রাণী, তোমাদের জানায় ভক্তি।
তোমাদের দেখাবো ভবিষ্যৎ
তোমাদের বেড়ে উঠুক বারাকাল্লা ফি হায়াতি!
আসবে সুদিন!
আসবে বেলা! বিজয় আসবে ইনশাআল্লাহ।
পরিবার
আশীফুজ্জামান
পরিবারই হলো সর্ব প্রধান,
যেখানে সবার সনে একসাথে
হয় সবার অবস্থান।
সুখে, দুঃখে, কষ্টে থাকি
সবাই মিলে মিশে।
কেউ যদি বিপদে পড়ে
দাড়াই তাহার পাশে।
মা হলেন পরিবারের রানী।
তবু কষ্ট বেশি সয়।
মায়ের মাধ্যমেই তো
একটি পরিবার নদীর মত বয়।
মা-ই হল একটি পরিবারের
সুতার সেই বাঁধ।
এটা সেই বাধের-ই
বন্ধ করেন খাদ।
ভাই -বোনেদের খুনসুটি আর
দুঃখ সুখের মাঝে।
একটি পরিবার সোনালী হয়ে,
সোনার মত সাজে।
পরিবারে কারো দুঃখ কষ্টে
পরান দিলে ঢেলে,
শত দুঃখ, কষ্টের মাঝে
সুখ ঠিকই মিলে।
মা বাবাকে নিয়ে কবিতা
সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে পৃথিবীতে
বেড়ে ওঠে মা-বাবার হাতে।
প্রহরীর মত তারা সদা সজাগ থাকেন
ঝড়-ঝঞ্ঝা হতে বুকে আগলে রাখেন।
কষ্ট পেলে কান্না পেলে
ঘুম পাড়িয়ে দেন আদর দিয়ে কোলে।
চোখে চোখে বড় করেন সন্তান
মায়ের আঁচলের ছায়াতলে।
দুষ্টুমিতে চোখ রাঙালে মা
বাবা বকে দেন মাকে।
ঘুম আসেনা চোখের পাতায় অসুখে বিসুখে।
সেই বাবাই কঠিন শাসক কৈশোর যৌবনে।
ত্রুটি বিচ্যুতি না ঘটে যেন রাখেন শাসনে।
মনে মনে ভাবে সন্তান
এমন নিষ্ঠুর বাবা নাই এ জগতে।
বাবা হলেন সু শাসক সংসার চালনাতে।
বাবা-মা চাননা সন্তান নষ্ট হতে দিতে।
সব বাবাই চান তার সাধ্যমতে
সন্তান যেন থাকে তার দুধেভাতে।
এই কথাটা বোঝে সবাই
ঘাতপ্রতিঘাতে বড় হতে হতে।
তবুও নির্মম সত্য
কেউ কেউ ভুলে যায় সেই মা-বাবাকে।
আপন সুখে মত্ত থেকে
বৃদ্ধাশ্রমে আসে রেখে বৃদ্ধ মা-বাবাকে।
এই মিনতি জানাই সকলকে
একা করে দিও না কেউ জন্মদাতা মা-বাবাকে।
আমাদের প্লাটফর্মে ইতিমধ্যেই মা বাবাকে নিয়ে কবিতা অনেক গুলো প্রকাশিত হয়েছে। যেগুলো পড়লে আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনার মতো সাহিত্য মনা মানুষের ছোয়ায় আগামী দিনের বাংলা সাহিত্যের পথচলা আরো বেশি সহ হোক। আসুন বই পড়ি, আলোকিত সমাজ গড়ি। কবিত গুলো ভালো লাগলে কমেন্ট করতে ভুলবেন না।